শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
এখন থেকে কারাবন্দীরা মোবাইলে কথা বলতে পারবেন’

ডেক্স প্রতিবেদন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি বলেছেন, কারাবন্দীরা যাতে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন মনে না করেন সে কারণে মোবাইল ফোনে কথা বলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়াও কারাগারের ভেতরে অবৈধ কোন জিনিস যাতে ঢুকতে না পারে সে জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এজন্য কারারক্ষীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ ও গেইটে স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আমি অস্বীকার করি না এর ফাঁক-ফোকর দিয়ে দুই একটি জিনিস ঢুকছে না।

তবে আমরা এ ব্যাপারে সর্তক রয়েছি। আইজি প্রিজন সে ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রী আরো বলেন, দেশের প্রত্যেকটি কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলা হবে। কারাবন্দীদের মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলাসহ বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে।

বন্দীরা যাতে ভবিষ্যতে কর্ম জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তাদেরকে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ২৭ ডিসেম্বর  বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দীদের সংশোধন ও পুর্নবাসনের জন্য নবনির্র্মিত গার্মেন্টস ইন্ড্রাস্ট্রি এবং জামদানী উৎপাদন কেন্দ্র “রিজিলিয়ান্স” উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেক কারাবন্দি তাদের পরিবার পরিজনের সঙ্গে কথা বলতে চায়। সেক্ষেত্রে কারাগারে কঠোর নিয়ম মেনে নতুন করে মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ দেয়া হবে। এমনকি প্রয়োজনে কথোপকথনের ভয়েস রেকর্ড সংরিক্ষত রাখা হবে।

আইজি প্রিজন সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ মেয়াদী বন্দীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হবে এবং স্বল্প মেয়াদী বন্দীদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে এই কাজে লাগানো হবে। যাতে তারা কারাগার থেকে বের হয়ে গিয়ে ওই কাজ করে পরবর্তী জীবন যাপন করতে পারে।

তিনি বলেন, পরিবেশ অনুযায়ী বন্দীদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। যে এলাকায় যে ধরণের কাজ হচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাতে বন্দিরা বাহিরে বের হয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।

তিনি বলেন, জেলা খানায় বন্দিদের উৎপাদিত পণ্য প্রসানের জন্য এবারে আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলায় একটি প্যাভিরিয়ন করা নেয়া হয়েছে। এতে করে এই পন্যে চাহিদা বাড়াবে। তিনি বলেন, বন্দিদের উৎপাদিত পন্যে লাভের ৫০ শতাংশ বন্দিকে দেয়া হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক, সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ, আইজি প্রিজন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া ও পুলিশ সুপার মঈনুল হক সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পরে মন্ত্রী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষ উদ্বোধন করে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। পরে তিনি ফতুল্লার পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগরীতে ফায়ার সার্ভিস ও এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের একটি ফায়ার স্টেশন উদ্বোধন করেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান, মহাকারাপরিদর্শক আইজি প্রিজনের উদ্দ্যোগে সমাজ সেবা অধিদফতরের সহায়তায় ৫৪টি বিদেশী মেশিন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ কারা গার্মেন্টস ইন্ড্রাস্ট্রিজ যাত্রা শুরু হয়েছে। এটি একটি র্পুণাঙ্গ গার্মেন্টস কারখানা। পর্যায়ক্রমে এখানে তিনশ মেশিন স্থাপন করা হবে। এই কারখানায় কাটিং, প্রিন্টিং, আয়রনসহ সব সেকশনই রয়েছে।

প্রতি শিফটে ১৫০ জন করে বন্দি কাজ করা সুযোগ পাবে। তিনি বলেন, এই কারখানায় উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করা পর লাভের ৫০ শতাংশ টাকা বন্দি কারিগররা পাবে। গার্মেন্টস কারখারনার পাশপাশি জেলাখনায় ১০টি জামদানী তাতঁ শিল্প স্থাপন করেছে। প্রতিটি তাতে দুইজন করে ২০ জন এবং তাদের সহকারি আরো ২০ জন কাজের সুযোগ পাবে। জামদানী কারখানায়ও দুই শিফলে মোট ৮০ জন বন্দি কাজ করতে পারবে। এছাড়া জেল খানার ভেতরে বিছানার চাদর তৈরি, চুমকি কাজ, ব্লক, বাটিক, মোমবাতি বানানো, টিসু বক্স বানানো, হ্যান্ডিক্রাফট কাজ চলছে। সব মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারগারে ৪৫০ জন বন্দি বা হাজতির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।