শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
„বিমানে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে  ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও জড়িত! তলব করবে ডিবি ; নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ পরিক্ষায়ও এমডি-৩ পরিচালক সিন্ডিকেড :মন্ত্রী-এমপিদের সুপারিশ থোরাই কেয়ার

ডেক্স রিপোর্ট : বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার পর থেকেই কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস ও বিতরণ করা হবে সে বিষয়ে পরিকল্পনা শুরু হয়ে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী পরীক্ষার আগের দিন চার-পাঁচ জন মিলে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। পরে সেগুলো ২ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে সরাসরি ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিতরণ করে তারা। গরিব পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়ি কিংবা জমিজমা লিখে দেওয়ার শর্তে সই নেওয়া হয় নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে। প্রশ্ন ফাঁস ও বিতরণের এ চক্রের সঙ্গে সংস্থাটির বেশ কয়েক জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। তাদের শিগিগরই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

এর আগে বিমানে শতাধিক নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ পরিক্ষায়ও এমডি-৩ পরিচালক সিন্ডিকেড জড়িয়ে পড়ে, কয়েকজন প্রভাবশাল মন্ত্রী-এমপিদের সুপারিশ থোরাইকেয়ার করা হয়।

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত বিমানের পাঁচ জুনিয়র কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের পর গত ২২ অক্টোবর  শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান। এর আগে গত শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঐ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে ডিবি লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো—বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের এমটি অপারেটর মো. জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ মাহফুজ আলম ভূঁইয়া ও মো. এনামুল হক (২৭) এবং অফিস-সহায়ক আওলাদ হোসেন ও হারুনুর রশিদ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ফাঁসকৃত প্রশ্নের সফট ও হার্ডকপি, মোবাইল ফোন, নগদ দেড় লাখ টাকা, ব্যাংকের চেক, স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরিত দলিল, হিসাব-নিকাশের চারটি ডায়েরি এবং বিভিন্ন প্রার্থীর অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া গেছে।

ডিবি প্রধান বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের মতো বিষয় রোধ করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি কমিটি গঠিত হয়েছিল। বিমানের ডিজিএম ও জিএমের সমন্বয়ে গঠিত ঐ কমিটির চোখকে ফাঁকি দিয়ে কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে সে রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পাশাপাশি তাদের সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কোনো কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সুসম্পর্ক রয়েছে সেটি জানার চেষ্টা করা হবে। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, এর আগেও কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে তারা লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সে টাকার ভাগ তারা আবার ঐসব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকেও দিয়েছেন।

যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ নেওয়া হবে কি না এবং বিমানের কমিটি প্রশ্ন ফাঁসের দায় নেবে কি না জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকেও রিমান্ডে আমরা এ বিষয়ে তথ্য জানার চেষ্টা করব। চক্রটি এই প্রশ্ন কত জনের কাছে বিতরণ করেছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত শেষে এ বিষয়ে আমরা সঠিক সংখ্যাটি জানাতে পারব।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে বিমানের জুনিয়র অপারেটর জিএসই, জুনিয়র টেইলর কাম আপহোলস্টার, জুনিয়র এয়ারকন মেকানিকসহ ১০টি পদের লিখিত পরীক্ষা ছিল। তবে পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘণ্টা আগে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে বেশ কয়েক জনকে আটক করে পুলিশ। পরে বিমান কর্তৃপক্ষ পরীক্ষাটি স্থগিত ঘোষণা করে।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।