বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
সিভিল এভিয়েশনে দুদকের হানা : অবশষেে দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী আছির উদ্দিনকে গ্রেফতার করলো দুদক

এইচএম দেলোয়ার : সিভিল এভিয়েশনের ইএম-১ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আছির উদ্দিনকে ১২ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় গ্রেফতার করেছে দুদক। সিভিল এভিয়েশনের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো.আব্দুল মালকেরে অফিস কক্ষ থকেে প্রকৌশলী আছরি উদ্দনিকে গ্রেফতার করা হয়। এ খবররে সত্যতা নিশ্চিত করছেনে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক জানান, আছির উদ্দিন সকালে তার অফসি কক্ষে বসে অফিস করছিল । দুদকের অভিযান টের পেয়ে সে আমার কক্ষে আসে। দুদক টিম আমার রুমে প্রবেশ করে আছির উদ্দিনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
প্রকৌশলী আছির উদ্দিনের ব্যাপারে দুদক যখন প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে সে সময় আছির উদ্দিন বলে বেড়াতো যে, দুদক তো আমার কিচ্ছু করতে পারবে না। তিনি নাকি দম্ভ করে বলে বেড়াতেন , দুদকে লাখ লাখ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ফেলেছি , দুদক আর আমাকে তলব করবে না। মামলাও করবে না। কিন্ত দুদকরে নামে অপবাদ দিলেও দুদক তার পিছু ছাড়নি। অবশেষে দুদক ‍সিএএবির প্রকৌশলী আছির উদ্দিনের ব্যাপারে তদন্ত করে র্দুনীতির উৎস খুজে পেয়ে মামলাও করেছে, দুদক মামলা করার পর প্রকৌশলী আছির উদ্দিন বেশ কিছুদিন দূরে  থেকে অফিস করেছেন । অবশষেে ১২ ডিসেম্বর দুদক তাকে পাকড়াও করলো।
সংশ্লষ্টি সূত্রে জানা গেছে,  প্রকৌশলী  আছির উদ্দিনের দুর্নীতির ফসল অভিজাত উত্তরা ১৪ নং সেক্টরে জহুরা মার্কেট সংলগ্ন বহুতল বিশিষ্ট আলিশান বাড়িটি তার মেয়ের নামে বলে তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করছে। খোজখবর নিয়ে জানা , তার মেয়ে নাবালক , বয়স ১৮ বছর হয়নি , উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলের ছাত্রী।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে , ঘুষখোর , দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী আছির উদ্দিনের বিরুদ্বে সিএএবির বিভিন্ন বিমানবন্দরে উন্নয়নমুলক ৩২ টি ঠিকাদারি কাজে দুর্নীতির অভিযোগে তারই সহকর্মি আরেক নির্বাহি প্রকৌশলী মিহির চাদ দে কর্তৃক সিএএবির চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দায়ের এবং দুদকে অনুলিপি প্রদান ,কক্স্রবাজার বিমানবন্দরে জেনারেটর সংস্থাপন কাজের দুর্নীতি , ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ইন্টারন্যাশনালের সত্বাধিকারি ঠিকাদার সাহাবুদ্দিনের কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি , না দেয়ায় তার প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া নিরাপত্তা পাস ইস্যু করে তাকে ফাসিয়ে দেয়াসহ ইত্যাকার অভিযোগে জ প্রকৌশলী আছির উদ্দিনকে দুদক প্রথমে চিঠি দিয়ে তলব করে। সেই সাথে ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ইন্টারন্যাশনালের মালিক সাহাবুদ্দিনকেও দুদক তলব করে , দুদকের চিঠি পেয়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক দুদকে হাজির হয়ে দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী আছির উদ্দিনের বিরুদ্বে তথ্য- উপাত্য দিয়ে সাক্ষ্য প্রদান করেন। তার সহকর্মি প্রকৌশলীর মিহির চাদ দেও তার বিরুদ্বে সাক্ষ প্রদান করেন। দুদক তাকে ৫/৭ বার চিঠি দিয়ে তলব করে , অবশষেে দুদক তার বিরুদ্বে মামলা করে।
