রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
ঢাকা কাস্টমস হাউজের কুরিয়ার শুল্কায়নে পাচারকারিদের পোয়াবারো : এসি ম্যানেজ, গেট কন্টাক্ট, বন্ড সুবিধায় ফেবিক্স পাচার, সেসালের নামে বস্তা ভরে পন্য পাচার ,ভ্যাট রাজস্ব ফাকি, পাচওয়ার্ড, বিল অব এর্ন্ট্রি জালিয়াতি

বিশেষ সংবাদদাতা : ঢাকা কাস্টমস হাউজে কুরিয়ার শুল্কায়নে আবার পাচারকারিদের পোয়াবারো শুরু হয়েছে। কুরিয়ারে নতুন সহকারি কমিশনার (এসির) আগমনে পাচাকারিরা বেজায় খুশি। সংঘবদ্ধ পাচারকারিরা মিলাদ পড়িয়ে এসি ম্যানেজে গেট কন্টাক্টে পণ্য পাচারে মহড়া দিচ্ছে। আওয়ামীলীগের এক নেতার প্রতিষ্ঠানের পন্য পাচার করার সময় ঘটনা উদঘাটিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে, ৫ পাচারকারি গ্রেফতার হয়েছে, জেলে খেটে জামিনে এসে আবার পন্য পাচারে মহড়া দিচ্ছে। ওরা আবার ৬ কাস্টমস কর্মকর্তা মারধরের ঘটনারও নায়ক। ওই মামলাও ওরা অভিযুক্ত চার্জশীটভুক্ত হয়ে বিচারের মখোমুখি।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কুরিয়ার শুল্কায়নে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে শৃংখলা ফিরে এসেছিল, ধস নামা রাজস্ব আদায়ের মাত্রা প্রতিদিন কোটি টাকা ছাড়িয়েছিল। এসি রায়হানুজ্জামান থাকা পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত ছিল। কিন্ত নতুন এসি সাইদুল ইসলাম কুরিয়ারে যোগদানের পর কুরিয়ার শুল্কায়নে রাজস্ব আদায়ে আবার ধস নেমেছে। এসি ম্যানেজ, গেট কন্টাক্ট, পাচওয়ার্ড জালিয়াতি, বিল অব এন্ট্রি জালিয়াতি, সেসালের বস্তায় পন্য পাচার, বন্ড সুবিধায় ফেবিক্স পাচার তথা পাচাকারিদের সাথে এসির গোপন আতাতে কুরিয়ার শুল্কায়ন দিয়ে দেদারচ্ছে পন্য পাচার হয়ে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, সংঘবদ্ধ পাচারকারিরা আওয়ামীলীগের এক নেতার প্রতিষ্ঠানের পন্য পাচার করে নিয়ে যাবার সময় গোয়েন্দারা তা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ধরে ফেলে। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় ৫ জনের নামে মামলাও হয়েছে।
সূত্র জানায়, ট্যাক্সএবল আইটেম যেমন সোয়াশ, টি শার্ট, সোয়েটার ট্যাক্স ফাকি দিয়ে বন্ড সুবিধায় সেসালের বস্তায় ভরে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। নিউ ডিওএইচএস, বারিধারায় অবস্থিত ‘একেএস’ ফেব্রিক্স ‘এসিএস’ খাচার নামে আসে। রানা এন্টারপ্রাইজ ও সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান ট্যাক্স না দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বন্ড সুবিধায় নিয়ে যাচ্ছে- যা তদন্ত করলেই রহস্য বের হয়ে আসবে। এ ঘটনায় কামাল নামের একজন জড়িত থাকায় সে বর্তমানে পলাতক রয়েছে, সে চোরা কামাল নামে পরিচিত। ট্যাাক্স ফাকি, বন্ড সুবিধ, পাচওয়ার্ড জালিয়াতি এবং সেসালের বস্তায় পন্য পাচারের মধ্যে টপে রয়েছে হাতেগোনা ৮/১০টি সিএন্ডএফ ও কুরিয়ার খাচা। কারো কারো নিজস্ব কুরিয়ার খাচা ও নিজস্ব সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মধ্যে ডিপিএক্স খাচার নিজস্ব সিএন্ডএফ মিল্টন, ফারদার, এসিএস,সুমাইয়া, রানা, মমতাজ। একটি সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৬ শত বিল অব এন্ট্রি জালিয়াতির ঘটনা তদন্তে বের হয়ে এসেছে। পাচওয়ার্ড জালিয়াতির ঘটনায় হালিম নামের একজন রাজস্ব কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করে সাসপেন্ড করা হলেও কুরিয়ার শুল্কায়নে পাচওয়ার্ড জালিয়াতি, বিল অব এন্ট্রি জালিয়াতি বন্ধ হয়নি। ববং নতুন এসির আগমনে তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে পাস বই , বিজিএমই বইও জালিয়াতি করা হচ্ছে। ব্যক্তি আমদানিকারকরা ট্যাক্স দিলেও খাচার আমদানিকারকরা ট্যাক্স দেদারচ্ছে ফাকি দিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেতে তিন খাচা যেমন- ফারদার, এসসিএস ও ডিপিএক্স খাচার নাম সবার মুখে মুখে। সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্টরা প্রতিদিন শতাধিক পেপার রেডি করে দেয় আর লোডাররা পন্য ডেলিভারি দেয়, কন্ট্রাক্ট হয় এসিসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে। এ ভাবে প্রতিদিন প্রায় ১ শ’ কোটি কোটি টাকার পণ্যের ট্যাক্স ফাকি দেয়া হচ্ছে।
কুরিয়ার খাচার নিজস্ব সিএন্ডএফ না থাকলে ট্যাক্স ফাকি বন্ধ হবে, তা না হলে ট্র্যাক্স ফাকি রোধ করা যাবে না। সাধারন সিএন্ডএফ যেখানে প্রতিদিন ১০ টা পেপার করতে পারে না সেখানে খাচার সিএন্ডএফরা পাচওয়ার্ড জালিয়াতি করে প্রতিদিন শতাধিক বিল অব ্এন্ট্রি জালিয়াতি করে পন্য পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে, আর সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
সূত্র জানায়, এসি সাইদুল ইসলামকে এসি প্রিভেনটিভ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তার বদলি ডিউ হলেও তাকে ঢাকা কাস্টমস হাউজের বাইরে পোস্টিং করা হচ্ছে না। আইওয়াশের জন্য তাকে ঢাকা কাস্টমস হাউজের একটি ইউনিট কুরিয়ার শুল্কায়নে বদলি করা হয়েছে। প্রিভেনটিভ টিমের সিপাই অনুপম , শফি দীর্ঘদিন প্রিভেনটিমে থাকার সুবাধে শাহজালাল বিমানবন্দওে পাচারকারিদেও সাথে গোপন আতাতসহ অনৈতিক কাজের সাথে নিজেদের জড়িয়ে ফেলেছে। কিন্ত রহস্যজনক কারনে এদেরকে ঢাকা কাস্টমস থেকে বদলি করা হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, কুরিয়ারে সেসালের নামে বস্তায় বস্তায় পন্য যাচ্ছে, পাচওয়ার্ড জালিয়াতি, ভ্যাট ফাকি, সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব সংক্রান্ত ব্যাপারে পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন আসার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সতর্ক হলেও আবার সেই তিমিরে ফিরে এসছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা কাস্টমস হাউজ কমিশনার বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।