একুশে বার্তা রিপোর্ট : বেবিচক চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেয়ার পর একটার পর একটা ভাল কাজের দিকে নজরধারি করছেন। থার্ড টার্মিনালের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন, বন্যার্তদের সাহায্যার্থে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে নিশ্ছ্রিদ্র নিরাপত্তাসহ যাত্রী সেবার মান বাড়ানো জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন। দেশের সব বিমানবন্দর একটার পর একটা পরিদর্শনে যাচ্ছেন, তিনি ইতিমধ্যেই কক্সবাজার ও সিলেট বিমানবন্দর ঘুরে এসেছেন। এবার যাচ্ছেন সৈয়দপুর, রাজশাহী বিমানবন্দর পরিদর্শনে।
কিন্ত মেম্বাররা তাকে মিসগাইড করছেন বলে শোনা যায়। এরমধ্যে একজন মেম্বারকে নাকি বদলি করা হয়েছে। দাবি ওঠেছে আরো ৩ মেম্বার বদলির জন্য। এ ব্যাপারে কর্মচারিরা একটি ব্যানারও টাংগিয়ে দিয়েছে বেবিচক দপ্তরের ওয়ালে। কর্মচারিরা প্রধান উপদেষ্টাকেও স্মারকলিপি দিয়েছে। কিন্ত আওয়ামী দোসর এ সব মেম্বারদের এখনও বদলি করা হচ্ছে না। এরমধ্যে একজন আওয়ামী দোসরকে এই অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেই পদোন্নতি দিয়ে যুগ্মসচিব করা হয়েছে। এই মেম্বার বেবিচকে অর্থের দায়িত্বে আছেন।তিনি মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিবের ব্যাসমেট-যিনি সিভিল এভিয়েশনের দায়িত্বে আছেন।
শাহজালাল বিমানবন্দরে এখনও আওয়ামী দোসররা বসে আছেন। তারা পতিত সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের পালাতে সহায়তা করছেন। গত ৬ আগষ্ট সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলককে ভিআইপি বরাদ্দ দেয়া হয়, তাকে পালাতে সহায়তা করা হয়, কিন্ত গোয়েন্দারা তাকে ধরে ফেলেন।
পলককে কে/কারা ভিআইপি বরাদ্দ দিল- এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি পর্যন্ত গঠিত হয়নি।
কক্সবাজার ও সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল (বেবিচক) কর্তৃপক্ষের কিছু কর্মকর্তার অবহেলা আর গাফিলতির কারণে কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে এ দুটি বিমানবন্দরে চলমান উন্নয়নকাজ। এর মধ্যে বিমানবন্দর টার্মিনাল বিল্ডিং, সমুদ্রগর্ভে রানওয়ে এক্সটেনশন ও সম্প্রসারিত এয়ারক্রাফট পার্কিং অ্যাপ্রোন রয়েছে।
১ সেপ্টেম্বর রোববার বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, এরই মধ্যে বিমানবন্দরগুলোর চলমান বিভিন্ন উন্নয়নকাজ সরেজমিন পরিদর্শন করেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া। এ সময় তিনি চলমান উন্নয়ন কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশনা দেন।
এ ব্যাপারে বেবিচক চেয়ারম্যান গণমাধ্যমে জানান, অর্থ সংকট, নকশাগত ভুল, অবহেলা, গাফিলতিসহ নানা অনিয়মের কারণে বিমানবন্দরগুলোর উন্নয়নকাজে কিছুটা ভাটা পড়ার বিষয়টি নজরে আসে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারে টার্মিনাল বিল্ডিং ৯৩ শতাংশ ও রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজ ৮৩ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি কাজও দ্রুত শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতিবাজদের রেখে উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হবে কিভাবে? কক্সবাজার ও সিলেট বিমানবন্দরে দুর্নীতিবাজরা বহাল। এদের দায়িত্বে রেখে উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হবে- কিভাবে এ প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের। কক্সবাজারের পিডি চলতি দায়িত্বের এক্সইএন ইউনুস ভুইয়া নিজে দুর্নীতির দায়ে বার বার তার ২ স্ত্রীসহ দুদকে তলবকৃত। সেই দুর্নীতিবাজ পিডি এখনও কক্সবাজারে বহাল, প্রকল্প ঘিরে দুর্নীতির মহড়া চলছে। দুর্নীতির ফসল ঢাকায় বহুতল বাড়ি রয়েছে তার।প্রশ্ন ওঠেছে, একজন পিয়নের ছেলে একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, এখনও যাকে বেবিচক এক্সইএন হিসেবে স্থায়ী করেনি, এতো সম্পদের মালিক হলো কিভাবে? দুদক বার বার তাকে তলব করলেও মামলা করছে না, বিগত সরকারের সময় দুদকে তদবির করে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে, এবার অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দুদক নড়েচড়ে বসবে তো, পিডি ইউনুস ভুইয়ার লাগাম টেনে ধরা হবে তো- এ প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের।
সিলেট বিমানবন্দরেও দুর্নীতিবাজদের আখড়া। উন্নয়নমুলক প্রকল্প মুখথুবড়ে পড়ে আছে। বেবিচক চেয়ারম্যান প্রকল্প শেষ করার তাগাদা দিলেও দুর্নীতিবাজদের চেয়ারে রেখে উন্নয়নমুলক প্রকল্প কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হবে বলে মনে করেন না সংশ্লিষ্টরা। ১৬ বছর ধরে ম্যানেজার/ পরিচালকগিরি করা আওয়ামী দোসর, সাবেকমন্ত্রী মুহিত,ড. মোমেনের ঘনিষ্ঠ যাকে আবার পদোন্নতি দিয়ে পরিচালক করা হয়েছে-সেই হাফিজ আহমেদকে চেয়ারে রেখে উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত শেষ হবে- এমন আশা দুরাশায় পরিণত হতে পারে।