শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
মহাজোটের সম্পদ : মামলার পাহাড়ে বিএনপি

একুশে বার্তা ডেক্স : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও বিশেষদূত এবং বিএনপি প্রার্থীররা ইসিতে হলফনামা দাখিল করেছেন। সেই হলফনামায় সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের গত ১০ বছরে আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি সম্পদের মালিক হয়েছেন। অন্যদিকে  বিএনপির প্রার্থীদের সম্পদ না বাড়লেও চারগুন মামলা গুম এবং হত্যার শিকার হচ্ছেন। বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারির ২২ তারিখ পর্যন্ত সারা দেশে ৫০ হাজার ৭৪টি মামলা হয়েছে।
এসব মামলায় ১১ লাখ ৯১ হাজার ৪৪৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। ৩ হাজার ৯৪৭ জন নেতা-কর্মী এখন রয়েছেন কারাগারে। শুরু বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২৪টি মামলা হয়েছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২১টি। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ৮৮টি মামলা রয়েছে। এসব চিত্র উঠে এসেছে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া প্রার্থীদের হলফনামায়। গতকাল শনিবার পর্যন্ত অনেক প্রার্থীর সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়নি। আজ রোববার মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পরে ইসির পক্ষ থেকে এসব তথ্য জনগণের সামনে প্রচার করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৮১জন, বিএপির ৬৯৬ জন, জাতীয় পার্টির ২৩৩ জন, অন্যান্য রাজনৈতিক দল ১৩৫৭ জন, স্বতন্ত্র ৪৯৮ মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে। এদের মধ্য দলগুলোর প্রার্থী ২ হাজারর ৫৬৯জন। আর স্বতন্ত্র থেকে মনোনয়ন দাখিল করেছেন ৪৯৮জন। সব মিলে ৩০৬৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আ›লীগ ২৬৪ আসনে, বিএনপি ২৯৫ মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন।
ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ব্যারিস্টার  শেখ ফজলে নূর তাপস। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তিনি এই আসনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় তাপসের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করা হয়েছে এলএলবি (অনার্স); ব্যারিস্টার-এট-ল, পেশা- আইনজীবী। হলফনামায় চাকরি থেকে তার আয়ের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৬  কোটি ৬০ লাখ টাকা। বিগত নির্বাচনের সময় দাখিল করা হলফনামায় চাকরি থেকে এই রাজনীতিকের আয় উল্লেখ করা হয়েছিল ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সে হিসাবে চাকরি থেকে তাপসের আয় বেড়েছে দ্বিগুণ। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তির ব্যবসায় থেকে আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ লাখ ৭৪ হাজার ২৮৬ টাকা, যা পাঁচ বছর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ছিল ১৮ লাখ ১১ হাজার ৮৫৩ টাকা। ৫ বছরে তাপসের সঞ্চয়ও বেড়েছে আট গুণেরও  বেশি। ২০১৩ সালের হলফনামায় সঞ্চয় হিসাবে ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪৪১ টাকা ছিল নিজ নামে। তা এবার  বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। সঞ্চয় বেড়েছে এই সংসদ সদস্যের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিরও। ৩ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৯ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯৫ টাকা।
হলফনামায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বেড়েছে বাড়িভাড়া  থেকে আয়। এই সংসদ সদস্যের বাড়ি ভাড়া থেকে বার্ষিক আয় ছিল ১৫ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৭ টাকা। বর্তমানে বার্ষিক আয় করছেন ৪২ লাখ ৫০ হাজার ৩৯৮ টাকা। প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তির বাড়িভাড়া থেকে অতীতে আয় না থাকলেও বর্তমানে ১৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৮২ টাকা আয় হচ্ছে। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, অগ্রিম বাড়িভাড়া বাবদ নেয়া দুই কোটি ৯৯ লাখ ২২ হাজার ৫২৫ টাকা দায় রয়েছে এই সংসদ সদস্যের। যা আগে ছিল ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩৪ টাকা। বর্তমানে  শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা না থাকলেও আতীতে দুটি মামলা ছিল। মামলা দুটিই হাইকোর্ট বিভাগ থেকে বাতিল করা হয়েছে।
ঢাকা-১৭ ও রংপুর-৩ আসন থেকে এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার মাসিক আয় ৯ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে নিজের নগদ সাড়ে ২৮ লাখ টাকা ও স্ত্রীর রয়েছে ২৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৩৭ লাখ টাকার ওপরে। স্ত্রীর নামে ৭৩ কোটি টাকা। নিজ ও স্ত্রীর নামে প্রায় অর্ধকোটি টাকার কোম্পানি শেয়ার আছে।
ঢাকা-১ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নামে বর্তমানে দায়- দেনা ৮৩ কোটি ৭৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। অপরদিকে তার স্ত্রীর নামে দায়দেনা রয়েছে ১৩  কোটি ৫ লাখ টাকা। এ আসনের বিএনপির প্রার্থী খোন্দকার আবু আশফাকের বিরুদ্ধে বিস্ম্ফোরক আইনসহ বিভিন্ন অপরাধে চারটি মামলা চলমান রয়েছে। অতীতেও তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৩টি মামলা ছিল। তার নামে এক কোটি ৫৯ হাজার টাকা দায়দেনা রয়েছে।
