শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১২:২৬ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
সৌদি প্রবাসীদের বিক্ষোভ : উস্কানিদাতা ভিপি নুরের সংগঠন!

ডেস্ক রিপোর্ট : ফ্লাইটের টিকিট না পেয়ে বিক্ষুব্ধ সৌদিপ্রবাসীদের সড়ক অবরোধ ও মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের নেপথ্যে তৃতীয় পক্ষের উসকানি ছিল বলে আশঙ্কা করছে সরকার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ ধরনের ইঙ্গিত দেন। সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের ফেসবুক বার্তায়ও এমন ইঙ্গিত রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘রেমিট্যান্স-যোদ্ধাদের পক্ষে যিনি দরখাস্ত দিয়েছেন তিনি কিন্তু প্রবাসী না। তিনি এ দেশের লোক। রাজনীতি করেন। তিনি এটা দিয়েছেন। আমি তাই প্রবাসীদের বলব, কোনো তৃতীয় পক্ষের প্ররোচনায় এ ধরনের কাজ করলে আপনাদেরই ক্ষতি হবে।’

অন্যদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে সৌদিপ্রবাসীদের সমস্যা নিয়ে অগ্রগতির খবর জানানোর পাশাপাশি ‘ছাত্র অধিকার আন্দোলনের’ নাম উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘সৌদি আরবে চার দিন বর্ধিত ছুটি ছিল, আজকেই খুলেছে। 

সৌদি আরবের যারা খোঁজ রাখেন তাদের এটা জানা উচিত (কোনো ‘ছাত্র অধিকার আন্দোলন’ এটা জানার কথা নয়)।’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরো লিখেছেন, ‘সৌদি আরব সরকার আমাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে নিচের সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে, ১. আকামার মেয়াদ আরবি সফর মাসের শেষ দিন পর্যন্ত (মানে আজ থেকে আরো ২৪ দিন) বর্ধিত করা হয়েছে। ২. বাংলাদেশ বিমানকে রিয়াদ এবং জেদ্দায় সপ্তাহে মোট চারটি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ৩. ঢাকাস্থ সৌদি আরব দূতাবাসের ভিসা অফিস রবিবার থেকে খোলা থাকবে, যেখানে কভিড-১৯ সংক্রান্ত নতুন নিয়মাবলি মেনে কনস্যুলার সেবা প্রদান করা হবে।’

কয়েক মাস আগে ভিয়েতনামে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে আটকে পড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবস্থান কর্মসূচি, দূতাবাসে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ দূতাবাস আক্রমণ করার হুমকির সঙ্গে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও তাঁর সংগঠন বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের উসকানির অভিযোগ করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তবে সাবেক ভিপি নুর গতকাল রাতে বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগেও বাইরের ইন্ধনের কথা বলেছিলেন। এটি ভিত্তিহীন।’

দালালচক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে প্রবাসীরা যখন ভিয়েতনামে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়েছিলেন, তখনও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন যে এটি ভিপি নুরের বা প্রবাসী অধিকার পরিষদের উসকানিতে আন্দোলন। জানতে চাইলে নুর বলেন, ‘আমার যে সংগঠন আছে প্রবাসী অধিকার পরিষদ, এটি এখনো কোনো আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি। বিভিন্ন সময় উদ্বেগ জানিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রবাসীদের পক্ষে আবেদন নিয়ে যাওয়া ব্যক্তি প্রবাসী অধিকার পরিষদ বা ছাত্র অধিকার পরিষদের কেউ কি না জানতে চাইলে নুর বলেন, ‘না, ওখানে আমাদের কেউ ছিল না ওভাবে। তবে এখন বাংলাদেশের বাস্তবতা হচ্ছে যে কোনো সমস্যা, যেটা গ্রাম থেকে শহরে বা দেশ থেকে বিদেশে, সবাই মনে করে যে ভিপি নুররা কথা বললে এটা সরকার আমলে নেয় বা সেটার একটা সমাধান হয়। সে কারণে সবাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সৌদিপ্রবাসীরাও আমার, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। আমি তাদের বলেছিলাম, আপনারা সরকারের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমরা সব বিষয়ে কথা বললে এটা আমাদের জন্য সমস্যা।’

তিনি বলেন, ‘আমি একেবারে ভদ্রভাবে তাদের ওই নির্দেশনা দিয়েছি। এখানে আন্দোলন করা, উসকানি দেওয়ায় আমার লাভটা কী? আন্দোলন করতে হলে আমি সরাসরি সরকার পতন আন্দোলন করব।’

নুর বলেন, ‘আমরাই এখন একরকম সমস্যার মধ্যে, নানামুখী চাপে আছি। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা প্রবাসীদের নিয়ে কখন আন্দোলন করব?’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ না থাকার কারণে আমরা যখন তাদের সমালোচনা করি, কথা বলি; এ কারণে তারা চরম আতঙ্কে থাকে। এ জন্য যখন যেখানে যা কিছু হয়, আগে বলত বিএনপি-জামায়াত করেছে; এখন বলে ভিপি নুর, প্রবাসী অধিকার পরিষদ, ছাত্র অধিকার পরিষদ অমুক-তমুকের উসকানিতে করছে।’

নুর বলেন, ‘আমরা এত শক্তিশালী হলে তো পুলিশ, ছাত্রলীগের মার খেতাম না। আমরাই মারতাম। আমাদের সেই শক্তি নেই। তবে আমাদের জনসমর্থন আছে। মানুষ আমাদের কথা বিশ্বাস করে।’
সূত্র- কালেরকণ্ঠ

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।