শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
ইসি সরকারের আজ্ঞাবহ : এনডিআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে ড. কামাল

একুশে বার্তা ডেক্স : ‘কে এম নুরুল হুদা নির্বাচন কমিশন এখনো সরকারের আদেশ-নির্দেশ পালন করছে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না’ বলে এনডিআই প্রতিনিধিদের অভিযোগ করলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পরও সরকারের অজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করছে। সরকারও নির্বাচন কমিশনকে নানা আদেশ নির্দেশ দিচ্ছে। ইসি কার্যত সেগুলোই বাস্তবায়ন করছে। অথচ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের এমনটা করার কথা নয়। গতকাল রাজধানীর গুলশানের ‘হোটেল আমারি’ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাটির সামনে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি, নির্বাচনী অবস্থা, প্রশাসনের চালচিত্র, পুলিশ বাহিনীর ভুমিকা, গায়েবী মামলা, প্রার্থী ও ভোটারদের ভীতি আতঙ্ক এবং জনগণের আখাঙ্কার চিত্র তুলে ধরেন। দেড় ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে একই সঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে প্রতিশ্রুতির বিষয়টিও জানান। তিনি বলেন, নির্বাচনী পরিবেশসহ সামগ্রিক বিষয়ে এনডিআইয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে জানতে চেয়েছেন। আমরা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেছি। তারা যা চেয়েছে সেগুলো দিয়েছি।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে এক মাস নির্বাচন পেছানোর দাবি থাকলেও নির্বাচন কমিশন তফসিল মাত্র ৭ দিন পিছিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের কথাবার্তা ও কর্মকান্ড সরকারের আজ্ঞাবহ বলে প্রমানিত হচ্ছে। অথচ সংবিধান অনুযায়ী একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ থাকার কথা নয়। তাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ রেফারিং। তারা সেটা দিকে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করছে না। সরকারের লোকজন ইসিতে গিয়ে নির্বাচন এক ঘন্টাও না পেছানোর নির্দেশনা দেয়ার পর ইসি তাই করে। নির্বাচনের তারিখ পেছানো থেকে বিরত থাকে। সরকারও নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন না পেছাতে আদেশ দিতে পারেন না। অথচ তারা নির্বাচন কমিশনকে আদেশ নির্দেশ দিচ্ছেন। প্রশাসন সাজিয়ে দিচ্ছেন, এটাতো কাম্য নয়। সংবিধানের অন্যতম এই প্রণেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের তফসিল ঘোষনার পর আর ধরপাকড় করা হবে না। সেটা কার্যকর হয়নি। পাইকারি হারে এখনো গ্রেফতার চলছে। গায়েবি মামলার তালিকা চেয়েছিল, দেয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশী হয়রানী বন্ধ হয়নি। এমনকি যারা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। কেউ কেউ জামিন নিতে গিয়েও গ্রেফতার হচ্ছেন। সব মিলিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে সমতল ভূমির প্রয়োজন তা একেবারেই নেই। বৈঠকে এনডিআইয়ের সঙ্গে নির্বাচনী পরিবেশসহ সামগ্রিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে এনডিআইয়ের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ও এশিয়া বিভাগের পরিচালক পিটার এম মানিকাস, প্রতিষ্ঠানের বোর্ড মেম্বার ও সাউথ এশিয়ার সাবেক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিক ইন্ডার ফার্দ, ম্যানেজার ফর গ্লোবাল ইলেকশন মাইকেল ম্যাগনালটি, এনডিআইয়ের এশিয়া রিজিওনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার এডাম নেলসন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ফারানাজ ইস্পাহানী উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বৈঠকে ড.রেজা কিবরিয়াসহ গণফোরামের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।