বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:২৪ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
হঠাৎ ব্লাড প্রেশার কমে গেলে কী করবেন

ব্লাড প্রেশারকে বলা হয় নিরব ঘাতক। যখন সমস্যা গুরুতর হয়, তখন সবাই বুঝতে পারে। রক্তচাপ কমে যাওয়া, লো প্রেশার, লো ব্লাড প্রেশার কিংবা নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে অনেকেই চিন্তিত থাকেন।

রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলে হৃদপিন্ড, মস্তিষ্ক ও শরীরের অন্যান্য অংশে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। এতে করে মাথা ঘোরা, মাথা ঝিমঝিম করা, দূর্বলতা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ব্লাড প্রেশার মাপার নিয়ম

অধিকাংশ চিকিৎসকের মতে বাড়িতে ইলেকট্রনিক বিপি মেশিন অবশ্যই রাখা উচিত। এর কারণ হিসাবে তারা বলেছেন, প্রয়োজনে প্রতিদিন তিনবার ব্লাড প্রেশার মাপা উচিত এবং সেটা মাপতে হবে দুই হাতে। তবে বিপি দেখার কিছু নিয়ম আছে। কাফ এমন ভাবে জড়াতে হবে, যাতে তা প্রচণ্ড টাইট না হয় আবার ফাঁকও না থাকে। হাতের ভাঁজ থেকে এক আঙুল উপরে বাঁধতে হবে। আর টিউবটি থাকবে ভাঁজের সামনের দিকে।

ম্যানুয়ালি যখন রক্তচাপ পরীক্ষা করা হয়, তখন দুই রকম ভুল হতে পারে। ম্যানুয়াল এরর ও ইন্সট্রুমেন্টাল এরর। কিন্তু ইলেকট্রনিক মেশিনে ম্যানুয়াল এরর থাকে না। সারাদিনে বিপি কতটা ওঠা-নামা করছে, সেটা একবার দেখে ডাক্তারের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। তাই যারা ব্লাড প্রেশারের ওষুধ খান, তাদের অবশ্যই দিনে তিনবার বিপি চেক করা উচিত বাড়িতে।

ব্লাড প্রেশার কমে গেলে

মাথা ঘুরতে পারে, দুর্বল লাগে, চোখ ঝাপসা লাগতে পারে। আবার রক্তচাপ অতিরিক্ত কমে গেলে রোগী অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে। বেশি বয়সে বিপি স্বাভাবিক ভাবে বাড়ে, তাকে বলা হয় এসেনশিয়াল হাইপারটেনশন। বিপি যদি বড় বয়েসেও ছোটবেলার মতো নাইন্টি বাই সিক্সটি থেকে যায়, তা হলে কিন্তু ভীষণ মুশকিল।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত চাপ না থাকলে ব্রেনে, কিডনিতে বা হার্টের ক্যাপিলারির মধ্য দিয়ে রক্ত পৌঁছবে না। ফলে স্ট্রোকও হতে পারে। ‘কিলার’ কথাটা প্রেশার বাড়া বা কমা উভয় ক্ষেত্রেই খাটে। প্রেশার বেশি থাকলে যেমন মাথায় রক্তক্ষরণ হয়ে স্ট্রোক হতে পারে, তেমনই প্রেশার কমে গেলেও কিডনি, ব্রেন ড্যামেজ হবে। তাই বিপি বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া দুটোই খারাপ। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী খাবেন জেনে নিন।

একবার নয় বারবার খাবেন

একবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে দিনে কয়েকবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে খুব ক্ষুধা কখনোই লাগবে না আর অসুস্থতা বোধ হবে না। প্রয়োজনে দিনে ৬ বার খাওয়ার অভ্যাস করুন।

পরিমাণমত লবণ খাওয়া

রক্তচাপ কমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে লবণ খাবেন। লেবু ও লবণের শরবত পান করতে পারলে ভালো। এছাড়া প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত লবণ খাওয়া সবার উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে প্রতিদিন একজন মানুষের এক চা চামচ লবণ খাওয়া উচিত। তা হতে পারে ফল বা সবজির সাথে। লবণকে খাদ্য তালিকা থেকে একেবারে বাদ দিয়ে সুস্থ থাকা যাবে না।

তরল জাতীয় খাবার

প্রতিদিন অন্তত আট গ্লাস পানি পান করুন। তবে অতিরিক্ত পানি পানের প্রয়োজন নেই। পানি শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়। আখের রস, ডাবের পানি, বেলের শরবত বা মৌসুমি কোনো ফলের শরবত খেতে পারেন। যাদের লো প্রেশার তাদের জন্য বেদানার শরবত খুব কার্যকর।

ক্যাফেইন

এককাপ চা, কফি পান করেই ব্লাড প্রেসার বাড়াতে পারেন। অথবা এর পরিবর্তে কোলা বা ক্যাফেইনেটেড টি পান করেও অনুরুপ উপকার পেতে পারেন। গবেষণা অনুসারে, ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় রক্তচাপ বাড়াতে ভূমিকা রাখে। অনেক হাইপোটেনশন এপিসোডের কারণ হলো শারীরিক পানিশূন্যতা।

আমন্ড দুধ

সারা রাত ৬/৭ টা আমন্ড ভিজিয়ে রাখুন। সকালে উঠে পেস্ট করে এর সাথে গরম দুধ মিশিয়ে খেয়ে নিন। এই দুধ আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখবে। কোনো রকম স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা কোলেস্টরেল এই দুধে নেই। এজন্য নিশ্চিন্ত হয়ে খেতে পারেন।

তুলসি পাতা

তুলসি পাতার অনেক গুণ। তুলসি পাতায় আছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম। এই উপাদানগুলো রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে ৪/৬টি তুলসি পাতা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। এতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।