সিভিল এভিয়েশন : ডিডি প্রশাসনের তেলেসমাতি : নিরাপত্তা সুপার থেকে স্যানেটারি ইন্সপেক্টরকে ৫ বছর ধরে রেখেছে সদর দপ্তরে ! ওয়েলফেয়ার অফিসার সেলিমের ডবল ডিউটি! স্বর্ন পাচারের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত কথিত ভাগিনা হাকিম এখন সদর দপ্তরে , নিরাপত্তা সুপার নাজমুলকে হয়রানিমুলক বদলি , ডিডি প্রশাসনের ফাইল থেকে গোয়েন্দা রিপোর্ট গায়েব

বিশেষ সংবাদদাতা : ডিডি প্রশাসনের তেলেসমাতি বলে কথা। উচ্চ আদালতের আদেশে প্রায় দেড় হাজার কর্মচারিকে পদ, গ্রেড পরিবর্তন করে স্ব স্ব কর্মস্থলে পাঠানো হলেও নিরাপত্তা সুপার থেকে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে পদায়নকৃত নূরনবী ভুইয়া টিপুকে দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর যাবত সদর দপ্তরের গেটে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তাকে তার বর্তমান কর্মস্থল শাহজালাল বিমানবন্দরে পাঠানো হচ্ছে না। অথচ সেখানে আশিকুর রহমান নামে একজন ফায়ারের লোক দিয়ে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের প্রক্সি দেয়া হচ্ছে।
আবার সেলিম নামের এক কর্মকর্তাকে দিয়ে শাহজালালের মতো কেপিআই এলাকায় ডবল দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে। তিনি একাধারে স্যানিটারি বিভাগের ইনচার্জ এবং ওয়েলফেয়ার অফিসারের দায়িত্ব করছেন।
এ ব্যাপরে তিনি (সেলিম) জানান, কর্তৃৃপক্ষ আমাকে ডবল দায়িত্ব দিলে আমার করার কি আছে, আমি কর্তৃপক্ষের আদেশ পালন করছি।
নাজমুল নামের একজন নিরাপত্তা সুপারকে হয়রানিমুলক বদলি করে যশোহর বিমানবন্দরে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। যশোহর বিমানবন্দর থেকে একজন নিরাপত্তা সুপারকে ঢাকায় আনার জন্যই নাজমুলকে বদলি করা হয়েছে। কিন্ত এ ব্যাপারে পরিচালক নিরাপত্তার মতামত নেয়া হয়নি বা পরিচালক নিরাপত্তা বিভাগ থেকে বদলির জন্য তালিকা সদর দপ্তরে পাঠানো হয়নি বলে জানা গেছে। শুধু ডিডি প্রশাসনের একজন পছন্দের লোককে ঢাকায় আনার জন্য এ হয়রানিমুলক বদলির আয়োজন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।সিএএবির সদর দপ্তরে প্রশাসনের কিপয়েন্ট থেকে তার ব্যাপারে মতামত এখনও তার ফাইলে পুটআপ করা হয়নি বলে জানা গেছে। শাহজালালের নিরাপত্তা বিভাগ এমনকি সদর দপ্তরে নিরাপত্তা বিভাগের এভসেক সেল থেকেও মতামত দেয়া হয়নি।
স্বর্ন পাচারের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত ডিডি প্রশাসনের কথিত ভাগিনা হাকিমকে সাসপেন্ড /চাকরিচ্যুত্য না করে ডিডি পাশে সদর দপ্তরে বসানো হয়েছে।
আর এ সবই হচ্ছে ডিডি প্রশাসনের তেলেসমাতিতে বলে অনেকে মন্তব্য করেন।
এই ডিডি প্রশাসনের এ সব কার্যক্রমে ক্ষুব্ধ হয়ে সাবেক একজন সদস্য প্রশাসন আমলে তাকে (ডিডি প্রশাসন) অন্যত্র বদলির চিন্তাভাবনা করলেও পরে তা ম্যানেজ হয়ে যায়। ডিডি প্রশাসন নাকি বলে বেড়ান মন্ত্রণালয় থেকে পরিচালক./ সদস্য আসবেন আবার চলে যাবেন কিন্ত আমি তো ডিডির চেয়ারে থাকবো। এই চিন্তাচেতনাবোধ থেকে মন্ত্রনালয় থেকে যখন যে পরিচালক/ সদস্য সিএএবিতে প্রেষণে বদলি হয়ে আসেন তাকে ডিডি প্রশাসন ম্যানেজ করে ফেলেন।
ডিডি প্রশাসন চাকরির পদোন্নতির পর থেকে সদর দপ্তরের ওই চেয়ারে দীর্ঘদিন বসে থাকলেও তাকে কেন অন্যত্র বদলি করা হচ্ছে না- এ প্রশ্ন সিএএবিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই ডিডি প্রশাসন যখন এডি প্রশাসন-২ তখন তার বিরুদ্ধে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তার বিরুদ্ধে একটি গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্ট করে। কিন্ত তার ফাইল থেকে ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদন গায়েব হয়েছে বলে শোনা যায়। কারণ তিনি নিজেই তো প্রশাসনে বসে আছেন। অনেক সময় দুদকের তলবি চিঠিও ডিডি প্রশাসনের দপ্তরে ধরে রাখা হয়।
সিএএবির ইএম বিভাগের ৬ প্রকৌশলীর দুদকের তলবি চিঠিও ডিডি প্রশাসনের দপ্তর থেকে আলোরমুখ দেখেনি। সেলিম নামের একজন ইএম বিভাগের প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগের পর চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে তদন্তের নির্দেশ আসলেও যার বিরুদ্ধে জাল সনদের অভিযোগ ঠিক তাকে দিয়েই প্রশাসন থেকে একখানা দাপ্তরিক চিঠি দিয়ে যশোহর শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হয়। অভিযুক্ত প্রকৌশলী সেলিম আরেকটি সনদ এনে প্রশাসনে জমা দেন। এ যেন শিয়ালের কাছে মুরগি ভাগি দেয়ার অবস্থা।