শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
সিভিল এভিয়েশন : ইএম বিভাগের দুই সিনিয়র উপসহকারি প্রকৌশলীর জেষ্ঠতা জালিয়াতি! ২টি শূণ্য পদে সহকারি প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ডিপিসি কমিটির বৈঠক সমাপ্ত

বিশেষ সংবাদদাতা : বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনে ইএম বিভাগের দুই সিনিয়র উপসহকারি প্রকৌশলী চাকরিতে জেষ্ঠতা জালিয়াতির অভিযোগ ওঠেছে। যোগদানের নথিপত্র যাচাই-বাছাই না করে কিভাবে সিনিয়রকে জুনিয়র করা হলো তা নিয়ে সিএএবিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কিন্ত সিএএবি কর্তৃপক্ষ এর কোন সমাধানে হস্তক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ। গত ২৭ নভেম্বরের ডিপিসি কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি এড়িয়ে গেছে ডিপিসি কমিটির কর্মাদক্ষরা। চুলচেরা আলোচনা হলেও দুই প্রকৌশলী প্রথম যোগদানপত্র এবং যোগদানপত্রের তারিখ নিয়ে টান দিলেই এর সুরাহা হতো এক মিনিটে। কিন্ত সিএএবির ডিপিসি কমিটি তা জিইয়ে রেখেছে বলেও অভিযোগ। কেন বিষয়টি দীর্ঘ ১৭ বছর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে তা রহস্যজনক। ফলে ২টি শূণ্য পদে সহকারি প্রকৌশলী পদে কাউকে পদোন্নতি না দিয়েই ডিপিসি কমিটির বৈঠক সমাপ্ত করা হয়।
সিএএবির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাহমুদ হাসান সেলিম গত ১৪-০৬-২০০১ খ্রি: তারিখে উপসহকারি প্রকৌশলী ইএম পদে তার অধীনস্থ প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে যোগদান করেন। প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে তা যথাযথ জমা দেয়া হয়। যার ডায়েরী নং-২৬৩৭, তারিখ-১৪-০৬-২০০১ খ্রি:।
অপরদিকে শহিদুল ইসলাম মন্ডল গত ১৮-০৬-২০০১ খ্রি: তারিখে উপসহকারি প্রকৌশলী ইএম পদে প্রথম চাকরিতে যোগদান করেন। প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরেও তা যথাযথ জমা নেয়া হয়। যার ডায়েরীনং-২৬৬৪, তারিখ-১৮-০৬-২০০১ খ্রি:।
এই দুই প্রকৌশলীর যোগদানপত্র থেকে জানা যায় প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান সেলিম ৪ দিনের সিনিয়র আর শহিদুল ইসলাম মন্ডল ৪ দিনের জুনিয়র। কিন্ত সিএএবি কর্তৃপক্ষ উল্টো শহিদুল ইসলাম মন্ডলকে ৪ দিনের সিনিয়র আর মাহমুদ হাসান সেলিমকে ৪ দিনের জুনিয়র হিসেবে জেষ্ঠতার তালিকা প্রনয়ণ করেছে। প্রশ্ন ওঠেছে- এটা কি জেষ্ঠতা জালিয়াতি নাকি অন্য কিছু।
গত ২৭-১১-২০১৮ খ্রি: ডিপিসির কমিটির মিটিংয়েও এই জেষ্ঠতার তালিকা প্রনয়ণে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই মিটিং সমাপ্ত করা হয়েছে। এই ডিপিসি কমিটির সদস্যদের বৈঠকে আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল : ‘২টি সহকারি প্রকৌশলীর শূন্য পদে পদোন্নতি এবং ১টি সিনিয়র এ্যারোড্রাম কর্মকর্তার শূন্য পদে পদোন্নতি’।
