একুশে বার্তা রিপোর্ট : শাহজালাল বিমানবন্দরে পরিবহন সেক্টরে ভয়াবহ চাদাবাজি নিয়ে কাউন্টার মামলার হয়েছে। মামলায় শ্রমিকলীগ দাবিদাররা পলাতক, কিন্ত কাউন্টার দখলে তাদের। ২৫০ জনের থেকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাদা আদায় করা হয়েছে বলে নুরুল ইসলাম ওরফে নূরু মেম্বার ও আশরাফ জানান।
এ দিকে শ্রমিক দলের দাবিদার দেলোয়ারকে শ্রমিকলীগ বলে প্রচার করা হচ্ছে। এ নিয়ে বিমানবন্দর পরিবহন সেক্টরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। যে কোন সময় অনাকাংক্ষিত ঘটনা ঘটার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন একজন পত্রিকার রিপোর্টার, তিনি এই কাউন্টার ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত বলে জানা যায়। তার পত্রিকায় এ নিয়ে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজধানীর বিমানবন্দর থানার শ্রমিক লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন রাতারাতি শ্রমিক দল নেতা বনে গেছেন। রাজনৈতিক খোলস পাল্টে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গাড়ি ব্যবসা দখলে উঠেপড়ে লেগেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিমানবন্দরের রেন্ট-এ কার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের চাঁদা দাবি এবং হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই রেন্ট-এ কার মালিক-শ্রমিকদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলাও করেন তিনি।
অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন দেলু বিমানবন্দর থানা শ্রমিক লীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। ২০২৪ সালের কমিটিতে তিনি কার্যকরী সদস্য। রেন্ট-এ কার মালিক-শ্রমিকদের অভিযোগ, বর্তমানে রাজনৈতিক সুর পাল্টে শ্রমিক দলের নেতা পরিচয় দিয়ে তিনি বিমানবন্দরের যাত্রীবাহী গাড়ির ব্যবসা দখল করতে চাইছেন। এ জন্য রেন্ট-এ কার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি এবং হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। সম্প্রতি রেন্ট-এ কার মালিক-শ্রমিকদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলাও করেন তিনি। পরে আদালতের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী বিমানবন্দর থানায় ওই মামলা করা হয়েছে।
দেলোয়ার তাঁর কমিটির কার্যকরী সদস্য বলে নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দর থানা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম খায়ের।
এদিকে, বিমানবন্দরে চাঁদাবাজি ও লুটপাটের ঘটনায় দেলোয়ারকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা হয়েছে। বাদী বিমানবন্দর এ ‘ফাইভ পরিবহনের’ এমডি আশরাফ আলী, তিনি শ্রমিক লীগ করতেন বলে শ্রমিকরা জানান, তার সাথে ছিল হাফিজ, হাফিজকে বিমানবন্দর থেকে আউট করা হয়েছে। এরা শ্রমিকলীগ পরিচয়ে পরিবহন ব্যবসা করতেন এখন তিনি শ্রমিক দল দাবিদার।শ্রমিক দল করার নামে কাউন্টার দখলে রাখার পায়তারা করছেন বলে শ্রমিকরা জানান। তিনি উল্টো বিমানবন্দর শ্রমিক দলের দেলোয়ারকে শ্রমিকলীগ বলে প্রচার করছেন , তিনি দাবি করেন এখন দেলোয়ার শ্রমিক দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি ও লুটপাট করছেন। ২৫০ জনকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাদা আদায় করা হয়েছে জানান নূরু মেম্বার ও আশরাফ আলি।
দেলোয়ারের দায়েরকৃত মামলায় নূরু মেম্বার, আশরাফকে খালেদা জিয়ার বাড়িতে ২০১৩ সালে বালির ট্রাক দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত এবং দেলোয়ারের গায়ে ট্রাক ওঠিয়ে দিয়ে পংগু করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
এ দিকে আশরাফ আলির মামলায় জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন ২০১০ সালে বিমানবন্দর থানা শ্রমিক লীগের কমিটিতে দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। বর্তমান কমিটিতে তিনি কার্যকরী সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এর পর দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সুবিধাবাদী হিসেবে খোলস পাল্টেছেন তিনি। বর্তমানে সবার সামনে তিনি নিজেকে শ্রমিক দল নেতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন।
জানতে চাইলে চাঁদার দাবিতে বিমানবন্দর রেন্ট-এ কার পরিবহন কাউন্টার ভাঙচুরের ঘটনা অস্বীকার করেন দেলোয়ার। তিনি বলেন, আমি বিমানবন্দর শ্রমিক লীগের সঙ্গে কখনোই সম্পৃক্ত ছিলাম না। দেলোয়ার হোসেন নামে আরও অনেক লোক রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শ্রমিক লীগের লোকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন।
বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দখল ও চাঁদাবাজির ঘটনায় দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটির তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, বেবিচক থেকে কাউন্টার ইজারা নিয়ে শ্রমিকলীগ-শ্রমিকদল পরিবহন ব্যবসা করছে, এর সাথে জড়িত রয়েছে একজন পত্রিকার রিপোর্টার।