শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
কেন পিছাল ঢাকা উত্তর মেয়রের উপনির্বাচন?

একুশে বার্তা ডেক্স  :  আইনি জটিলতা দূর না করে ডিসিসির নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করায় শেষাবধি  তা আইনি আদেশে তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। আর আইনি জটিলতা অবসান না করেই বা কেন ডিসিসির নির্বচনী তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি।  তা হলে কি বিএনপির ভাষায় আওয়ামীলীগ নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়েই আইনি জটিলতা দূর না করেই এই নির্বাচনী তফসিল ইসিকে দিয়ে ঘোষণা করেছিল। যদিও সরকারি দলের নেতৃবৃন্দ তা অস্বীকার করেছেন। এ নিয়ে বিবিসি বাংলা ও অন্যান্য মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করছে। আর এ সব বিষয় নিয়েই একুশে বার্তার অন লইন পাঠকদের জন্য এখানে ডিসিসির নির্বাচন স্থগিত নিয়ে প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো : বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে,বাংলাদেশে হাইকোর্ট ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে।

বিরোধী দল বিএনপি এমন পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে। একইসাথে দলটি বলেছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের কোন ঝুঁকি নিতে চাইছে না।

তবে আওয়ামী লীগ এসব অভিযোগ নাকচ করেছে। প্রধান এই দুই দলই ঢাকা উত্তরের মেয়র উপনির্বাচনের জন্য তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছিল। ২৬ ফেব্রুয়ারি এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।

এবছরের শেষদিকে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছিল।

কিন্তু এই উপনির্বাচন করার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতার বিষয় হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। শেষ পর্যন্ত আদালত দুটি রিট আবেদনের শুনানি করে তিন মাসের জন্য ঢাকা উত্তরের নির্বাচন স্থগিত করেছে।

ঢাকার ভাটারা এলাকার দুটি ইউনিয়নকে উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় এনে ১৮টি ওয়ার্ড সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সেই ইউনিয়ন দুটির চেয়ারম্যানরা রিট আবেদনগুলো করেছেন।

তাদের পক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব চৌধুরী বলেছেন, সম্প্রসারিত এলাকাগুলোর ভোটার তালিকা চূড়ান্ত না করেই তফসিল ঘোষণা করা হয়।

এ ছাড়া মেয়র পদে মেয়াদের বাকি আড়াই বছরের জন্য উপনির্বাচন হচ্ছে, নতুন ওয়ার্ডগুলোতে মেয়াদ কত হবে তার ব্যাখ্যা নেই। এসব জটিলতা নিয়েই আদালতের আশ্রয় নেয়া হয়েছে।

যদিও এই পরিস্থির জন্য বিএনপির নেতারা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন।

একই সাথে তারা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের বছরে ঢাকা উত্তরের উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতাসীন দলের সাথে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের লড়াইয়ে নামতে চেয়েছিলেন। সরকার সেই ঝুঁকি নিতে চায়নি বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, “জটিলতাগুলো দূর না করেই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছিল। ফলে এখনকার পরিস্থিতির দায় নির্বাচন কমিশনের ওপরই বর্তায়।”

“এছাড়া এটাও প্রমাণ হয় যে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। পরিস্থিতির পেছনে সরকারেরও ভূমিকা আছে বলে আমরা মনে করি। কারণ নির্বাচনে হার নিশ্চিত জেনে সরকার একটা সুযোগ নিয়েছে।”

যেহেতু বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থার দাবি করে আসছে আর সরকার তা মানছে না, এমন প্রেক্ষাপটে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদের উপনির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশন কতটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সরকারই বা কী ভূমিকা রাখে, সেদিকেই সবার দৃষ্টি ছিল।

হমেদ

এছাড়া এই উপনির্বাচনে দলগুলোর জনসমর্থনের প্রশ্নে ফলাফলের একটা প্রভাব রাজনীতিতে পড়তে পারে এমন বিষয়েও আলোচনায় ছিল।

এসব কারণেই রাজনৈতিক অঙ্গনে এই উপনির্বাচনের তাৎপর্য ছিল বলে বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন। তারা বলেছেন, ক্ষমতাসীনরা এই সুযোগ দিতে চায়নি।

তবে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা এবং মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এসব অভিযোগ মানতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, “আমরা যদি নির্বাচন করতে না চাইতাম, তাহলে আমরা প্রার্থীই মনোনয়ন দিতাম না। আমরা গত ১৭ জানুয়ারিই প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছি। সেখানে বিএনপির এসব বক্তব্য নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।”

অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার যে অভিযোগ উঠেছে, তা অস্বীকার করে কমিশনের সচিব হেলাল উদ্দিন বলেছেন, সব জটিলতা দূর করেই নিয়ম অনুযায়ী ঢাকা উত্তরের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল।

একই সাথে তিনি উল্লেখ করেছেন এখন আদালতের আদেশ অনুযায়ী মেয়র পদের উপ-নির্বাচন এবং নতুন ওয়ার্ডগুলোর নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত থাকবে।

উল্লেখ্য, ‘আইনি জটিলতা দুর না করেই ডিসিসিসির নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করলো নির্বাচন কমিশন’ একুশে বার্তা অনলাইন সংস্করনে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।