বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৫:১৪ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
গোয়েন্দা প্রতিবেদন : আমলে নিচ্ছে না সিভিল এভিয়েশন : সিএসও এখনও বহাল : নিরাপত্তা হুমকিস্বরূপসহ অর্ধশত নিরাপত্তাকর্মী মানব পাচারে জড়িত

বিশেষ সংবাদদাতা : হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা , কোন কোন কর্মকর্তা বিমানবন্দরের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ, জামায়াত- শিবিরের লোকজন কি-পয়েন্টে বসানো, মানবপাচার, মুদ্রা পাচার, সোনা পাচারসহ ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্তদের পুনরায় চাকরিতে পুন:নিয়োগসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা প্রতিবেদন আমলে নিচ্ছে না বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন অথরীটি (সিএএবি)। এ ক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছে, উচ্চ আদালতের আদেশ। উচ্চ আদালত শাহজালালে ভিআইপিদের সাথে যারা প্রবেশ করেন তাদের ব্যাপারে সতর্ক হতে বললেও তা অমান্য করে চলেছে সিএএবি। ফলে ভিআইপির সাথে করা কারা প্রবেশ করছে তা অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে। আর এই সুযোগেই যুদ্ধাপরাধীর দায়ে আজীবন দন্ডপ্রাপ্ত মরহুম গোলাম আযমের পরিবারও শাহজালাল বিমানবন্দরে ভিআইপি লাইন্ঞ ব্যবহারজনিত গোয়েন্দা প্রতিবেদন আমলে নেয়নি সিএএবি প্রশাসন। বর্তমানেও ভিআইপি বরাদ্দ ছাড়াই অবাধে শিকদার গ্রুপের কর্নধাররা ‘আর এন্ড আর’ এভিয়েশনের নামে ভিআইপি লাউন্ঞ ব্যবহার করছে- যা শাহজালালের ভিডিও ফুটেজ খুজলেই পাওয়া যাবে। কিন্ত সিভিল এভিয়েশন নির্বিকার।
খোজখবর নিয়ে জানা গেছে, সিভিল এভিয়েশনের সহকারি পরিচালক, যিনি বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা, তার বিরুদ্ধে সোনা পাচারে সহায়তাসহ বিভিন্ন অভিযোগে একাধিকবার গোয়েন্দা প্রতিবেদন হয়েছে। কিন্ত কোনটাই আমলে নেয়নি সিএিএবি প্রশাসন। অতি সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তাকে “ মানসিক ভারসাম্য’’ আখ্যায়িত করে বিমানবন্দর থেকে কম গুরুত্বপূর্ন স্থানে পোষ্টিংয়ের কথা বলা হলেও তা এখন কার্যকর করেনি সিএএবি কর্তৃৃপক্ষ। আরেকটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বেক্সিকো নামের একটি কোম্পানির একজন প্রটোকল কর্মকর্তা যার নাম রবিউল তার প্রাইভেট কার শাহজালালের ভিআইপিতে প্রায় সময়ই পড়ে থাকে এবং গাড়িটি নাকি সিএসও’র জন্যই রাখা হয়ে থাকে। ওই গাড়ির ওপর নজরদারি করলেই কেচো খুড়তে সাপ বের হয়ে আসবে।
সূত্র জানায়, সিভিল এভিয়েশনের একজন নিরাপত্তা সুপার, যার বিরুদ্বে একাধিক মামলা, যদিও তদবির করে মামলা শেষ করা হয়েছে, তাকে গত জানুয়ারীতে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মানব পাচারে সংশ্লিষ্টতার জন্য গ্রেফতার করে। কিন্ত প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বিমানবন্দরের জন্য হুমকিস্বরূপ উল্লেখ করে তাকে বিমানবন্দর থেকে অন্যত্র বদলির সুপারিশ করলেও তাকে এখনও শাহজালালে আগলে রাখা হয়েছে। ইতিপূর্বে সিএএবির ২৯ নিরাপত্তা রক্ষী যারা দীর্ঘদিন শাহজালালের কর্মরত তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা প্রতিবেদন এখনও কার্যকর করা হয়নি। তাদের আব্দুন নাসের নামের একজন সহকারি পরিচালক ডেকে জিঙ্ঘাসাবাদ করেন। কিন্ত এরা প্রায় সবাই এখনও শাহজালালে বহাল তবিয়তে।
সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময়ে গণ মাধ্যমে ‘শাহজালালে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারি গোয়েন্দা নজরদারিতে’ ফলাও করে প্রচার করলেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি সিএএবি প্রশাসন। বার বার সোনা পাচার করতে গিয়ে ধরা খেয়ে জেল খাটলেও নিরাপত্তা কর্মী তালেবুর রহমান তালেবকে চাকরিচ্যুত্য করা হয়নি। এবার আবার তালেব সিএসও রাশিদার কথামতো সোনা পাচার করতে গিয়ে গোয়েন্দাদের হাতে ধরা খাবার পর তাকে বরখাস্ত করেছে সিএএবি প্রশাসন। কিন্ত এখনও তালেবের মতো আরো অনেকে মানব পাচারসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত। এর মধ্যে সোনা পাচার করতে গিয়ে (পরিচালকের পিয়ন মতি,প্রায় ২৫ বছর যাবত মতি শাহজালালে কর্মরত, তার আপন ছোট ভাই) রেজাউল করিম হাতেনাতে ধরা পড়ে জেল খাটছে। কিন্ত রেজাউল করিমের সহযোগি নিরাপত্তা কর্মী ভুট্রো, ইউসুফ কামাল, সহকর্মী মেজবাহ ( বাড়ি গোপালগন্ঞ, একজন সরকার দলীয় প্রভাবশালী সাংসদের প্রটোকল করে থাকে) নিরাপত্তা সুপার নজরুল, নিরাপত্তারক্ষী জিল্লুর, মানিক,মিজান , বাদল,বারেক শিকদার, কবীর ( কাওলার), কবীর ( বাড্ডা), নিরাপত্তা অপারেটর বুলবুল, আমিনুল, কালাম , ফরিদ, হাবীব, হান্নান, জালাল, মতিন, রাকিব, সুমন, জাহাংগীর, খলিল, রবিউল, টিপু, গনি, সাইফুল, রহিমসহ প্রায় অর্ধশত নিরাপত্তাকর্মী মানব পাচার, সোনা পাচারে জড়িত বলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিবেদন দিলেও তা আমলে নেয়নি সিভিল এভিয়েশন প্রশাসন।
মানব পাচার প্রসংগে শাহজালালের পরিচালক বললেন, গোয়েন্দা প্রতিবেদনে মানব পাচারে জড়িত থাকার কথা জানতে পেরে কয়েকটি কি পয়েন্ট থেকে সিএএবির নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষীদের ডিউটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি শাহজালালের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। আর এর ফলশ্রুতিতে কার্গো ফ্লাইটের ওপর থেকে নিষেধাঙ্ঘা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।