ওরা ত্রি স্টার : ডিএসসিসি’র ঘুষ- দুর্নীতির বরপুত্র, সাবেক মেয়র ওদের সমীহ করতেন!

ডেক্স রিপোর্ট : তিন খলিফা’র সিন্ডিকেট ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) চালাতেন। এদের মধ্যে অপসারিত প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার দেখভাল করতেন দোকান বরাদ্দ, ভাণ্ডার বিভাগের কেনাকাটা ও রাজস্ব বিভাগের নানা বিষয়। অপসারিত অতিরিক্ত প্রকৌশলী মো.আসাদুজ্জামান এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী  বোরহান উদ্দিন  টেন্ডার সংক্রান্ত সব বিষয় দেখাশোনা করতেন। এ তিন জনকে বলা হয় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দুর্নীতির বরপুত্র। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ তিন জনের কথার বাইরে ডিএসসিসি’র সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন এক চুলও নড়তেন না। তাদের কথার বাইরে মেয়রের কাছে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তার  কোন মূল্য ছিল না। ডিএসসিসি’র সাবেক এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা  আলাপচারিতায় গণমাধ্যমকে জানান,  মেয়র সাঈদ  খোকনের কথার বাইরে  গেলে আমাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতেন। বসতেও বলতেন না। দৈনিক মানবজমিনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ সব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্র  থেকে পাওয়া তথ্যে জানা  গেছে, ডিএসসি’র অপসারিত অতিরিক্ত  প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান সাবেক মেয়র সাঈদ  খোকনের নাম বলে ঠিকাদারদের কাছ থেকে কার্যাদেশ  দেয়ার সময়েরই ২০% টাকা নিয়ে নিতেন। ২০% টাকা দিয়ে ঠিকাদাররা ধুকতে থাকতেন। ছয় মাস পার হয়ে যাওয়ার পর অনেক ঠিকাদার কাজ  শেষ করতে পারতেন না। অনেকে কাজ  শেষ করতেন। বিল দাখিল করলে তখন  মেয়র একটি কমিটি গঠন করে দিতেন। উদ্দেশ্য পার্সেন্টেজ আদায় করা। তখন ঠিকাদারদের কাজের মান অনুযায়ী অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। ডিএসসি’র এক ঠিকাদার হাসতে হাসতে জানান, আসাদ সাহেবের হিসাবি মিটিয়েও আমরা ২০% লাভ করতাম। তাহলে  বোঝেন দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাজের মান কেমন হত? তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, কাজের কার্যাদেশ দেয়ার সময় ২০% টাকা নগদ দিয়ে  দেয়া লাগতো। এরপর আরও ২০% খরচ  যেতো। সব মিলিয়ে ৪০%। আমার লাভ ২০%। তাই ৬০% চলে যাওয়ার পর ৪০% এর কাজ হতো। ডিএসসিসি’র  প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা  গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র ব্যারিষ্টার ফজলে নূর তাপসের দায়িত্ব বুঝে নেয়ার আগেই সাবেক  মেয়র সাঈদ  খোকনের দুই খলিফা দুর্নীতির মহোৎসবে  মেতে উঠেন। গত ১৯   ফেব্রুয়ারি পদোন্নতি সংক্রান্ত বাছাই কমিটি’র সভা করেন। পদোন্নতি ও পদায়নের জন্য দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন বিভাগ  থেকে অর্থ  তোলার মচ্ছব শুরু হয়। এ কাজে সামনে  থেকে  নেতৃত্ব  দেন অতিরিক্ত  প্রধান   প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী  বোরহান উদ্দিন। এখন অনেকেই এসব খলিফাদের অপকর্মের কথা বলছেন।  বেরিয়ে আসছে থলের  বেড়াল।