শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৫:১৬ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
বিমানের ৩ স্থাপনায় টেন্ডার : দ্বিতীয় দফা তদন্ত প্রতিবেদন ২৩ মে জমা হচ্ছে : প্রশাসনের হস্তক্ষেপ, তদন্ত কর্মকর্তা কি প্রভাবিত?

বিশেষ সংবাদদাতা : বাংলাদেশ বিমানের শাহজালাল বিমানবন্দরসহ ৩ স্থাাপনায় ক্লিনিং কাজের টেন্ডারে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে দ্বিতীয় দফায় গঠিত তদন্ত প্রতিবেদন আজ ২৩ মে কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হচ্ছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তদন্ত কর্মকর্তা প্রভাবিত এবং তদন্ত প্রতিবেদন ভিন্নভাবে প্রকাশিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে টেন্ডারে অংশ নেয়া কতিপয় ঠিকাদার। ঠিকাদাররা অভিযোগ করেন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তদন্ত প্রতিবেদন ‘যে লাউ সে কদুতে’ পরিণত হতে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, এ নিয়ে ‘একুশে বার্তা’য় গত ১৯ মেসহ একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এখানে ১৯ মের প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করা হলো।

বিমানের ৩ স্থাপনায় ক্লিনিং টেন্ডারে অনিয়ম-দুর্নীতি : বাপার ম্যানেজার সিদ্দিক এবার সনদ কারখানা গড়ে তুলেছে : বিএফসিসির টেন্ডার কার্যাদেশ এ ক্লিনিং কাজের দক্ষতার সনদ:

বিশেষ সংবাদদাতা : বিমানের শাহজালাল বিমানবন্দরসহ ৩ স্থাপনার ক্লিনিং কাজে অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগে দুই দুইবার তদন্ত চলছে। এ ক্লিনিং কাজে বাপার ম্যানেজার সিদ্দিক কর্তৃক স্বাক্ষরিত ক্লিনিং সনদে এবং বিএফসিসির কার্যাদেশ সনদে ‘তুলি এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মন্ত্রী-সচিব, বিমানের পরিচালক প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করার পর পরিচালক প্রশাসনের আদেশে ম্যানেজার ইন্ড্রাট্রিয়াল রিলেশন মজিবর রহমান বিষয়টি পুন: তদন্ত করছেন। তদন্ত কর্মকর্তা সংশিষ্টদের ডেকে কথা বলছেন, বিভিন্ন দপ্তরে তদন্ত কাজে দৌড়ঝাপ করছেন।
এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, তদন্ত করে সঠিক তদন্ত রিপোর্টই কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৩ স্থাপনায় ক্লিনিং কাজের দরপত্রে আইডিনং-২৭০৯১৮ মহাব্যবস্থাপক এয়ারপোর্ট সার্ভিস-এর অফিসসমূহ, আভ্যন্তরীণ টার্মিনাল ভবনের বিমান অফিসসমূহ ও বিমান অপারেশন ভবনের বিমান অফিসসমূহ ও বিমান ভবন টেন্ডারে বাৎসরিক বাজেটে ২৪ লাখ টাকা সিডিউলে উল্লেখ ছিল। কিন্ত টেন্ডার ওপেনিং রেজাস্টে দেখা যায়,দুই বছরে বাজেট ২৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। বিমানের সাধারণ সুবিধা ও সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদাররা জিঙ্ঘাসা করলে তারা ঘটনা পাস কাটিয়ে যান। এদের সাথে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘তুলি এন্টারপ্রাইজের’ সাথে গোপনে টেন্ডারের পূর্বেই গোপন আতাত হয়। যেহেতু টেন্ডার সিডিউলে কোন জায়গায়ই শতকরা ১০ ভাগ লেছ-এর কোন প্রকার শর্ত নেই। কর্মকর্তারা মনে মনে এ শর্ত ঠিক করে রাখে এবং ‘তুলি এন্টারপ্রাইজকে তা জানিয়ে দেয়।
বিমানের বিএফসিসি জন্মলগ্ন থেকে নিজস্ব ক্লিনার/ মালি দ্বারা তাদের বাগান ও ক্লিনিং কাজ করে থাকে। যা সরজমিনে তদন্ত করলে এর সত্যতা বের হয়ে আসবে।
আরো উল্লেখ থাকে যে, ১৪ লাখ টাকার কার্যাদেশের জায়গায় বিএফসিসি থেকে গার্বেচ ক্রয়ের কার্যাদেশ এই ক্লিনিং কাজের দরপত্রে দাখিল করে-যা ক্লিনিং কাজের কার্যাদেশ নয়। প্রত্যেকদিন ১৯ হাজার একশ’ টাকা জমা দিয়ে তা কিনে নেয়।
‘তুলি এন্টারপ্রাইজের ক্লিনিং কাজের অভিঙ্ঘতার সনদ বাংলাদেশ ফ্রেইডফরওয়ার্ডিং এসোসিয়েশন মালিক সমিতি কর্তৃক প্রদত্ত। কিন্ত প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে ফ্রেইড ফরওয়ারর্ডিং –এর কোন ক্লিনিং কাজ নেই। এ প্রতিষ্ঠানের কাজ হলো-শুধু রপ্তানিভবনে কার্টুনে ট্রিকার লাগানোর পরে অপসারিত অংশটুকু (কাগজ) ফ্রেইডফরওয়ার্ডের নিজস্ব ট্রাক দ্বারা বস্তাজাত করে সেই বস্তাসমূহ ‘তুলি এন্টারপ্রাইজের নিজস্ব গাড়ি দ্বারা সপ্তাহে ২/৩ দিন অপসারন করা। বিনিময়ে মাসিক গাড়ি ভাড়া বাবদ ১৫ হাজার টাকা নেয়া। ৭/৮ মাস যাবত তুলি এন্টারপ্রাইজ এ গাড়ি ভাড়ার কাজ সকরছে। এ কাজটি বর্তমানে ক্রাউন প্রপারটিজ এন্ড ডেভেলপমেন্ট লি: করছে। তাই মেসার্স তুলি এন্টারপ্রাইজের অভিঙ্ঘতার সনদপত্রটি জাল ও ভুয়া।
উল্লেখ্য, কার্গোভিলেজ, আশপাশ এলাকা, বাহির পার্কিং, গোডাউন, অফিসকক্ষ করিডোর ,টয়লেটসমূহ সমস্ত কার্গোভিলেজ-এর ক্লিনিং কাজ মেসার্স ‘নাহিদ ট্রেডার্স’ গত ২৪.০৪.২০১৭ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত পরিচালনা করে আসছে।
কার্গোভিলেজ জন্মলগ্ন থেকে বিমান বিভিন্ন ঠিকাদারদের মাধ্যমে ক্লিনিং কাজটি করিয়ে আসছে।
আরো উল্লেখ্য যে, ক্লিনিং কাজটির টেন্ডার হওয়ার পরে যে সব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে কতিপয় ঠিকাদার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার জন্য লিখিত অভিযোগ করে জিএম পূর্ত ও প্রকল্প বরাবর। একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত কমিটি প্রধান ডিজিএম হিউম্যান রিসোর্স ডিজিএম কামাল উদ্দিন বিষয়টি তদন্ত করেন। ক্লিনিং এটেন্ডডেন মনি বেগম, ব্যবস্থাপক জনাব আলি, ও ‘তুলি এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহাবুদ্দিন মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ডিজিএম কামাল উদ্দিনকে ম্যানেজ করে। ফলে টেন্ডারে অংশ নেয়া ৭ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আনবোল্ড করে ‘তুলি এন্টারপ্রাইজকে’ টিকিয়ে দেয়। সিপিসি-৩-এর কাছে ‘তুলি এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেয়ার জন্য সুপারিশ করে।
ঠিকাদাররা বিভিন্ন সূত্রে এ খবর পেয়ে টেন্ডারে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তের জন্য পরিচালক প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পরিচালক প্রশাসন বিষয়টি পুন: তদন্তের নির্দেশ দেন।
বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা ম্যানেজার ইন্ড্রাট্রিয়াল রিলেশন মজিবর রহমানের কাছে ‘তুলি এন্টারপ্রাইজ মালিক শাহাবুদ্দিন ও ক্লিনার এটেন্ডডেন্ট, জামায়াতের রোকন মনি বেগম, ম্যানেজার জনাব অলি ‘তুলি এন্টারপ্রাইজের পক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার পায়তারা করছে। পূর্বের তদন্ত কর্মকর্তা ডিজিএম কামাল উদ্দিনকে যেভাবে ম্যানেজ করা হয়েছিল ঠিক সেই কায়দায় বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা মজিবর রহমানকেও ম্যানেজ করার পায়তারা অব্যাহত আছে বলে ঠিকাদাররা অভিযোগ করেন।
এব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা মজিবর রহমান ‘একুশে বার্তা’কে জানান সঠিক তদন্ত করে সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে, কারো পক্ষে পক্ষপাত্বি করার সুযোগ নেই। সত্য ঘটনাই তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে আনা হবে।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।