ডা. এস এ মালেক
রাজনীতিক ও কলামিস্ট
বামপন্থিরা শেখ হাসিনার ব্যাপারে যে ধরনের চিন্তা করেন না কেন, তিনি যে কোনো দিন জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবেন না, তা সত্য। বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে এক সময় নানা রকম সন্দেহ করা হতো। তা কিন্তু পরিশেষে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। শেখ হাসিনার ব্যাপারেও যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
সময়ের প্রয়োজনে
১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল বাঙালির জাতীয় জীবনে এক ঐতিহাসিক দিন। এই দিনেই ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের পর বাঙালির কাছে পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে ধর্ম রাষ্ট্র পাকিস্তানের পূর্বাংশ অর্থাৎ পূর্ব বাংলা থেকে চিরতরে বিদায় নেয় যুদ্ধে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে। তারা যে অস্ত্রের দ্বারা পূর্ব বাংলাকে পদানত করতে চেয়েছিল, তার অবসান ঘটে। প্রায় ৯৩ হাজার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ বাংলার যৌথ বাহিনীর কাছে বন্দি হয়। বাংলাদেশ শাসন করার কর্তৃত্ব তারা চিরতরে হারায়। তাদের স্থলে বাঙালিরাই বাংলাদেশ শাসন করার অধিকার লাভ করে। যে মহান সিপাহসালার অধীনে এ বিজয় অর্জিত হয় তিনি হলেন শেখ মুজিব, বঙ্গবন্ধু জাতির জনক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। একাধিক বিশেষণ একের পর এক তার নামের আগে প্রতিস্থাপন করলেও, তা বিন্দুমাত্র তাঁর প্রকৃত গৌরবের পরিচয় ঘটাতে সক্ষম হয় না। বাংলার নেতা, বাঙালির নেতা, বাংলার কৃষক-শ্রমিক, মেহনতি মানুষের নেতা, জনদরদি বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালির ভালোবাসার কাঙাল। জীবনের সবকিছুর বিনিময়েও বাঙালির প্রতি ভালোবাসা তিনি বিসর্জন দিতে রাজি ছিলেন না।
তাঁকে যখন একজন বিদেশি সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করলেন যে, তোমার সবচেয়ে বড় গুণ কি? তখন তিনি উত্তরে বললেন, আমি আমার মানুষকে ভালোবাসি। তারপর যখন জিজ্ঞাসা করল, তোমার সবচেয়ে বড় দোষ কি? আমি আমার মানুষকে বড় বেশি ভালোবাসি। এই বেশি ভালোবাসার কারণে অনেক মানুষের অনেক অপরাধের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন ক্ষমাশীল। আর ওই দুর্বলতার কারণে বাংলার মানুষের জন্য যা করতে তিনি চেয়েছিলেন, তাঁকে তা করতে দেয়া দেয়নি। পৃথিবীর অনেক দেশে সাম্রাজ্যবাদের অদৃশ্য, নৃশংস থাবায় বহু মনীষীর জীবন অবসান ঘটেছে। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হনন প্রক্রিয়া তার বাইরে কিছু নয়। তবে গভীর ক্ষোভের বিষয়, যাদের তিনি প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন, তারা তাঁর মৃত্যুর পর সে ভালোবাসার প্রতিদান দিতে আসেনি। নির্মম, নিষ্ঠুরভাবে, নীরব অপ্রতিবাদেই রয়েছেন। তাই ইতিহাসের চাকা ঘুরানোর যারা নায়ক ছিলেন, তারা নির্বিঘ্নে তাদের ষড়যন্ত্রকে সফল করতে সক্ষম হয়েছেন। সাধারণ মানুষকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। কেননা জননেতারাই জনমত সৃষ্টি করেন, সেই জনমত সৃষ্টি না হলে জনমতের সমর্থনে কোনো কিছুই করা সম্ভব হয় না। ১৫ আগস্টের পর কোনো জননেতাই বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে জনমত সৃষ্টি করার চেষ্টা করেনি। বরং আওয়ামী লীগের নেতা খুনি খন্দকার মোশতাক প্রায় ৮২ দিন পার্লামেন্ট কার্যকর রেখে সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে প্রায় বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্যকে