শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
বরিশাল বিমানবন্দর কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছেঃ বিমানবন্দরের উন্নয়নে কাজে সিএএবির ৭ প্রকৌশলী যাচ্ছেন বিদেশেঃ খরচ ৪০ লাখ টাকা

স্টাফ রিপোটার: এক দিনে বরিশাল বিমান বন্দরে বিজি সহ কয়েকটি এয়ার লাইন্স ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে বরিশাল বিমানবন্দর কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছো।

অন্য দিকে বরিশাল বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজের কারিগরি পরিদর্শনে সিভিল এভিয়েশনের একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীসহ ৭ প্রকৌশলী ৪০ লাখ টাকা খরচ করে তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে ৭ সেপ্টেম্বর উড়ে যাচ্ছেন। সেখানে তারা ৭দিন অবস্থান করবেন।

দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ২০২২ সালের আগস্টে ঢাকা-বরিশাল রুটে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করে দেয় বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভো এয়ার। সে সময় এয়ারলাইন্সটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, যাত্রী কমে যাওয়ার কারণেই এ উদ্যোগ নিয়েছে তারা। এবার একই পথে হাঁটছে আরেক বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস বাংলা। আর যাত্রী কমে যাওয়ায় রুটটিতে ফ্লাইট সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর দাবি, পর্যাপ্ত যাত্রী পাওয়ার পরও এ ধরনের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।

পদ্মা সেতু চালুর পর থেকেই আকাশপথে যাত্রী কমেছে ঢাকা-বরিশাল রুটে। বছর খানেক আগেও বরিশাল বিমানবন্দরে দিনে ১১টি ফ্লাইট ওঠানামা করেছে। এরমধ্যে বিমানের ফ্লাইট চলেছে সপ্তাহে ৬ দিন, আর প্রতিদিন চলাচল করেছে ইউএস বাংলার ফ্লাইট।

আকাশ থেকে শস্যক্ষেতে কীটনাশক ছিটাতে ১৯৬৩ সালে বরিশালের বাবুগঞ্জের রহমতপুর ইউনিয়নে নির্মাণ করা হয় প্রায় ২ হাজার ফুটের রানওয়ে। সে সময় এটিকে প্ল্যান্ট প্রোটেকশন বন্দর হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

১৯৮৫ সালে এই রানওয়েটিকে বিমানবন্দরে রূপ দেয়া হয়, তবে সে সময় এখানে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ চলাচল শুরু হয়নি। ১৯৯৫ সালের ১৭ জুলাই বেসরকারি এয়ারলাইনস অ্যারো বেঙ্গলের ঢাকা-বরিশাল রুটে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে বিমানবন্দরটির বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হয়। ওই বছরেরই নভেম্বর মাসে বিমানবন্দরটিতে ফ্লাইট চালু করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

শুরু থেকেই এ পথে যাত্রীর খরা ছিল। ২০০৬ সালে যাত্রীর অভাবে বিমানবন্দরটিতে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৯ বছর পর ২০১৫ সালের ৯ এপ্রিল আবার এই বিমানবন্দরে ফ্লাইট শুরু হয়।

১৬০ দশমিক ৫ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিমানবন্দরটির রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ফুট আর প্রস্থ ১০০ ফুট।

বরিশালে ফ্লাইট পরিচালনা প্রসঙ্গে বিমানের বাণিজ্যিক সহকারী সানজিদা শারমিন বলেন, ‘যখন পদ্মা সেতুটা হয়ে গেলো। তখন যাত্রীরা দেখা গেল যে খুব সহযেই তারা মুভ করতে পারছে। সড়ক পথেই যাওয়া আসা করতে পারছে। তখন থেকেই ধীরে ধীরে যাত্রী করে গেল। এখন সপ্তাগে তিনদিন করে আমাদের ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে।’

জরুরি প্রয়োজনের জন্য হলেও এই রুটে উড়োজাহাজ চালু রাখার দাবি যাত্রীদের। আর ট্যুরিস্ট ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলো বলছে, যথেষ্ট যাত্রী পাওয়ার পরও ফ্লাইট কমানো বা বন্ধের যৌক্তিকতা নেই।

বরিশালের হলি-ডে ট্যুর এন্ড ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাসার বলেন, ‘একটা ফ্লাইট তার কস্ট বেয়ার করতে বা সাসটেইন করতে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ যাত্রী প্রয়োজন। সেখানে ৮০ ভাগ বা ৯০ ভাগ যাত্রী হওয়ার পরেও ফ্লাইট বাতিল করা হচ্ছে। এটার আসলে কী উদ্দেশ্য আমি জানি না।’

আকাশপথে যোগাযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় বরিশালে ফ্লাইট চালু রাখতে উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আকাশপথে যদি যাত্রীর চাহিদা থাকে এবং সে অনুযায়ী এখানে যারা ফ্লাইট পরিচালনা করেন সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাদের সাথে আমরা কথা বলবো।’

গত কয়েক বছরে উড়োজাহাজের জ্বালানি জেট ফুয়েল বা এভিয়েশন ফুয়েলের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এর প্রভাব পড়েছে ভাড়ায়। অতিরিক্ত খরচের কারণে আগে যারা সময় বাঁচাতে আকাশপথ বেছে নিতেন, তাদের অনেকে অন্য মাধ্যমগুলোতে ফিরে যাচ্ছেন। এতে আকাশপথে যাত্রীর সংখ্যায় প্রতি বছর যে প্রবৃদ্ধি হতো, তা হোঁচট খেয়েছে।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।