৩ বিমানবন্দরে ৮১২ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা : বেবিচকের চেয়ারম্যান, ২ প্রধান প্রকৌশলীসহ আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, ২৪ এপ্রিল মামলার চার্জ দাখিলের নির্দেশ

একুশে বার্তা রিপোর্ট : তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলার ১৯ জন আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। আসামিদের মধ্যে বেবিচকের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান ও সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মালেকের নামও রয়েছে।

আসামিরা যেন কোনোভাবেই দেশত্যাগ করতে না পারেন, এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দেশের সব ইমিগ্রেশন ও ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রধানকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (মহানগর দায়রা জজ) মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন এ আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামিরা যেন দেশত্যাগ না করতে পারে সেজন্য মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) আদালতে আবেদন করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন। তার এই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির আদেশ দেন।

যাদের বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তারা হলেন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মুহিবুল হক, সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক, সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (বর্তমানে প্রধান প্রকৌশলী) মো. হাবিবুর রহমান, অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আলম, পরিচালক লুৎফুল্লাহ মাজেদ।

প্রসঙ্গত, তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ এসব মামলা দায়ের করা হয় বলে জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।

তিনি বলেন, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মুহিবুল হক, সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক, সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. হাবিবুর রহমান, অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আলম, পরিচালক লুৎফুল্লাহ মাজেদ, কমিউনিকেশন-নেভিগেশন অ্যান্ড সার্ভিল্যান্স-এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক আফরোজা নাসরিন সুলতানা এবং সাবেক প্রকল্প পরিচালক (পরিকল্পনা) একেএম মনজুর আহমেদ পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিগত ১৫ বছরে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরের উন্নয়নকাজের নামে হাজার হাজার কোটি লুটপাট ও আত্মসাৎ করেছেন।

৩ বিমানবন্দরে ৮১২ কোটি টাকার দুর্নীতি : দুদকের মামলায় শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টাসহ ১৯ জনের   প্রতিবেদন দাখিল  ২৪ এপ্রিল : দেশের ৩ বিমানবন্দরে ৮১২ কোটি টাকার দুর্নীতি দুদকের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে পৃথক চার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৪ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব পৃথক এ চার মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ দিন ধার্য করেন।

উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হক, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান , বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্মসচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মালেক ও বেবিচকের সাবেক সুপারিনটেনডেন্ট প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুর আনাম ও পরিচালক লুৎফুল্লাহ মাজেদ।

এর আগে, সোমবার (২৭ জানুয়ারি) তাদের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা করে দুদক।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যোগাযোগ, নেভিগেশন ও নজরদারি ব্যবস্থাপনা, রাডার স্থাপন প্রকল্পের আওতায় রাডার নির্মাণের সময় প্রায় দুইশ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এছাড়া, একই বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ (তৃতীয় টার্মিনাল) প্রকল্প থেকে ২৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্প থেকে ২১২ কোটি টাকা এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ ও রানওয়ে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে আত্মসাৎ করা হয় ১৫০ কোটি টাকা।