রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
খালেদা জিয়ার জামিন হয়নি : পরবর্তী শুনানি আগামি ১২ ডিসেম্বর : শুনানি কেন্দ্র করে আদালতে হট্টগোল, ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছে সরকার

বিবিসি : বাংলাদেশে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদনের শুনানি পিছিয়ে দেয়ার প্রেক্ষাপটে আদালত কক্ষে তিন ঘন্টা সময় ধরে দলটির সমর্থক আইনজীবীদের অবস্থান এবং হট্টগোলের কারণে আপিল বিভাগের কার্যক্রমে কার্যত অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।

এই পরিস্থিতিকে নজিরবিহীন হিসেবে বর্ননা করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, বাড়াবাড়ির একটা সীমা থাকা দরকার।

বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা বলেছেন, তাদের কথা না শুনেই জামিনের আবেদনে সময় এক সপ্তাহ পিছিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার ঠিক করা হলে তারা আইনের ভিতরে থেকে তার প্রতিবাদ করেছেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, আদালতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদনের শুনানিতে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন জমা না দিয়ে এটর্নী জেনারেল সময় চেয়েছিলেন। সেই প্রেক্ষাপটে আদালত শুনানি পিছিয়ে ১২ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করে।

তখন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের হৈচৈ এর মুখে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে প্রধানবিচারপতির নেতৃত্বে অন্য বিচারপতিরা বিব্রতবোধ করে এজলাস ত্যাগ করেন।

বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত কক্ষেই অবস্থান নিয়ে থেকে শ্লোগান দিতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১১টা দিকে বিচারপতিরা আবার এজলাসে এসে অন্য মামলার শুনানি করার চেষ্টা করেন।

কিন্তু হট্টগোলের কারণে কার্যক্রম চালাতে না পেরে বিচারপতিরা দুপুরে আদালতের এজলাস ত্যাগ করেন। এটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম এক সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে বর্ননা করেন।

খালেদা জিয়া: রাজনৈতিক যত সফলতা এবং ভুল

বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে এজলাসে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, আপিল বিভাগে এমন অবস্থা তারা আগে কখনও দেখেননি। তিনি মন্তব্য করেছেন, বাড়াবাড়ির একটা সীমা থাকা দরকার।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার আরো কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাকি আছে।

তিনি অভিযোগ করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতে চরম হট্টগোল করেছে।

“আমাদের এই বয়সে এতোটা হট্টগোল দেখিনি। জনসভায় যে রকম হট্টগোল হয়, তারা সে রকম করেছে,” সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বিচারপতিরা এজলাস ত্যাগ করার পরেও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদলত কক্ষে তাদের অবস্থান বজায় রাখেন।

এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রতিবেদন গতরাতেই তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সরকারের চাপের কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেটি আদলতে জমা দেয়নি বলে অভিযোগ করেন মি: আলমগীর।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব আরো অভিযোগ করেন যে, সরকার মেডিকেল বোর্ড এবং আদালতের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়, খালেদা জিয়া জেলে ‘রাজার হালেই’ আছে।

২০১৮ সালের ২৯  অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠায় আদালত।

শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গত বেশ কয়েকমাস যাবত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে কেবিন ব্লকে চিকিৎসাধীন আছেন।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ৩৭ টি মামলা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৫ টি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন হয়েছে। গত প্রায় দুই বছর ধরে জামিনের চেষ্টা করছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

জামিন আবেদনের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেছেন আদালতের সামনে।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।