বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
ডেটলাইন ৩০ জানুয়ারী : ভোটারদের প্রশ্ন টাঙ্গাইল পৌর নির্বাচন সুষ্ঠ হবে তো : মেয়র পদে আ’লীগ-বিএনপি প্রার্থী মুখোমুখি : ৩৪ কাউন্সিলর প্রার্থী মামলার আসামী

একুশে বার্তা রিপোর্ট : ডেটলাইন ৩০ জানুয়ারি, টাঙ্গাইল পৌরসভা নির্বাচন। মেয়র পদে আ’লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর ইমেজ সমান সমান বলে ভোটাররা জানান। বিএনপি প্রার্থী সানু মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানির নাতি এবং বারবার নির্বাচিত মেয়র মরহুম শামছুল হকের ছেলে। অন্যদিকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী আলমগীর ক্লিন ইমেজের রাজনীতিবিদ। তাই সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে বিএনপির ভোট বিপ্লব হতে পারে বলে ভোটাররা মনে করছেন। দুই মেয়র প্রার্থীই মুখোমুখি। তবে বিএনপির মেয়র প্রার্থী  নির্বাচনী সভায় হামলার অভিযোগ করা হয়েছে। ভোটারদের প্রশ্ন নির্বাচন সুষ্টু হবে তো ? এ দিকে এ পৌর নির্বাচনে ৩৪ কাউন্সিলর প্রার্থী মামলার আসামি বলে জানা যায়।

  প্রচার- প্রচারণার শেষ মুহুর্তে ,  তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা আটঘাট বেঁধে নানা কৌশলে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটারদের মন জয় করতে চেষ্টা করছেন।

সমান তালে চলছে মিটিং-মিছিল ও পথসভা। নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। পৌর সভার মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা পাল্টাপাল্টি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করছেন। মেয়র পদে আ’লীগ প্রার্থীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রচারণায় বাঁধা ও হামলার অভিযোগও করা রয়েছে।

টাঙ্গাইল পৌরসভা ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এবারের পৌরসভা নির্বাচনে ৩ জন মেয়র পদপ্রার্থী রয়েছেন। তারা হচ্ছেন- আ’লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী মাহমুদুল হক সানু ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মো. আব্দুল কাদের।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে আ’লীগ সমর্থিতরা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষাসহ নতুন নতুন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি অত্যাধুনিক নাগরিকসেবা সম্পন্ন ডিজিটাল পৌরসভা গঠনের অঙ্গিকার করছেন।

বিএনপি সহ অন্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা পৌরসভার পানীয় জল, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও রাস্তাঘাটের উন্নয়ন সহ দুর্নীতিমুক্ত আধুনিক ও জবাবদিহিমূলক পৌরসভা গঠনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

সরেজমিনে জানাগেছে, টাঙ্গাইল পৌরসভায় মূলত: আ’লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। নৌকার প্রার্থী এসএম সিরাজুল হক আলমগীর দলের কাছে একজন পরীক্ষিত সৈনিক। তিনি শহর আওয়ামীলীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি। অনেক আগেই পৌরসভায় তার মনোনয়ন পাওয়ার কথা থাকলেও এবার পেয়েছেন। শহরবাসীর কাছে একজন স্বজ্জন, উচ্চ শিক্ষিত, নিরহঙ্কার ও সাদা মনের মানুষ হিসেবে তার সুনাম রয়েছে।

মেয়র পদে নির্বাচিত হলে পৌরসভার নিরালা মোড়ে অধুনালুপ্ত ঐতিহ্যবাহী ঘ্যাগের দালানের স্থানে অত্যাধুনিক ফোয়ারা ও আকুরটাকুর পাড়ায় শিশুপার্ক নির্মাণ তার প্রতিশ্রুতির মধ্যে অন্যতম।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী এসএম সিরাজুল হক আলমগীর একটি নিউজ পোর্টালকে  জানান, ১৮৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত টাঙ্গাইল পৌরসভার আশানুরূপ উন্নয়ন ঘটেনি। জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের কারণে পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডে নৌকার যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তাতে আগামি ৩০ জানুয়ারি ভোটাররা তাকে নির্বাচিত করবেন।

তিনি নির্বাচিত হতে পারলে টাঙ্গাইল পৌরবাসীর কল্যাণ এবং শান্তির জন্য সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদকমুক্ত আলোকিত ও পরিকল্পিত পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করবেন।

অন্যদিকে, ধানের শীষের প্রার্থী মাহমুদুল হক সানু টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সহ- সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সদস্য,  মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি ।

দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা পৌর পিতার পদটি দখলে নিতে একতাবদ্ধ হয়ে কোমর বেঁধে তার পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমেছে।

বিএনপির প্রার্থী মাহমুদুল হক সানু জানান, নির্বাচন শুরু হওয়ার পর থেকে আওয়ামীলীগের কর্মী-সমর্থকরা তার প্রচার- প্রচারণায় বাঁধা দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড ও সাকরাইলে তার নির্বাচনী সভায় হামলা করেছে।

তিনি জানান, তার বাবা শামছুল হক দীর্ঘদিন পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে পৌরবাসীর সেবা করেছেন, উন্নয়ন করেছেন। তার বাবার উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তা এবং তার নানা মওলানা ভাসানীর অবদান নির্বাচনে তার সহায়ক। ভোট কারচুপির আশঙ্কা করে তিনি জানান, দলীয় কর্মী-সমর্থক ও বিএনপি ঘরণার ভোটাররা যদি কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে এবং কোন প্রকার কারচুপি করা না হয় তাহলে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন।

তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল পৌরসভা ইতোপূর্বে একটি সিন্ডিকেটভুক্ত থেকেছে। তিনি নির্বাচিত হলে টাঙ্গাইল পৌরসভার সাধারণ জনগনের জন্য উন্মুক্ত করে দিবেন। কোন প্রকার সিন্ডিকেট তিনি গড়ে উঠতে দিবেন না।

টাঙ্গালের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার এইচএম কামরুল হাসান জানান, আগামি ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় টাঙ্গাইল সদর সহ জেলার পাঁচটি পৌরসভায় ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ৩০ জানুয়ারি নির্বাচন সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডে ৩৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ১০০ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার মোট ভোটার এক লাখ ২৪ হাজার ৪২৫ জন। এর মধ্যে ৬০ হাজার ৩৩৪ জন পুরুষ ও ৬৪ হাজার ৯১ জন নারী।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।