সিএএবি সূত্রে জানা গেছে , প্রকৌশলী আছির উদ্দিনের বিরুদ্বে দুর্নীতির অভিযোগে সিএএবির প্রশাসন বিভাগের সাবকে পরিচালক ক্যাপ্টেন ইকরামউল্লাহ অব. ্ও নির্বাহি প্রকৌশলী সুভাশিষ বরুয়ার নেতৃত্বে দুই সদস্য বিশিষ্ট গঠিত তদন্ত কমিটি তাকে দোষী করে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে। এদিকে সিএএবির সদস্য ( প্রশাসন )- এর নেতৃত্বে আরেকটি তদন্ত কমিটিও প্রকৌশলী আছির উদ্দিনের বিরুদ্বে দুর্নীতির তদন্ত করে সত্যতা পায় এবং তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে তা চেয়ারম্যান বরাবর জমা দয়ে। কিন্ত এতো দনি পর্যন্ত প্রকৌশলী আছির উদ্দিন বহাল তবয়িতে ছলি , সএিএবরি প্রশাসন তাকে সাসপেন্ড পর্যন্ত করেনি ।
সূত্র জানায় , সিএএবির পরিচালক প্রশাসনের সাথে প্রকৌশলী আছির উদ্দিনের বিশেষ সম্পর্ক থাকায় তার বিরুদ্বে অদ্যাবধি কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। এদিকে প্রধান প্রকৌশলী গোস্বামির সাথেও আছির উদ্দিনের সম্পক কম নয় বলে জানা গেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ইন্টারন্যাশনালের মালিক সাহাবুদ্দিন জানান , দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী আছির উদ্দিনকে দুদক ৫/৭ বার ডেকে নিয়ে জিঞ্সাবাদ করছে,ে অবশষেে মামলাা করেছনে। তিনি আরো বলেন , আমার কাছে প্রকৌশলী আছির উদ্দিন ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে। এ ব্যাপারে আমি সিএএবির চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। দুই দফা তদন্তও হলো , কিন্ত তার বিরুদ্বে রহস্যজনক কারনে ব্যবস্থা নেয়া হলো না। দুদকেও আমি তার বিরুদ্বে সাক্ষ্য দিয়েছি। এর ফলে প্রধান প্রকৌশলী ও আছির উদ্দিন পরস্পর যোগসাজশে আমার একটি ঠিকাদারি কাজের ফাইনাল বিলের ১৫ লাখ টাকা আটকে দিয়েছে।
প্রকৌশলী আছির উদ্দিনের বিরুদ্বে অবৈধ পন্থায় পদোন্নতির অভিযোগও পাওয়া গেছে। তাকে উপসহকারি প্রকৌশলী পদ থেকে সহকারি প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেয়ার সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের আদেশ লংঘন করে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়াা হয়েছে বলেও সিএএবির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এরপর তাকে নির্বাহি প্রকৌশলী পদে পদায়ন করা হয়।
এরপর সিএএবির প্রশাসন বিভাগের একটি ভুয়া আদেশে তাকে গত ১১-৪-২০১৬ তারিখে মাত্র ৭ দিনের জন্য তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্ত এর আগেই বিদেশে ট্রেনিংয়ে থাকা তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজে যোগদান করেন। ওই ভুয়া আদশে স্বাক্ষর করেন সহকারি পরিচালক এএসএম মুস্তাফিজুর রহমান ,যার স্মারকনং-সিএএবি/প্র-১/৪-৩/২০১১/৭২৪৭ ,তারিখ-১১-৪-২০১৬।
সিএএবির প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে , ইএম বিভাগের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আ: মালেক যুক্তরাজ্যে ভ্রমনকালিন সময়ে গত ৩১-৩-২০১৬ তারিখ থেকে ৬-৪-২০১৬ তারিখ পর্যন্ত নির্বাহি প্রকৌশলী মিহির চাদ দেকে সিএএবির চেয়ারম্যানের এক আদেশে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্ত প্রকৌশলী আছির উদ্দিন এক ভুয়া আদেশে গত ১১-৪-২০১৬ তারিখ থেকে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দায়িত্ব দেয়া হয় বলে জাহির করেন- কিন্ত ১১-৪-২০১৬ তারিখের আগেই ভ্রমনে থাকা তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আ: মালেক দেশে ফিরে আসেন।
এ সব অভিযোগের ব্যাপারেইইতপিূরবে জানতে চাইলে প্রকৌশলী আছির উদ্দিন জানান , আমি কোন দুর্নীতি করিনি , দুদক আমার বিরুদ্বে মামলাও করেনি। উত্তরার বহুতল বাড়ির ব্যাপারে তিনি বলেন , বাড়িটি আমার মেয়ের।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।