ঢাকা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে আবারও প্রার্থী হয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। বিপুল সম্পদের মালিক এ প্রার্থী তার সম্পদের বিবরণ দিতে চারটি পৃথক সংযুক্তি ব্যবহার করেছেন। বছরে তার আয় দেখিয়েছেন ৭৭ লাখ টাকা। তার নামে দায়দেনা রয়েছে ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
ঢাকা-৮ আসনে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। এমএ পাস এ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। যা ছিল বিএনপি সরকারের আমলে তুলেনিয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নামে পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি রয়েছে, যার মূল্য  দেখিয়েছেন ৩৭ লাখ টাকা।  এর আগের চেয়ে এবার চারগুণ টাকা ও সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ আসনে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৪২টি মামলা, অতীতে ছিল ২৩টি। তার দায়দেনা প্রায় ৫৯  কোটি টাকার।
ঢাকা-১২ আসনের এমপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধেও কোনো মামলা নেই। ২০০২ সালে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হলেও সংশ্নিষ্টতা না পাওয়ায় চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়। আগের চেয়ে তার সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের বিরুদ্ধে রয়েছে ৭২টি মামলা। খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসন সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এক কোটি ১৮ লাখ টাকা দেনা রয়েছেন তার হলফনামা এ দাবি করা হয়েছে। এবারে ও মনোনয়ন পেয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ পাস। হলফনামায় তিনি ব্যাংক ঋণ ৮৩ লাখ এবং ব্যক্তিগত ঋণ ৩৫ লাখ টাকা দেখিয়েছেন। বাৎসরিক আয় হিসেবে তিনি কৃষি খাত থেকে ৮০ হাজার, ইটভাটা থেকে ৮ লাখ ৬৩ হাজার এবং মন্ত্রী-ভাতা হিসেবে ১১ লাখ ৮১ হাজার টাকা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া তার কাছে নগদ হিসাবে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ৫৭ লাখ ৮৮ হাজার, ৬০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র, আলমারি, পালঙ্ক, চেয়ার, টেবিলসহ দুটি পুরনো জিপ ও একটি পুরনো মোটরবাইক রয়েছে। তার নামে কোনো স্বর্ণ বা সঞ্চয়পত্র কেনা না থাকলেও স্ত্রীর নামে ১৫ ভরি স্বর্ণ উপহার হিসেবে দেখিয়েছেন। স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে তিনি দুটি জমির মূল্য দেখিয়েছেন ৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা। পাশাপাশি তার একটি বিল্ডিং ও একটি টিনশেড  সেমিপাকা বাড়ি রয়েছে । গত ২৮ নভেম্বর যারা দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাদের প্রায় সবারই স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে।
খুলনা-১ (বটিয়াঘাটা-দাকোপ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পঞ্চানন বিশ্বাস। শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক। পেশা কৃষিকাজ। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য। ঢাকা ও খুলনায় তার দুটি বাড়ি রয়েছে। নগদ টাকা রয়েছে ৩৩ লাখ। বিভিন্ন যানবাহনের অর্জনকালীন মূল্য ৫০ লাখ, স্বর্ণ ৭ লাখ, আসবাবপত্র রয়েছে ৭ লাখ ও ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র রয়েছে ৭ লাখ টাকার।
বাৎসরিক আয় হিসেবে তিনি হলফনামায় উল্রেখ করেছেন, কৃষি খাত থেকে ৭০ হাজার টাকা, বাড়ি ও  দোকান ভাড়া ৫ লাখ ১২ হাজার, বেতন ও সম্মানি বাবদ ৬ লাখ ৬০ হাজার এবং অন্যান্য আয় ১ লাখ ৪১ হাজার। তার কোনো মামলা এবং দায় নেই। ব্যাংকেও  কোনো টাকা জমা নেই।
খুলনা-২ আওয়ামী লীগের প্রার্থী বঙ্গবন্ধুর ভাতিজা শেখ সালাউদ্দিন। শিক্ষাগত  যোগ্যতা এইচএসসি পাস হলেও তার হলফনামা দেখে সহজেই বোঝা যায় তিনি সফল ব্যবসায়ী। মেসার্স আজমীর নেভিগেশন ও  মেসার্স ফারদিন ফিসের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তিনি। হলফনামায় প্রার্থীর বাৎসরিক আয় উল্লেখ করা হয়েছে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং তার স্ত্রীর ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এছাড়া অস্থাবর ও স্থাবর সম্পত্তি উল্লেখ করা হয়েছে ৬৫  কোটি ৮৮ লাখ টাকা। পাশাপাশি তার স্ত্রীসহ প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের নামে অস্থাবর ও স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৩২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের কাছে ২৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার দায় রয়েছে।
খুলনা-৩ আসন  থেকে পুনরায় প্রার্থী হয়েছেন সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুুজান সুফিয়ান। শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ (সম্মান)। হলফনামায় তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া বাড়ি ভাড়া বাবদ বাৎসরিক ১ লাখ, রাখিমালের ব্যবসা বাবদ ২৪ হাজার, সংসদ সদস্যের ভাতা ৭ লাখ ২৫ হাজার, অন্যান্য ভাতা ৬ লাখ ৬০ হাজার এবং মৎস্যচাষ থেকে ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আয় করেন। তার কাছে নগদ রয়েছে ৫১ লাখ টাকা। বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের অর্জনকালীন মূল্য উল্লেখ করেছেন ৫৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। ৪০ তোলা স্বর্ণ, ফ্রিজ, টিভি, খাটসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ও উপহার হিসেবে  পেয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
