বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করে ছুটি : অবশেষে আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ না করায় শাহজালাল বিমানবন্দরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাশিদাকে শোকজ : বাবার মৃত্যুবার্ষিকীর জন্য ছুটি নিয়েও শাহজালালে ভিআইপিতে প্রটোকলে সময়ক্ষেপণ

বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ( সিএসও) রাশিদা সুলতানাকে ‘আনন্দ শোভাযাত্রার’ দিনে ছুটি মনজুর করা হয়েছে। যার স্মারকনং-নথি/ হশাআবি/বিবিধ-৬/২৩২ তারিখ: ২৮-১১-২০১৭। ছুটি নিয়ে শাহজাললের ভিআইপিতে প্রটোকল করায় তার ( সিএসও) বিরুদ্ধে আবারও কারন দর্শানো নোটিশ জারি করা হয়েছে। এ নিয়ে তার ( সিএসও) রাশিদার বিরুদ্ধে ৭টি কারন দর্শানো নোটিশ জারি করা হলো। কর্তব্য কাজে অবহেলা, কর্মচারিদের সাথে খারাপ আচরন, পরিচালকের সাথে ওদ্ধত্য আচরনসহ নানা অভিযোগে তাকে বিমানবন্দর থেকে বদলির সুপারিশের প্রায় পক্ষকাল অতিবাহিত হলেও তাকে অদ্যাবধি বিমানবন্দর থেকে বদলি করা হয়নি। একটি বিশেষ পরিবারের এক সদস্য‘র নেক আর্শিবাদ তার উপর বর্ষিত হওয়ার গুন্ঞন শোনা যাচ্ছে।
খোজখবর নিয়ে জানা গেছে, সিএসও রাশিদা সুলতানাকে বিমানবন্দর থেকে বদলি না করে তাকে পুনর্বহালের জন্য সিএএবির চেয়ারম্যান পরিচালক শাহজালালকে ডেকে নিয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। সিএসও কর্মচারিদের মধ্যে হুংকার ছাড়ছেন, ‘আমকে বিমানবন্দর থেকে সরায় এমন সাধ্য কার ? আমি তো জামায়াত-শিবিরের লোক না, আমি শেখ পরিবারের আত্মীয়। নিরাপত্তা সেকশনে গার্ড আব্দুল্লাহর উদ্দেশ্যে নাকি সিএসও রাশিদা বলেন , ‘ আব্দুল্লাহ রোস্টার কর, আমি আবার সব ক্ষমতা ফিরে পেয়েছি’।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিএসও রাশিদা এবং পরিচালক শাহজালাল এখন মুখোমুখি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। পরিচালক শাহজালাল তার প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখাচ্ছেন আর সিএসও রাশিদা তার রাজনৈতিক প্রভাব দেখাচ্ছেন। এই ক্ষমতার দেখাদেখিতে বিমানবন্দরের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে বলে পরিচালক নিজেই তা স্বীকার করেছেন। কিন্ত চেয়ারম্যান তা উপলব্ধি করতে না পারায় শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমেজ, ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি শোকজই যথেষ্ট কিন্ত সিএসও রাশিদার বিরুদ্ধে সাত সাতটি শোকজ, ১ টি কৈফিয়ত তলব করার পরও তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেয়ায় সিএএবির প্রশাসন নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
সর্বশেষ সিএসও রাশিদার বিরুদ্ধে গত ২৮ নভেম্বর আরো একটি শোকজ করা হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালকের দপ্তর থেকে সিএএবির চেয়ারম্যান বরাবর জারি করা ওই শোকজের বিষয়বস্তুতে বলা হয়েছে, ‘নৈমিত্তিক ছুটি প্রাপ্ত হয়ে ছুটি সময়কালীন গন্তব্যে না থাকা এবং স্টেশন অবস্থান করেও সরকারী কর্মসূচীতে অনুপস্থিতি থাকার কারন দর্শানো প্রসংগে’। শোকজের চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ আপনি বিগত ৮-১১-২০১৭ তারিখে আপনার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী পালনের উদ্দেশ্যে ফরিদপুর গমনের লক্ষ্যে ২৬-১১-২০১৭ তারিখ থেকে ২৮-১১-২০১৭ তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ০৩ (তিন) দিনের নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করেন যা নি¤œ স্বাক্ষকারী কর্তৃক ২৩-১১-২০১৭ তারিখে মনজুর করা হয়। পরবর্তীতে আপনি মৌখিকভাবে সাপ্তাহিক ছটির দিন অর্থাৎ ২৪-১১-২০১৭ তারিখ ও ২৫-১১-২০১৭ তারিখে আপনার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদপুর গমনের জন্য পরিচালককে অনুরোধ করেন। পরিচালক আপনাকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও যুক্তরাজ্য সরকারের মধ্যকার চলমান ‘জয়েন্ট এসেসম্যান্ট’ কর্মসূচীতে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে আপনার উপস্থিতির প্রয়োজনীয়তা অবহিত করেন। কিন্ত আপনার অনুরোধে মানবিক দৃষ্টিকোনে পরিচালক আপনাকে একটি স্টেশন ত্যাগের দরখাস্ত দাখিলপূর্বক আপনার ০৩ (তিন) দিনের ছুটির সাথে আরো ০২ ( দুই) দিন অর্থাৎ ২৪-১১-২০১৭ ও ২৫-১১-২০১৭ তারিখে ফরিদপুর অবস্থানের অনুমতি প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে ২৫-১১-২০১৭ তারিখ সকল কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বংগবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি উদযাপন উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রায় যোগদানের নির্দেশনাও প্রদান করা হয়। অপর দিকে আপনি ছুটি ও স্টেশন ত্যাগের অনুমতি নিয়েও ফরিদপুর গমন করেননি। ২৪-১১-২০১৭ তারিখে রাতে আপনাকে বিমানবন্দরে ভিআইপি প্রটোকল করতে দেখা গেলে আপনি বলেন যে, অসুস্থতার জন্য ছুটিতে গমন করেন নাই। পরের দিনগুলো অর্থাৎ ২৫-১১-২০১৭ তারিখ হতে ২৭-১১-২০১৭ তারিখে আপনি ঢাকায় অবস্থান করেও বংগবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষনের স্বীকৃতিস্বরূপ আনন্দ শোভাযাত্রা অংশগ্রহণ করেননি।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে ছুটি প্রদান, ৭ মাচেরও ভাষণের স্বীকৃতি স্বরূপ আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ না নেয়া, ছুটি মনজুর করার পরও শাহজালাল বিমানবন্দরে ভিআইপিতে প্রটাকল করার কারণে শোকজ নোটিশ জারিরর পরও ৩ দিনের মধ্যে শোকজের জবাব না দিয়ে সিএসও রাশিদা সুলতানা বিমানবন্দরে বহাল। কোন খুটির জোরে সিএসও রাশিদা সুলতানা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করার সাহস পেল ? আর সিএএবি কর্তৃপক্ষই বা কিভাবে সিএসও রাশিদাকে আনন্দ শোভাযাত্রার দিনে ছুটি দিলো- এ প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।