বেবিচকে বসে আছেন খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া সেই পান্না

স্টাফ রিপোর্টার : বেগম খালেদা জিয়াকে তার ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে এক কাপড়ে বের করে দেয়া সেই ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান পান্না বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ- বেবিচকে বসে আছেন। তাকে এখনও ওএসডি করা হয়নি। তার সাথে নেতৃত্বদানকারি উপসচিব নাজমুস সাদাত সেলিমকে ওএসডি করা হলেও পান্না কোন খুটির জোরে এখনও বহাল তা অনেককে ভাবিয়ে তুলছে। খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে তার বাড়ি থেকে বের দেয়ার কৃতিত্ব নেয়া তৎকালীন সেই ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান পান্না বেবিচকে সিএটিসিতে ক্লাস নেয়ার সময় এ কথা বীরদর্পে প্রচার করে বাহবা নিয়েছেন। এখন বেবিচক কর্মচারিরা তাকে বেবিচক থেকে বের দিবে বলে জানা যায়।
পরিচালক ইসরাত জাহান পান্না প্রায় সময়ই বেবিচক চেয়ারম্যানের অফিসকক্ষে বসে থাকেন বলে জানা যায়। আগের চেয়ারম্যানের আমলেও তিনি চেয়ারম্যানের কক্ষে বসে থাকতেন। বেবিচক চেয়ারম্যানকে শলাপরামর্শ দিয়ে থাকেন। ঠিকাদারি কাজের দিকেও নজর পড়ছে এই পান্নার। তিনি বেবিচক চেয়ারম্যানের সাথে নাকি ঠিকাদারি কাজের এনালাইসেস করে থাকেন।
বেবিচকে পান্না ছাড়াও আরো ২ জন আওয়ামী দোসর এখনও বহাল। এরা হলেন মেম্বার এডমিন এবং মেম্বার অর্থ। এদের বিরুদ্ধে ব্যানার- স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর দেয়া হলে তাৎক্ষণিক বদলি করা হলেও এখনও ৩ আওয়ামী দোসর বেবিচকে জেকে বসে আছেন। জনপ্রশাসন সচিব কি এ ব্যাপারে দৃষ্টিপাত করবেন?
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী দোসর ইসরাত জাহান পান্না বেবিচকে পরিচালক সম্পত্তি শাখার দায়িত্ব পালন করছেন। বেবিচকের জায়গা-জমি নামকাওয়াস্তে লিজ দেয়ার কারিগর এই ইসরাত জাহান পান্না। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন বিমানবন্দরের দোকানপাট, হোটেল, লাউন্ঞ, বিঙাপনী সংস্থা আওয়ামী দোসরদের নামে নতুন করে বরাদ্দ ,নবায়ন করা হচ্ছে। আওয়ামী দোসর শমী কায়সারের ধানসিড়ি, জাতীয় পার্র্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের মেয়ের জামাই নায়ক মাহফুজের নকসিকাসা লাউন্ঞ , সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের ভাতিজার প্রতিষ্ঠানের নামে লাউন্ঞ নবায়ন, শাহজালালে আরো আওয়ামী দোসরদের প্রতিষ্ঠান নবায়ন করা হয়েছে, অন্যান্য এয়ারপোর্টেও নবায়ন প্রক্রিয়া চলছে। এর সাথে জড়িত ডিডি সাধন কুমার মোহন্তকে বলিরপাঠা বানানো হলেও পরিচালক পান্নার কিছুই হয়নি। তাকে জবাবদিহি করতে হচ্ছে না। এয়ারপোর্টের গোলচত্তর সংলগ্ন মনোলোভা রেস্টুরেন্ট গুড়িয়ে দেয়া হলেও পাশে হোটেল ওয়ান্ডার –-ইন এখনও দিব্যি ব্যবসা করছে, লিজের জমির পরেও পাশে আরো অধিক ১ বিঘা জমি দখল করে নিয়েছে ওয়ান্ডার-ইন হোটেল কর্তৃপক্ষ। এ সবে নেতৃত্ব দান করছেন ইসরাত জাহান পান্না। সম্পত্তি শাখার মিজানুর রহমান এবং আল আমিন পান্নার ডানহাত হিসেবে কাজ করছে। ফলে ডিডি সাধন কুমার মোহন্তকে বদলি করা হলেও মিজান-আলামিন এখনও সম্পত্তি শাখায় বহাল।