খুলনা-৪ আসনের প্রার্থী আবদুস সালাম মুর্শেদীর শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক। তিনি প্রাইভেট/ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিভিন্ন পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠান, বস্ত্রশিল্প, ব্যাংক ও হাসপাতলের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। হলফনামার তথ্য অনুসারে তার বাৎসরিক আয় ৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ৮৩ কোটি ৫৬ লাখ এবং স্থাবর সম্পদ ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার। কোনো ব্যাংকে তার ঋণ না থাকলেও বিভিন্ন দায় রয়েছে ৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকার।
সালাম মুর্শেদী বাৎসরিক হিসেবে বাড়ি ভাড়া বাবদ ১৬ লাখ ৪২ হাজার, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে  বেতন ২ কোটি ৬২ লাখ এবং শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক  থেকে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৯৯ হাজার টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে তার কাছে নগদ অর্থ রয়েছে ৪  কোটি ২৭ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা ৪৫ লাখ, বন্ড, সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ৭১ কোটি টাকার, স্বর্ণ সাড়ে ৪ লাখ টাকার, ইলেকট্রনিক্স সাড়ে ৭ লাখ টাকার, আসবাবপত্র ৯ লাখ ৮০ হাজারসহ অন্যান্য অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকার। পাশাপাশি স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে গুলশানে ১৫ কাঠা জমি, খিলগাঁওয়ে একটি ৯০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, গুলশানে দুটি ফ্ল্যাটসহ দালানকোঠা ও আবাসিক ভবন বাবদ আর্থিক মূল্য দেখিয়েছেন ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা। তার বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা একটি মামলা রয়েছে। তার নামে অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৯২ লাখ টাকার, আর স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১৬ কোটি টাকার বেশি। তার নামে সুদবিহীন ঋণ রয়েছে সাত কোটি টাকার ওপরে। এ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক প্রার্থী কাজী মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা দায় দেনা নেই। তার স্থাবর সম্পদের মূল্যমান ৬৭ লাখ টাকা। অপরদিকে এ আসনে বিএনপি প্রার্থী নবী উল্লাহ নবী। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অনেক মামলা, যা পৃথক বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন তিনি। তার স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। এ আসনের বিএনপির আরেক প্রার্থী অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ২১টি মামলা রয়েছে।
ঢাকা-৪ আসনে বিএনপির হয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ ও তার  ছেলে তানভির আহমেদ। হলফনামায় সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা উল্লেখ করা হয়েছে ৮০টি। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগের মামলাও রয়েছে। তার ছেলে তানভির আহমেদের বিরুদ্ধে বর্তমানে রয়েছে ৭৫টি মামলা। অতীতের তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা থাকলেও দুটিতে অব্যাহতি এবং বাকি দুটি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। তার সম্পদ কোটি টাকার নিচে। এ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থীর হলফনামা পাওয়া যায়নি।
ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছেন এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম। পেশায় ব্যবসায়ী এ প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা নেই। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে তিনি অর্ধশত কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক। স্ত্রীর নামেও রয়েছে অনেক সম্পদ। এ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক প্রার্থী হাজী আবুল হাসনাত। অপরদিকে এ আসনে বিএনপি প্রার্থী নাসিরউদ্দিন পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনার বিরুদ্ধে রয়েছে দুটি মামলা।
ঢাকা-৯ আসনে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী। তার নামে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ  দেখিয়েছেন প্রায় ২২ কোটি টাকা দায়দেনা রয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা।  আগের চেয়ে এবার তার সম্পদ চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঢাকা-১৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান এমপি কামাল আহম্মেদ মজুমদারের সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৬ হাজার ১৬১ শতাংশ জমি। একই আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন ড. এসএম আসাদুজ্জামান রিপন। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে ১০টি মামলা। তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৫০ লাখ টাকা।  ঢাকা-১৯ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে আবারও প্রার্থী হয়েছেন ডা. এনামুর রহমান। নিজের  চেয়ে তার স্ত্রীর সম্পদ বেশি দেখিয়েছেন হলফনামায়। তার কোম্পানির নামে ৫৮ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী কফিল উদ্দিন পরিবহন ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে। তার নামে রয়েছে ২৫৮টি বাস, ২১টি ট্রাকসহ বিভিন্ন সম্পদ। ইনকিলাব

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।