চট্রগ্রাম বিমানবন্দরে বেবিচক কর্মচারী ওসমান শিকদার খুনের নেপথ্যে ৩০ লাখ রিয়াল : গ্রেপতার ৩ : তদন্ত কমিটি গঠিত

নিউজ ডেক্স : বৈদেশিক মুদ্রা চোরাচালান সিন্ডিকেট সদস্যদের ৩০ লাখ রিয়াল মেরে দেয়ার দ্বন্দ্বের জেরে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্ৃপক্ষ-বেবিচক অফিস সহায়ক কর্মচারী মো. ওসমান সিকদার খুন হয়েছেন। হুন্ডির ৩০ লাখ রিয়াল নিয়ে বিরোধের জের গড়ায় হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত। বাংলাদেশ পুলিশের অভ্যন্তরীণ একটি সংস্থার তদন্তে চাঞ্চ্যকর এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এ ঘটনায় গত ১৩ ডিসেম্বর রাতেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একজন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন চট্রগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন। তবে তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তারকৃতদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ওসমান সিকদারসহ বিমানবন্দরের সিভিল অ্যাভিয়েশনের বেশ কয়েকজন কর্মচারী বৈদেশিক মুদ্রা চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি ওসমানের সঙ্গে ফটিকছড়ির বাসিন্দা এক ব্যক্তির ৩০ লাখ রিয়াল নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। কথা ছিল ওসমান রিয়ালগুলো নিয়ে ইমিগ্রেশন পার হওয়া যাত্রীদের হাতে পৌঁছে দেবেন। কিন্তু ওসমান রিয়ালগুলো সেই যাত্রীদের দেননি। তিনি প্রচার করেন রিয়ালগুলো গোয়েন্দা পুলিশ ছিনিয়ে নিয়েছে।
পরবর্তীতে ওসমানের কাছ থেকে রিয়ালগুলো ফেরত পেতে চাপ দিতে থাকে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে পিটিয়ে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে প্রতিপক্ষ। এরই ধারবাহিকতায় গতকাল শাহ আমানত বিমানবন্দর সংলগ্ন লিংকরোড এলাকার একটি স্থানে নিয়ে তাকে পেটানো হয়। মারধরে অংশ নেয় চারজন। মারধরের একপর্যায়ে মারা যান ওসমান সিকদার। ওসমান সিকদারের গ্রামের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলায়। তিনি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল অ্যাভিয়েশনে অফিস সহয়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার পতেঙ্গা লিংকরোড এলাকা থেকে ওসমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বলেন, ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের পরিচালক সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন জানান, প্রাথমিক তদন্তে বৈদেশিক হুন্ডির টাকার দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয়েছেন ওসমান সিকদার। এরা মূলত একটি সিন্ডিকেট। সিকদারের সঙ্গে ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় প্রতিপক্ষরা তাকে হত্যা করে। ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।