শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১০:১৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
সিভিল এভিয়েশন : অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে এবার আন্ডার মেট্রিক পাস ক্লিনার/ড্রাইভার হাইকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির ‘১ নম্বর’ তালিকা : স্টেনোটাইপিস্ট,ক্যাশিয়ার,জুনিয়র অডিটর পদ বিলুপ্ত : গ্রেড পরিবর্তন করে ১৪তম গ্রেডের কর্মচারিদের ১৩তম গ্রেডে পদাবনতি: সচিব বরাবর আবেদন

বিশেষ সংবাদদাতা : সিভিল এভিয়েশনের অনিয়ম- দুর্নীতি পিছু ছাড়ছে না, অনিয়ম-দুর্নীতিই যেন এখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতির দায়ে ১ প্র্রকৌশলীর জেল, ৬ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন, দুর্নীতির দায়ে প্রধান প্রকৌশলী গোস্বামিকে সরিয়ে দেয়া, এখানে পদ বিলুপ্ত, জুনিয়রকে সিনিয়র আর সিনিয়রকে জুনিয়র করা হচ্ছে। এ সব ব্যাপারে আবেদন-নিবেদন করেও কোন লাভ হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে সংস্থার প্রধান প্রকৌশলীর পদও বাদ যায়নি। কিছুদিন আগে নিরাপত্তা শাখার ডিএসওদের ওপরে সহকারি নিরাপত্তা অফিসার পদে ১২তম গ্রেড দিয়ে ডিএসওদের ৯তম গ্রেডেই রাখা হয়েছে। যাদেরকে (নিরাপত্তা সুপার) এ পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে- তারা নিয়মানুযায়ী ডিএসও পদে পদোন্নতি পাবার কথা।
এবার আবার মোটর ক্লিানার/ ড্রাইভারসহ নি¤œ পদে কর্মরত কর্মচারিদের সার্ভিসবুক চেয়ে নিয়ে বিশ্লেষণ করে ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ পদে পদোন্নতি দেয়ার জন্য ৪১ জনের তালিকা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্টেনোটাইপিস্ট, ক্যাশিয়ার, জুনিয়র অডিটর পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে। ১৪তম গ্রেডে কর্মরতদের ১৩তম গ্রেডে সমন্বয় করে পদাবনতি করা হয়েছে।উচ্চমান সহকারিদের জুনিয়র করে তালিকা প্রনয়ণ করা হয়েছে, এদের তালিকা ক্রকিম নম্বর ৮০-১০০। অথচ নিয়মানুযায়ী স্টেনোগ্রাফার পদ থেকেই পদোন্নতি পেয়ে হবে ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ আর স্টেনো টাইপিস্টরা হবে সহকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তা। কিন্ত পদোন্নতির তালিকায় এ সবের বালাই নেই।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির তালিকায় যাকে ১ নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে সেই আব্দুল হাই একজন মোটর পরিবহন ক্লিনার পদে ০৬-০৪- ১৯৮১ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত। ২৭-১১-১৯৮৬ সালে তাকে মোটর পরিবহন ফিটার ড্রাইভার করা হয়। ২৫-০৫-২০১০ সালে তাকে মোটর পরিবহন সিডিউলার করা হয়।২৯-০৩-২০১৫ সালে তাকে মোটর পরিবহন সুপারভাইজার/মোটর পরিবহন অধিক্ষক করা হয়। এ পদ থেকে তাকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান। তালিকায় দেখা যায়-‘ মো,. আব্দুল হাই, শিক্ষাগত যোগ্যতা ১০ শ্রেণী, নিজ জেলা রংপুর, তিনি বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত এবং সংলগ্নি সৈয়দপুর বিমানবন্দর।
অথচ এ তালিকয়ই এমএসএস/এমএসসি, এমবিএ, এমএ, বিএ পাসধারীরা রয়েছেন- তাদেরকে ১ নম্বর বা তার পরের ক্রমিকে তালিকাভুক্ত না করে একজন আন্ডার মেট্রিক পাস মোটর ক্লিনার মো. আব্দুল হাইকেই ১ নম্বর তালিকা করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদান্নতির দেয়ার প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করা হয়েছে।
প্রশাসনিক পদে পদোন্নতির তালিকায় ৪১ জনর মধ্যে ২১ নম্বর ক্রমিকে আতিকুর রহমান এসএসসি পাস এবং ১৬ নম্বর ক্রমিকে এরশাদুল করিম এইচএসসি পাস, নিজ জেলা বি-বড়িয়া। ৪১ নম্বর ক্রমিকে কামাল হোসেন চেয়ারম্যান সচিবালয়ে কর্মরত এইচএসসি পাস।
৪২ থেকে ১০৪ নম্বর ক্রমিকধারীদের প্রশাসনিক পদে পদোন্নতির তালিকাভুক্ত করা হয়নি।
পদোন্নতি বনঞিতরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে গ্রেড পরিবর্তন, পদ বিলুপ্ত, জুনিয়রকে সিনিয়র, সিনিয়রকে জুনিয়র করে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে পদোন্নতি দেয়ার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। এতে করে আমরা পদোন্নতি বন্ঞিত হচ্ছি, আমরা সচিব বরাবর আবেদন করেছি, উচ্চ আদালতেও যাব ন্যায় বিচারের জন্য।
এ নিয়ে ১৯ জন কর্মচারি ন্যায় বিচারের জন্য বিমান সচিব বরাবর আবেদন করেছেন। আবেদনটি গ্রহণ করে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।
কর্মচারিরা আরো জানান, পদোন্নতির ক্ষেত্রে ১৩ গ্রেডধারিদের পদোন্নতি না দিয়ে জুনিয়রদের ১৪তম গ্রেড দিয়ে পদোন্নতি দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে- এতে তারা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা অমানবিক এবং চাকরি জীবনে হতাশা। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছে স্টেনোটাইপিস্ট, হিসাব সহকারি, ক্যাশিয়ার, সহকারি সমন্বয় কর্মকর্তা, তারা এখন সবচেয়ে জুনিয়র, যদিও স্টেনোটাইপিস্টদের উচ্চমান সহকারি করা হয়েছে। তালিকা করা হয়েছে ৮০ থেকে ১০০। এতে করে এদের ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ পদে পদোন্নতি পেতে আরও বহু বছর অপেক্ষায় থাকতে হবে। কিন্ত এবার জুনিয়ররাই ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ পদ পেয়ে যাচ্ছে। এটা চরম লজ্জা ও ঘৃণার ব্যাপার। চোখের সামনে জুনিয়ররা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে যাচ্ছে, তাদের কমান্ড মানতে হবে, চাকরি জীবনে এর চেয়ে লজ্জার কি থাকতে পারে?

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।