শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
প্রকল্পের টাকায় বিদেশ সফর অগ্রহণযোগ্য, খিচুড়ি রান্নায় ১০০ জনকে কেন ৫ জনকে পাঠান

ড. জাহিদ হোসেন : ছোট কিংবা বড়—যেকোনো প্রকল্পেই বিদেশ সফর কমন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জনের জন্য বিদেশ সফর হতেই পারে, তাতে আপত্তি দেখি না। কিন্তু প্রকল্প মানেই বিদেশ সফর থাকতে হবে, এমনটা মানতে আমার আপত্তি আছে। যদি মনে করেন এক্সপোজার ভিজিট করাবেন, ভালো কথা; এটা কর্মকর্তাদের ট্রেনিংয়ের অংশ করে নিন, যাতে প্রথম থেকেই তাঁদের অভিজ্ঞতার ঝুলি ভারী হয়। আর যদি প্রকল্পের বিদেশ সফর প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটা অবশ্যই ওই প্রকল্পের স্বার্থসংশ্লিষ্ট হতে হবে।

ইদানীং একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন প্রকল্পে ঘুরেফিরে কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাদের রাখা হয়। পরিকল্পনা কমিশন, আইএমইডি, ইআরডির মতো প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা এই তালিকায় থাকছেন। বিভিন্ন প্রকল্পে কয়েকটি কমন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের সম্পর্ক কী? তাঁরা বিদেশ সফর করে প্রকল্পে কী ধরনের অবদান রাখেন তা জানা দরকার।

বিদেশে কারা যাচ্ছেন, কেন যাচ্ছেন, তাতে দেশের কী উপকার হবে—এসব বিষয় কঠোরভাবে বিবেচনা করতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রয়োজন অনুযায়ী বিদেশ সফরের পক্ষে। তবে তা যেন নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে হয়। আর সেই লক্ষ্য কতটা পূরণ হয়, তার মূল্যায়ন থাকাটাও জরুরি। বিদেশে গেলে মানুষ নতুন কিছু দেখে ও শেখে; নিজেদের মানোন্নয়ন ঘটানোরও একটা সুযোগ পায়। তবে সেটা প্রকল্পের টাকায় হওয়ার ক্ষেত্রে আমার আপত্তি আছে। সরকার যাঁদের বিদেশে প্রশিক্ষণ দিয়ে আনতে চায় তাঁদের রাজস্ব বাজেট থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আনুক। প্রকল্পের টাকা থেকে অপ্রাসঙ্গিক লোকদের বিদেশ সফর কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিডডে মিল চালুর জন্য বিদেশ সফরের একটি বিষয় গণমাধ্যমে ‘খিচুড়ি রান্নার প্রশিক্ষণ’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হলো—খিচুরি রান্না নয়, ব্যবস্থাপনা দেখতে বিদেশ যাওয়া হবে। ভালো কথা, তার জন্য কয়েক শ ব্যক্তিকে কেন যেতে হবে? আপনি পাঁচজনকে পাঠান, তারা দেশে ফিরে বাকিদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করুক।

লেখক : সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিস

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।