শনিবার, ২৯ Jun ২০২৪, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : গ্রামীণ ব্যাংক ড. ইউনূসের নয়, সরকার এটা গঠন করেছে, কথায় আছে উপকারীকে বাঘে খায়

ডেক্স রিপোর্ট : গণভবনে ২৫ জুন মঙ্গলবার সকালে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত নিবন্ধের সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা সম্পর্কে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা বিচারাধীন বিষয়। আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে তাদেরকে প্রশ্ন করতে পারেন, তাদের দেশে ট্যাক্স ফাঁকি দিলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। শ্রমিকদের নিয়ে এতো কথা বলে। সেই শ্রমিকদের অর্থ যদি মেরে খায়, তার দোষ কি আমাদের। আমরা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে নই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক এরশাদের আমলে হয়েছে। এটা ড. ইউনূসের নয়, সরকার এটা গঠন করেছে। কিন্তু এমনভাবে প্রচার পেলো যেনো গ্রামীণ ব্যাংক তার নিজের গড়া। ড. ইউনূস ছিলেন নিয়োগপ্রাপ্ত এমডি। বয়স ৬০ হওয়ার পর আইনত তিনি আর ওই পদে থাকতে পারেন না। তিনি আইন ভঙ্গ করে ওই পদে রয়ে গেলেন। তাকে উপদেষ্টা হিসেবে থাকার অনুরোধ করা হলো, তিনি তা মানলেন না। তখন তাকে সরানো হলো। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা সরকার করেনি। শ্রমিকরা করেছে। গ্রামীণ ব্যাংক যখন টাকার অভাবে ধুঁকছে, তখন তিন কিস্তিতে আমরা সরকার থেকে গ্রামীণকে ৪০০ কোটি টাকা দিয়েছি। ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ফোনের ব্যবসা আমিই দিয়েছি। আজ পর্যন্ত গ্রামীণ ফোনের একটি টাকাও গ্রামীণ ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে কি? বিদেশ থেকে অনেক টাকা অনুদান এসেছে, সেগুলো কোথায়?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূস ট্যাক্স ফাঁকি দিয়েছেন। শ্রমিকরা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সরকার করেনি। তাতে আমার কী দোষ? আজ তার যে উত্থান, তাতে আমাদের অবদান রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, হিলারি ক্লিনটনকে এনে যশোরের যে ঋণগ্রহীতাদের দেখানো হয়েছিলো, সেই পরিবারগুলো এখন কোথায়? ঋণের ভার সইতে না পেরে জমিজমা সব বেচে দিয়ে পালিয়েছে। সুদের চাপে অনেকে আত্মহত্যা করেছে। আমি গ্রামীণ ব্যাংককে এতো সুদ নিতে না করেছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূসের মাইক্রোক্রেডিট বাংলাদেশের দারিদ্র দূর করেনি। দারিদ্র দূর করেছি আমরা। পরিসংখ্যান নিয়ে দেখেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগে দারিদ্রের হার কতো ছিলো আর এখন কতো।

শেখ হাসিনা বলেন, নোবেল প্রাইজের আকাক্সক্ষা আমার নেই। আমার টাকা নেই, লবিস্টও নেই। পার্বত্য শান্তি চুক্তির কারণে অনেকে আমার কথা বলেছিলো, কিন্তু আমি সেটা নিয়ে ভাবিনি। ড. ইউনূস নোবেল পেয়েছেন, আমি তার সঙ্গে কনটেস্ট করতে যাবো কেনো? আবার বলা হয়, আমি নাকি জেলাস!

তিনি বলেন, বিশে^র যে কোনো দেশে ট্যাক্স ফাঁকি দিলে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়। আর তিনি সমানে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন।

ওয়ান ইলেভেনের সময়ে, আমি তখন জেলে। তিনি পলিটিক্যাল পার্টি করতে গেলেন। কিন্তু তিনি পার্টি করতে পারলেন না। তিনি যদি গ্রামের মানুষকে এতোকিছুই দিয়ে থাকেন, তারা তার জন্য আসলো না কেনো?

এই যে বিদেশে এতো বিনিয়োগ, টাকা কোথা থেকে আসে? তারপরও আমরা সবাই মিলে তাকে তুলেছি। ৯৮-৯৯ সালে গ্রামীণ ব্যাংক ডুবতে বসেছিলো। তখন আমরা সরকার থেকে টাকা দিয়েছি। তাকে সবচেয়ে বেশি আমিই দিয়েছি। কথায় আছে উপকারীকে বাঘে খায়।

তিনি মাঠে আসুক, কথা বলুক। ওনার পয়সা আছে, উনি দেখাচ্ছেন। নোবেল বিজয়ীদের দিয়ে বিজ্ঞাপন দেন। তিনি যদি এতোই জনপ্রিয়, তাহলে বিজ্ঞাপন দেন কেনো? শেখ হাসিনা কারো সাথে জেলাসি করে না। শেখ হাসিনা জাতির জনকের মেয়ে।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।