নিয়ে পুনরায় মন্ত্রিসভা গঠন করায়, জনগণ চরমভাবে বিভ্রান্ত হয়। তখন এরূপও বলা হয়েছিল, হঠাৎ করে কয়েকজন পথভ্রষ্ট সৈনিক ব্যক্তিগত বা পারিবারিক আক্রোশের কারণে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। সুযোগ পেলে ওই হত্যার বিচার করা হবে। এ কথা ঠিক, হত্যাকারীরা তখন সুসংহত হতে পারেনি। এমনকি সেনাবাহিনীর সব কর্মকর্তারা ও সাধারণ সৈনিকরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। সেনাবাহিনীর ভেতর লুকিয়ে থাকা ষড়যন্ত্রকারীরা মোশতাকের মতো স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তিকে লোভ দেখিয়ে ইন্ধন জুগিয়ে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছিল।
নির্বাচিত সংসদের পাঁচ ভাগ সদস্যও হত্যাকারী মোশতাকের সহযোগী ছিল না। এটা প্রমাণিত হলো দ্বিতীয়বার যখন বঙ্গভবনে সাংসদদের বাধ্যতামূলক উপস্থিতি কার্যকর করা হলো, তখন বর্তমান আইনমন্ত্রীর পিতা এড. সিরাজুল হক সমস্বরে মোশতাককে খুনি বলে অভিহিত করেছেন এবং ওই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানিয়েছেন। সেদিন বঙ্গভবনে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, তাই প্রমাণ করে সাংসদরা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত অনুগত। কখনো তারা ওই হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংসদে অনুমোদন দিতেন না। এটা সঠিকভাবে অনুধাবন করার পর পরই মোশতাকের অপসারণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আর পর্দার অন্তরালে ষড়যন্ত্রের প্রকৃত নায়ক জেনারেল জিয়ার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা বস্তুত ২ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ দিন ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে ও বাইরের রাজপথে এবং বঙ্গভবনে তখন যা কিছু ঘটেছিল, তার মূল লক্ষ্য ছিল জেনারেল জিয়াকে ক্ষমতাসীন করা। যারা বলেন, জনতার দাবিতে তথাকথিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জিয়াকে ক্ষমতাসীন করা হয়েছিল এবং যারা ৭ নভেম্বরকে এখনো বিপ্লব বলে অভিহিত করেন, তাদের কাছে জিজ্ঞাস্য ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ক’জন রাজপথে নেমে ওই তথাকথিত বিপ্লবের পক্ষে সংগ্রাম করতে প্রস্তুত ছিলেন। ওই তথাকথিত বিপ্লবে সাধারণ মানুষ কতটুকু সম্পৃক্ত ছিল? জেনারেল খালেদ মোশাররফ যে বিদ্রোহ করেছিলেন, তিনি কি বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ জানাতেই তা করেছিলেন? রাশেদ মোশাররফ তার মাকে নিয়ে যে মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাও কি বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ স্বরূপ? মেজর জলিল, কর্নেল তাহের ও গণবাহিনীর সদস্যদের যদি বিপ্লবী হওয়া লক্ষ্য হয়ে থাকত, তাহলে তারা একজন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নায়ককে কী করে ট্যাংকের পিঠে চড়িয়ে এনে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করলেন? কর্নেল তাহেরের হত্যাকাণ্ড ও গণবাহিনীর শত শত সৈনিকের অপমৃত্যু কি প্রমাণ করে না যে, সেদিন জাসদ নেতারা তাদের সিদ্ধান্তে ভুল করেছিলেন। বিপ্লব তো নয়ই, বরং একটা ষড়যন্ত্রের কাছে পা দিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় সর্বনাশটি করেছিলেন এবং সে কারণে তাদের সীমাহীন মূল্য দিতে হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদের এজেন্ট পাকিস্তানের চর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী বাঙালি জাতীয়তাবাদে অবিশ্বাসী