বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢেলে সাজানো হচ্ছে শাহজালাল : থার্ড টার্মিনাল নিয়ে সংসদীয় কমিটির ক্ষোভের পর টনক নড়েছে সিএএবির : ১৪ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন দিয়ে দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া : মন্ত্রীর আশা নতুন বছরেই কার্গো ফ্লাইট চালু হবে

বিশেষ সংবাদদাতা  : থার্ড টার্মিনাল নিয়ে সংসদীয় কমিটির ক্ষোভের পর দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া করছে সিভিল এভিয়েশন। আগামী ৯ জানুয়ারী থার্ড টার্মিনাল নিয়ে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দিবে সংসদীয় কমিটি। এর আগেই দরপত্র ডাকার হাকডাক করছে সিএএবি কর্তৃপক্ষ। একইভাবে বাগেরহাটে নতুন বিমানবন্দর নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ শুরু ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজও চলছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রণয়ন করা হয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল আইন ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন। বহুল আলোচিত কার্গো নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও এখন প্রায় প্রত্যাহারের পথে। যে কোন সময় যুক্তরাজ্য থেকে আসতে পারে শুভ সংবাদ। ইতোমধ্যে সব শর্ত মেনে সব প্রস্তুতি শেষ করে এখন ডিএফটির কাছ থেকে নতুন বছরে একটি আদেশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বলেছেন, “এসব অর্জনের পথ মসৃণ ছিল না। দায়িত্ব নেয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডুবন্ত জাহাজকে টেনে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আজ একটা বিশেষ জায়গায় পৌঁছা সম্ভব হয়েছে। সিভিল এভিয়েশান ছাড়া দেশ-বিদেশে পর্যটন খাতের ব্যাপক অংশগ্রহণ ও পরপর তিন বছর বিমানে লাভের ধারা অব্যাহত রাখতে পারাটা ছিল খুবই চ্যালেঞ্জিং। এখন আমাদের একটাই টার্গেট, বেবিচক-কে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করে নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালু করা। আশা করছি নতুন বছরেই সেটা সম্ভব হবে। আমার দৃষ্টিতে সেটাই হবে সেরা অর্জন।

বছরের শেষ প্রান্তে এসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণ প্রান্তে থার্ড টার্মিনালের জন্য ১৪ হাজার কোটি টাকার আর্থিক অনুমোদন ছিল বিমান মন্ত্রণালয়ের  সবচেয়ে বড় অর্জন। বহুল প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পের অগ্রগতি হিসেবে এখন চলছে দরপত্র তৈরির কাজ। সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, জানুয়ারি মাসেই দরপত্র ডাকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে। মার্চের মধ্যেই দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কার্যাদেশ দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে চলছে দৌড়ঝাপ। প্রায় ত্রিশ লাখ বর্গফুটের এই থার্ড টার্মিনাল তৈরির জন্য ইতোমধ্যে বর্তমানের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল ও জেনারেল এভিয়েশনের হ্যাঙ্গার সরানোর কাজে কিছুটা জটিলতা দেখা দিলেও সেটা এখন উত্তরণের পথে। এজন্য প্রকৌশল বিভাগের  সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে একদল দক্ষ প্রকৌশলী ও কারিগরি জনবল। এ সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। কমিটি ৯ জানুয়ারী চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে। কমিটির সভাপতি, সাবেক বিমানমন্ত্রী কর্নেল অব. ফারুক খান কড়া নির্দেশ দিয়েছেন যে করেই হোক অবিলম্বে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হ্যাঙ্গার নির্মাণের জটিলতা দূর করে অবিলম্বে দরপত্র তৈরির কাজ সম্পন্ন করার। কমিটি সব ধরনের আইনী জটিলতা ও কারিগরি সমস্যা কাটিয়ে দ্রুততার সঙ্গে প্রকল্প দুটির কাজ শেষ করার সুপারিশ করেছে।

এ সম্পর্কে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ফারুক খান  বলেন, ‘বিমানবন্দরে প্রাইভেট হেলিকপ্টারের যে হ্যাঙ্গার রয়েছে, সেটা সরিয়ে নতুন করে হ্যাঙ্গার করতে হবে। এই কাজটি এখনও শুরু হয়নি। তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণেও বেশকিছু আইনী জটিলতা আছে। কমিটি আইনী জটিলতাগুলো সুরাহার মাধ্যমে নির্মাণ কাজ শেষ করতে বলেছে। বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের অনেক কাজ শেষ করতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগছে। কমিটি তাদের সতর্ক হতে বলেছে।

এ দিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের সংস্কার কাজে হাত দেয় হচ্ছে। প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সংস্কারে রয়েছে গোলচক্কর থেকে টার্মিনালে প্রবেশের মুখে ৪টি লেন, একটি কার পার্কিং শেড, একটি ফুড কোর্ট, একটি ওয়েটিং শেড, একটি সৌন্দর্যমন্ডিত চারুকর্ম, একটি সুপরিসর টয়লেট কাম বাথুরুম ও নিরাপত্তা চৌকি। এ মাসের শেষের দিকে এসব কাজ শুরু হওয়ার প্রস্তুতি থাকলেও শেষ মুহূর্তে জমি সংক্রান্ত সামান্য জটিলতার মুখে আরও কিছুটা সময় বিলম্ব হতে পারে। তবে প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, জানুয়ারিতেই কাজ উদ্বোধনের লক্ষ্য নিয়ে তৎপর রয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই প্রকল্প শুরু হলে ৯ মাসের মধ্যেই শাহজালাল পাবে দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য। এতে মানুষের ভোগান্তি কমবে। বিমানবন্দরে প্রবেশ ও বাহির পথে আর যানজটের মুখে পড়তে হবে না।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।