সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১২:০৯ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
বিমানের কাছে সিএএবির পাওনা ৫ হাজার ৬শ কোটি টাকা

নিউজ ডেক্স : বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) পাওনা ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা নিয়মিত পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করছে না বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বকেয়া আদায়ে বেবিচকের পক্ষ থেকে বারবার চিঠি দেওয়া হলে তার জবাবও দেয় না সংস্থাটি। পাওনা আদায়ে বেবিচকের পক্ষ থেকে গত মাসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আয়োজন করা হলেও এতে বিমান কর্তৃপক্ষের কেউ উপস্থিত হননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এয়ারলাইনসের কাছে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বেবিচকের। পাওনা আদায়ে এয়ারলাইনসগুলোকে নিয়মিত চিঠি দেওয়াসহ প্রতিনিধির সঙ্গে পৃথক সভা করে বেবিচক। অন্য এয়ারলাইনসগুলো এক্ষেত্রে বেবিচককে সহযোগিতা করলেও বিমান কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েও বেবিচকের পাওনা নিয়মিত আদায় করছে না। বকেয়া আদায়ে বেবিচক বারবার চিঠি দিলেও তার জবাব দেয় না সংস্থাটি। এমনকি পাওনার বিষয়ে আলোচনার জন্য সভা ডাকলে তাতেও উপস্থিত থাকছেন না কেউ। পরবর্তী সভার জন্য সময় চেয়ে বারবার চিঠি দেয়া হলেও সময় দিচ্ছে না বিমান। এছাড়া ডেইলি প্যাসেঞ্জার লিস্ট না দেওয়া, নিজেদের মতো করে এম্বার্কেশন ফি, বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি এবং প্যাসেঞ্জার সিকিউরিটি ফি প্রদান করে। রপ্তানি কার্গো থেকে আদায় করা ফিও দেয় না। এতে প্রকৃত পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বেবিচক। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েও সমাধান হচ্ছে না।
.
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার মো. নওসাদ হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, পাওনাগুলো ২০১৯ সালের আগের। আমরা পর্যায়ক্রমে চেষ্টা করছি তা পরিশোধ করার। প্রতি মাসে টাকা দেওয়া হবে। যেদিন মিটিং ডেকেছিল, একই দিনে মন্ত্রণালয়ের মিটিং থাকায় আমরা উপস্থিত হতে পারিনি। যেহেতু দুটিই সরকারি প্রতিষ্ঠান তাই পাওনা-দেওনা নিয়ে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।

বেবিচকের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন চার্জ ও ফি বাবদ বিমানের কাছে বকেয়ার পরিমাণ ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল বকেয়া ১ হাজার ২ কোটি টাকা। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ বকেয়া জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা দেয়নি সংস্থাটি।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, বিমান রপ্তানি কার্গো ইউনিট থেকে আদায়কৃত অর্থও ঠিকমতো পরিশোধ করছে না। অর্থ বিভাগ থেকে তাগিদ দেয়ার পর গত এপ্রিলে ৭৮ কোটি টাকা আদায় দেখানো হয়েছে। এটিএম বিভাগের সঙ্গে বিমানের চুক্তিতে জটিলতা থাকায় আদায়কৃত টাকার ঠিকমতো হিসাব দিচ্ছে না। এ বিষয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্গো ইউনিটের সেমিঅটোমেশন সম্পর্কিত চুক্তিপত্রটি সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, বিমানের কাছ থেকে বকেয়া আদায়ে দুদকের সুপারিশ ছিল, প্রতি মাসে আপডেট প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে এবং মনিটরিং কমিটি গঠন করতে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ২৬টি বিদেশি এয়ারলাইনসের কাছে পাওনা টাকা আদায়ে তাদের নিয়মিত চিঠি দেয়া হচ্ছে এবং প্রতি মাসে তাদের সঙ্গে পৃথক সভা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, নভোএয়ারের কাছে পাওনা ২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে মূল পাওনা ২১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। মার্চ মাসে ৩২ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে সংস্থাটি। বন্ধ হয়ে যাওয়া রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কাছে পাওনা ৪০৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল পাওনা ১৪১ কোটি টাকা। বন্ধ হয়ে যাওয়া ইউনাইটেড এয়ারের কাছে পাওনা ৩৮৯ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে মূল পাওনা ৫৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। জিএমজি এয়ারলাইনসের কাছে পাওনা ৩৯৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে মূল পাওনা ৬৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা

সূএ: আমাদের সময়

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।