সাম্রাজ্যবাদের পদলেহী জেনারেল জিয়কে মঞ্চে এনে রাজনৈতিক কর্তৃত্বে প্রতিষ্ঠিত করে স্বাধীনতার শত্রুদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করার যে মারাত্মক রাজনৈতিক ভুল সেদিন জাসদ করেছিল, তার খেসারত আজো দিতে হচ্ছে। এখন নির্দ্বিধায় বলা যায়, স্বাধীনতার পর পরই যদি বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের দোহাই দিয়ে ছাত্রলীগকে বিভক্ত করে, জাসদ নামক বামপন্থি বলে দাবিদার রাজনৈতিক দল গঠন করা না হতো, ৪০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা (ছাত্রলীগের কর্মীরা) তৎকালীন সরকার ও বিরোধী দলের সংঘাতে নিহত না হলে, তাহলে এ দেশের স্বাধীনতার শত্রুরা যারা ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তারা এত দ্রুততার সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সক্ষম হতো না।
অবশ্য জাসদের সৃষ্টির পেছনে যে কোনো রাজনৈতিক কারণ ছিল না বা দেশের বাইরের কোনো ইন্ধন ছিল না, বাস্তবতা তা নয়। সে দিনের ক্ষমতাসীন আ.লীগ শত্রু মিত্র নির্ধারণে বেশ কিছুটা অসচেতন ছিলেন। প্রকৃত বন্ধু সহযোগী তাদের শত্রু করে দিয়ে তারাই তাদের বিরোধী শক্তিকে পরোক্ষভাবে হলেও সহযোগিতা করেছেন বলে মনে হয়। এসব ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর মতো মহান জাতীয় নেতা, মুক্তিযুদ্ধের প্রাণ পুরুষকে যারা বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছেন শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করেছেন, তারাও দেশের কম ক্ষতি করেননি। প্রাজ্ঞ, বিজ্ঞ শেখ হাসিনা যখন পর পর জাসদকে নিয়ে দুটি সরকারের দায়িত্ব পালন সম্ভব হয়ে থাকে, তাহলে আমার প্রশ্ন বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ওইসব নেতাকে সঙ্গে রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব হলো না কেন? কেনই বা জাসদের জন্ম হলো? সেদিন জাসদ যদি বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরোধিতায় না নামত, তাহলে জামায়াত, শিবিরসহ স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ১৯৭১-এর পরাজয়ের পর মসজিদ, মাদ্রাসায় আত্মগোপন করেছিল, তারা রাজপথে নেমে অস্ত্রের প্রদর্শন করতে সক্ষম হতো না। সেদিন সিরাজ শিকদার উগ্র বামপন্থির রাজনীতির প্রবর্তক হিসেবে যে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছিল, পরে নিজেও একটা পর্যায়ে নিহত হলো।
এর কোনো কিছুই ঘটত না বলে মনে হয় যদি মুক্তিযোদ্ধারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করে বঙ্গবন্ধুকে দেশ পরিচালনায় সহযোগিতা করতেন, তাহলে ১৯৭৫-এর বিপর্যয় ঘটত বলে মনে হয় না। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি সেই ১৯৭১ বা তার আগে থেকে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিরোধিতা ছিল, চায়না-আমেরিকান অ্যাকসিসের নির্দেশ মতো আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে দুই কুকুরের লড়াই বলে অভিহিত বলে অভিহিত করেছিল এবং মুক্তিবাহিনীর হাত থেকে সুযোগ পেলেই অস্ত্র কেড়ে নিত। তারা দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি যে আজো সক্রিয়, তার জন্য শুধুমাত্র জেনারেল এরশাদ ও জিয়া এককভাবে দায়ী এরূপ চিন্তা করা বোধ হয় সঠিক নয়। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করেছিলাম, তাদের অনেকে বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনা অনুসরণ করেনি। তৎকালীন সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনৈতিক ব্যবস্থা পূর্ণভাবে বিবেচনায় নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জন্য যা বাস্তব তাই অনুসরণ করে স্বাধীন বাংলার দেশ পরিচালনা করতে চেষ্টা করেছিলেন।
