বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ড বাতিল

নিউজ ডেক্স  : পাকিস্তানের একটি আদালত সঙ্গে সঙ্গে এও জানিয়ে দিলো , যে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালত তাঁকে নিয়ে রায় দিয়েছিল, তা অসাংবিধানিক। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে গত ১৭ ডিসেম্বর মোশাররফকে ফাঁসির সাজা শোনায় ওই বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালত। সেই রায়ের বিরুদ্ধে ২৭ ডিসেম্বর লাহোর হাই কোর্টে ৮৬ পাতার আবেদন জানিয়েছিলেন পারভেজ মোশাররফের আইনজীবী আজহার সিদ্দিকি। আবেদনে তিনি বলেছিলেন, তাঁর মক্কেল মোশাররফ পুরোপুরি নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসির সাজা শুনিয়ে ব‌্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের বিরুদ্ধে শুনানির জন‌্য একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠনের দাবিও জানিয়েছিলেন তিনি। জবাবে লাহোর হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার স্পষ্ট জানান, জরুরি ভিত্তিতে শুনানির জন‌্য পুরো বেঞ্চ গঠন করা যাবে না। পরে অবশ‌্য লাহোর হাই কোর্ট বলে, তিন সদস্যের সাধারণ বেঞ্চে ৯ জানুয়ারি হবে শুনানি। সেখানে ফাঁসির সাজা দেওয়া বিচারপতিদের বিরুদ্ধে কোনও ব‌্যক্তিগত আক্রমণ বা নালিশ করতে পারবেন না মোশাররফের আইনজীবী। ফলে ফের ধাক্কা খান মোশাররফ।

সোমবার সর্বসম্মতভাবে লাহোরের একটি হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, মোশাররফের রায় দেওয়ার জন্য গঠিত আদালত অসাংবিধানিক। রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাও আইন মেনে দাখিল করা হয়নি। এমনকী আইনজীবীদের দলও সম্পূর্ণ বেআইনি। সরকার পক্ষের আইনজীবী ইশতাক এ খান জানিয়ে দেন, মোশাররফ এখন মুক্ত। ফেডেরাল ক্যাবিনেটের সম্মতিতে তার বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়ের করা যেতে পারে।

বর্তমানে স্বেচ্ছা নির্বাসনে দুবাইয়ে রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণার পর এক ভিডিও বার্তায় তিনি দাবি করেছিলেন, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তাঁকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে। তবে এবার আদালত মৃত্যুদণ্ড বাতিল করায় স্বস্তি পেলেন তিনি।

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত পাকিস্তানের ক্ষমতায় ছিলেন মুশারফ। কারগিল যুদ্ধে হারের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের উপর হারের দায় চাপিয়ে রক্তপাতহীন অভ‌্যুত্থানের মাধ‌্যমে ক্ষমতা দখল করেন তিনি। তাঁর আমলেই পাক-অধিকৃত কাশ্মীর-সহ গোটা উপমহাদেশে ভারত বিরোধী নাশকতা তুঙ্গে পৌঁছায়। ২০০১ সালে ৯/১১ হামলার পর মোশাররফের নেতৃত্বে আফগানিস্তানে মার্কিন লড়াইয়ে যোগ দেয় পাকিস্তান। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, তাঁর আমলে বেশ মজবুত হয় পাক অর্থনীতি ও সামরিকবাহিনী। ২০০২ সালে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলেও প্রতিশ্রুতিমতো সেনাপ্রধানের পদ ছাড়তে অস্বীকার করেন মুশারফ। ২০০৭-এ তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে বরখাস্ত করেন তিনি। তারপর থেকেই মুশারফের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভের হাওয়া বইতে থাকে। ঘরোয়া রাজনীতির চাপে বাধ্য হয়ে ইস্তফা দিতে হয় তাঁকে।আমাদের সময়ডটকম

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।