নিউজ ডেক্স : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতেই চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে
অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। সোমবার সকালে তাঁর শ্বাসকষ্ট হওয়ায় সিসিইউতে নেওয়া হয়। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার সুপারিশ করেছে তাঁর জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এসব তথ্য জানিয়েছেন। বোর্ডের চিকিৎসকরা গত মংগলবার ৪ মে, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ শেষে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর পরামর্শ দেন।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে ইতিমধ্রেই বিএনপি মহাসচিব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করেছেন, আইনমন্ত্রী ও এটর্নি জেনারেল আইনী ভাষায় পরামর্শ দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ইতিবাচক কথা বলেছেন। সব মিলে সরকার কিছুটা নমনীয়, সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় বিএনপি, তবে সব কিছুই হবে দ্রুতগতিতে। সিংগাপুরে না হলে খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে চিকিৎসা করানো হতে পারে।
খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে গতকাল তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ বলেন, ম্যাডামের অবস্থা ভালো আছে আলহামদুলিল্লাহ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও গত ৪ মে বিকালে বলেছেন, নেত্রীর অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তাঁর অসুস্থতার খবরে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন।
সূত্র জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। ফুসফুসের পানি কমেছে। তবে অক্সিজেন সাপোর্ট এখনো চলছে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
দলীয় সূত্র জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার সিঙ্গাপুর নিতে চাচ্ছে। এ ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়ার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আবেদন করা হয়নি। বিদেশ যেতে হলে তাঁকে আদালতের অনুমতি নিতে হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এ ব্যাপারে বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। তবে তাঁর বিরুদ্ধে মামলার কারণেই তাঁকে আদালতে আসতে হতে পারে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে সরকার বিবেচনা করবে। আইন অনুযায়ী যদি প্রয়োজন হয় তবে আদালতে আসবে সরকার। কারণ এটা সরকারের আদেশ। বাতিল করতে হলে সরকারকেই করতে হবে।
এর আগে ১০ এপ্রিল করোনাভাইরাসের নমুনা জমা দেওয়া হলে ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর ২৫ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় নমুনা জমা দেওয়ার পর আবারও ফল পজিটিভ আসে। গত মঙ্গলবার রাতে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে ভর্তি করা হয়।