তবে নীতিনির্ধারণে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি কোথাও বিন্দুমাত্র ভুল করেননি। তার রাজনীতি এতই স্বচ্ছ ও সর্বাত্মকভাবে সমর্থনযোগ্য ছিল যে, সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের দেশীয় অনুসারীরা তাকে বুঝতে বিন্দুমাত্র ভুল করেনি। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫-এ তারা নিবিড়ভাবে তার রাষ্ট্র পরিচালনা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণার পর তাকে তারা আর সময় না দিয়ে ১৯৭৫-এর প্রতিবিপ্লব ঘটিয়েছে। আর সেই থেকে দেশের যাত্রা হয়েছে ভিন্নমুখী। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এই বিপরীতমুখী যাত্রা থেকে দেশকে ফিরিয়ে এনে স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনের পথে দ্রুত এগিয়ে চলেছেন। হঠাৎ ঘরের ছেলেরা বিভীষণ হয়ে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহার শুরু করল। তখন আমি একজন পার্লামেন্ট সদস্য। আমার মনে আছে জাসদ সৃষ্টির এক সপ্তাহ আগে আমার বাসায় সারা রাত ধরে তখন ছাত্রলীগের অ্যাক্টিং প্রেসিডেন্ট চিত্র গুহ ও আ স ম রবকে রাতভর বুঝিয়ে ছিলাম যে, কখনো বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করা সমীচীন নয়। দল ক্ষমতাসীন হওয়ার কারণে দলের ভেতর যে সুবিধাবাদীরা দুর্নীতি শুরু করেছে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থেকেই তা মোকাবেলা করা সম্ভব। একটা সশস্ত্র বিপ্লবের পর ‘গ্লোরিং এসপেক্টেশন অব রিভ্যুলেশন’-এর কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে একই রকম ঘটেছে।
বাংলাদেশে তারই প্রতিফলন আমরা দেখতে পাচ্ছি, এতে হঠকারী হওয়া সমুচিত নয়। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে দল গঠন করে, বঙ্গবন্ধুকে দুর্বল করতে চেষ্টা করা হলে সমগ্র জাতিকে খেসারত দিতে হবে। জনাব আ স ম আব্দুর রব এখনো বেঁচে আছেন, তিনি শেখ হাসিনার মন্ত্রীও ছিলেন। এখন আবার তিনি ভিন্ন সুরে কথা বলেন। তাদের দলের আর একজন নেতা এখনো শেখ হাসিনার ক্যাবিনেট সদস্য। শেখ হাসিনা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। অতি স্বল্প সময়ের ভেতর প্রেক্ষাপট পরিবর্তন করে জনগণের ভাগ্যকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আগের সবকিছু ভুলে গিয়ে তাই এখন স্বাধীনতার সপক্ষের সব শক্তির উচিত ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনাকে নির্বাচনে জয়যুক্ত করে তিনি যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন, তা বাস্তবায়ন করা। বামপন্থিরা শেখ হাসিনার ব্যাপারে যে ধরনের চিন্তা করেন না কেন, তিনি যে কোনো দিন জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবেন না, তা সত্য। বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে এক সময় নানা রকম সন্দেহ করা হতো। তা কিন্তু পরিশেষে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। শেখ হাসিনার ব্যাপারেও যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। জঙ্গিবাদী, সন্ত্রাসী, দক্ষিণপন্থি, প্রতিক্রিয়াশীল স্বাধীনতা বিরোধীদের মোকাবিলা করতে হলে বর্তমান মুহূর্তে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে শেখ হাসিনা। একমাত্র শেখ হাসিনার হঠাৎ কোনো অনুপস্থিতিতে এটা নিবিড়ভাবে অনুধাবন করা সম্ভব হয়। কিন্তু তখন হয়তো অনেক দেরি হবে বলে মনে হয়।
ডা. এস এ মালেক : রাজনীতিক ও কলামিস্ট। ভোরের কাগজ