একজন তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নায়ক মাহফুজের সাথে ফিফিটি ফিফটি বিভিন্ন বিমানবন্দরে লাউন্ঞ ব্যবসা করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়। দোকান বরাদ্দ দেয়ার নামে থার্ড টামিনাল থেকে কেটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে- যা তদন্ত করলে বের হয়ে আসতে পারে।
পরিচালক এডমিনের ভার্সিটির বন্ধু এখন পরিচালক মানব সম্পদ : বেবিচকে পরিচালক এডমিনের ঢাকা ভার্সিটির বন্ধু পরিচালক মানব সম্পদ ইকরাম উল্লাহ। পরিচালক এডমিনের নেতৃত্বে প্রমোশনের পর প্রমোশন দিয়ে ইকরাম উল্লাহকে ডিডি থেকে রাতারাতি পরিচালক করে এখন তার পাশে পরিচালক মানব সম্পদের দায়িত্ব দিয়ে প্রঙাপন জারি করা হয়েছে। পরিচালক ইকরাম উল্লাহর পদোন্নতিতে মিষ্টি বিতরণ চলছে, একমাস যাবত মিষ্টি বিতরণ চলছে বলে কর্মচারিরা জানান।
এ ব্যাপারে পরিচালক ইকরাম উল্লাহ জানান, যারা আমাকে অভিনন্দন জানাতে আসছেন তারাই মিষ্টি নিয়ে আসছেন, আমাকে তেমন মিস্টি কিনতে হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, বেবিচকে মুরাদীর প্রমোশনে ১৯ মণ মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছিল।
১৪ প্রকৌশলীর দুর্নীতির তথ্য চেয়ে মন্ত্রনালয়ের চিঠি : বেবিচকে ১৪ প্রকৌশলীর দুর্নীতির তথ্য চেয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সিএ অধিশাখা-১ সৈয়দ মাহমুদ হাসান এক দাপ্তরিক চিঠি জারি করেছেন। যাদের দুর্নীতির তথ্য চাওয়া হয়েছে তারা হলেন : প্রকল্প প্রকৌশলী যাদের ১৯৯৬ সালের পদবী এবং ২০১০ সালের পদবী সাংঘর্ষিক , যাদেরকে ফিডার পদে ৭ বছরের জায়গায় একবছরের মধ্যে পদোন্নতি দিয়ে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী করা হয়েছে, এদেরকে প্রকল্প থেকে পদ পরিবর্তন করে রাজস্ব খাতে নিয়ে আসার জন্য ৫ মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালি করতে হয়েছে, এতে করে সরকারের লোকসান গুণতে হচ্ছে প্রায় ৫ কোটি টাকা । এখন তাদেরকে আবার প্রধান প্রকৌশলী করতে চায় বেবিচক কর্তৃপক্ষ- সেই ২ তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হলেন জাকারিয়া এবং শুভাশিষ বড়–য়া।
অন্যরা হলেন: ইএম বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী আছালত হোসেন খান, শাহিনুর আলম, আয়শা হক, সফিকুল আলম, হাসান মিয়া, মেহেদী আল মিজান, এনামুল কবীর। সিডির সহকারি প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, মো,. জহিরুল ইসলাম, মো. আব্দুল মালেক, শহিদুল আফরোজ, হাবিবুর রহমান।
এদের মধ্যে হাবিবুর রহমান প্রকৌশল বিভাগে নেই, তিনি চাকরি করছেন এফএসআর বিভাগে। ফিডার পদে তার ৩ বছর পূর্ন হয়নি বলে জানা যায়। ছাত্রদল করার ‘তকমা’ দিয়ে তাকে গত সরকারের আমলে প্রকৌশল বিভাগ থেকে তাকে আউট করা হয়। এখন তাকে আওয়ামী দোসরারই প্রকৌশল বিভাগে প্রধান প্রকৌশলী করার ফন্দি আটছেন, যদিও তার ফিডার পদ পূর্ন হয়নি। তার দুদক ক্লিয়ারেন্স-এর জন্য বেবিচক চেয়ারম্যান দুদকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
তার পক্ষে যাতে গণমাধ্যম কাজ করে এ জন্য ২ গণমাধ্যমকর্মীকে কয়েক কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ দিয়েছেন বলে শোনা যায়।