উক্ত ডিপিসি কমিটির সভায় জেষ্ঠতার তালিকা মোতাবেক ৬ জন সিনিয়র উপসহকারির নামের তালিকা উপস্থাপন করা হয়। এই তালিকাতেও ২ নম্বর ক্রমিকে শহিদুল ইসলাম মন্ডল, ১০ গ্রেডে যোদানের তারিখ ১৮-০৬-২০০১ খ্রি: এবং ৩ নম্বর ক্রমিকে মাহমুদ হাসান সেলিম, ১০ম গ্রেডে যোগদানের তারিখ-১৪-০৬-২০০১ খ্রি: । কিন্ত মন্তব্যের কলামে দৃষ্টিপাত করা হয়েছে- প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-২, ঢাকার এ.টি৩১/১২( নতুন),১২৬/০৯(পুরাতন) মামলার রায় মোতাবেক।
সহকারি প্রকৌশলীর ২টি শূন্য পদে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত ছাড়াবই ডিপিসির কমিটির বৈঠক সমাপ্ত করা হয়।
সিএএবির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চৌধুরি স্বাক্ষরিত গত ১১-০৭-২০০১ খ্রি: জেষ্ঠতার তালিকায় উপসহকারি প্রকৌশলী (ইএম) মাহমুদ হাসান সেলিমের নাম ২ নম্বর ক্রমিকে ১ম যোগদানের তারিখ: ১৪-০৬০২০০১ খ্রি: এবং উপসহকারি প্রকৌশলী (ইএম) শহিদুল ইসলাম মন্ডলের ১ম যোগদানের তারিখ: ১৮-০৬-২০০১ খ্রি:, নাম ৩ নম্বর ক্রমিকে তালিকাভুক্তকরণ করা হয়েছে। এই তালিকায় মন্ডল সেলিমের ৪ দিনের জুনিয়র।
আবার সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) আবুল মনসুর মো. ফয়েজ উল্লাহ স্বাক্ষরিত গত ০৫-১১-২০০৩ খ্রি: এর জেষ্ঠতার তালিকায় উপসহকারি প্রকৌশলী ইএম মাহমুদ হাসান সেলিমকে উপসহকারি প্রকৌশলী ইএম শহিদুল ইসলামের জুনিয়র করে জেষ্ঠতার তালিকা প্রনয়ণ করা হয়েছে। এই জেষ্ঠতার তালিকায় প্রকৌশলী ইএম মাহমুদ হাসান সেলিমের ১ম যোগদানের তারিখ: ১৬-০৬-২০০১ খ্রি: এবং উপসহকারি প্রকৌশলী ইএম শহিদুল ইসলাম মন্ডলের ১ম যোগদানের তারিখ: ১৮-০৬-২০০১ খ্রি- এ ক্ষেত্রেও প্রকৌশলী সেলিম ২ দিনের সিনিয়র।
এ ব্যাপারে কথা হয় সিনিয়র উপসহকারি প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান সেলিমের সাথে। তিনি জানান, আমার জেষ্ঠতা জালিয়াতি করা হয়েছে।্ তিনি আরো জানান, আমি চাকরিতে যোগদান করেছি গত ১৪-০৬-২০০১ খ্রি: তারিখে কিন্ত জেষ্ঠতার তালিকায় সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) আবুল মনসুর মো. ফয়েজ উল্লাহ স্যার স্বাক্ষরিত আমার চাকরিতে ১ম যোগদানের তারিখ ১৬-০৬-২০০১ খ্রি: করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও তো আমি মন্ডলের চেয়ে ২ দিনের সিনিয়র। মেধা তালিকাতেও আমি প্রথম হয়েছি।
এ ব্যাপারে জানতে সিনিয়র উপসহকারি প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম মন্ডলের সেলফোনে কল করলে তিনি জানান, মেধা তালিকা অনুসারে সিনিয়র- জুনিয়র নির্ধারণ করা হয়েছে। সেলিম মেধা তালিকায় প্রথম হওয়ার দাবি করলেও তা ভুয়া। তিনি আরো জানান, চাকরিতে শিক্ষানবিশকালে সেলিম প্রায় ৪ মাস অনুপস্থিত ছিলেন। পরে আবেদনের পর বিনা বেতনে তা সমন্বয় করা হয়। তার জুনিয়র হওয়ার এটাও একটা কারন।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।