শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০২:১৬ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
শাহজালাল বিমানবন্দরে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার মধ্যেও জাপানি প্রজেক্ট অফিসে দুই দফায় ভয়াবহ চুরি : বিমানবন্দর থানায় দুটি জিডি : ডিডি মোশাররফ বললেন বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে : তদন্ত কমিটি গঠন প্রক্রিয়াধীন

বিশেষ সংবাদদাতা : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের ভিতরে ভিভিআইপির দক্ষিণ পাশে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যদিয়েও জাপানি নিপ্পন কোরির প্রজেক্ট অফিসে দুই দফায় ভয়াবহ চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রথম দফা চুরির ঘটনায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় গত ১২ জানুয়ারি একই প্রজেক্ট অফিসে দ্বিতীয় দফা চুরির ঘটনা ঘটেছে । জাপানি নিপ্পন কোরির প্রজেক্ট ম্যানেজার তাশিহিও বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় দুটি জিডি করেছেন। শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কোন তদন্ত কমিটি গঠন করেনি। জাপানি কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে চুরির ঘটনা জানালেও শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক, উপপরিচালক কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেননি বলে জানা গেছে। সংঘবদ্ধ চোরের দল প্রায় ৩ কোটি টাকার সরন্ঞাম চুরি করে নিয়ে গেছে বলে বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ চুরির ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে , হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতো একটি স্পর্শকাতর বিমানবন্দরে যেখানে যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের বডি স্ক্যান করে পর্যন্ত প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়, যেখানে ৮ নং হ্যাংগার গেট দিয়ে মানব পুরহিত পায়ের মুজা পর্যন্ত চেক করা হয়, যেখানে শতাধিক ভিডিও ক্যামেরা কার্যকর রয়েছে- ঠিক সেখানে জাপানের নিপ্পন কোরি কোম্পানির বিমানবন্দরের প্রজেক্ট অফিসে দুই দফায় চুরি হয়েছে। প্রথম দফা চুরির ঘটনা ঘটে গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে। ২৬ ডিসেম্বর উক্ত চুরির ঘটনা বিমানবন্দরের উপপরিচালক, প্রধান প্রকৌশলী , সংশ্লিষ্ট দুই তত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে জানিয়েছেন জাপানি নিপ্পন কোরির প্রজেক্ট ম্যানেজার। ২৭ ডিসেম্বর বিমানবন্দর থানায় জিডি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, আর দ্বিতীয় দফা চুরির ঘটনা ঘটে গত ১৩ জানুয়ারি। দুটি চুরির ঘটনায়ই বিমানবন্দর থানায় জিডি করা হয়েছে। জাপানি নিপ্পন কোরি কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার তোশিহিও বাদী হয়ে জিডি দুটি করেছেন। প্রথম দফার জিডি নম্মর- ১১২১ তারিখ- ২৭-১২-২০১৭ আর দ্বিতীয় দফায় চুরির ঘটনার জিডি নম্বর- ৫৫০ তারিখ ১৩-০১-২০১৮। উক্ত চুরির ঘটনা বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কাজি ইকবাল করিম এবং উপ-পরিচালক মোশাররফ হোসেনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌমলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সিভিল ডিভিশন) একেএম মাকসুদুল ইসলাম, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইএম বিভাগ মো. আব্দুল মালেকসহ সংশ্লিষ্টদের চুরির ঘটনার বিষয়ে দাপ্তরিক চিঠির অনুলিপি দিয়ে অবহিতকরন করা হয়েছে।
উক্ত চুরির ঘটনায় জাপানি নিপ্পন কোরি কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার বিমানবন্দর থানায় লিখিত জিডির কপিতে উল্লেখ করেছেন, গত ২৫ ডিসেম্বও এবং গত ১২ জানুয়ারি চোরের দল জানালার গ্রীল কেটে এবং জানালা ভেংগে ভিতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন রুম থেকে পণ্য চুরি করে। জিডির কপিতে পন্যের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে ল্যাপটপ ,ডেক্সটপ, সিপিউ, ইউপিএসসহ অন্যান্য পন্য।বিমানবন্দরের উপপরিচালক এবং প্রধান প্রকৌশলীকে চুরির ঘটনার জানানোর অনুলিপির কপিতেও উক্ত পণ্য চুরির কথা বলা হয়েছে।
বিমানবন্দরের রানওয়ের ভিতরে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যস্থার মধ্যেও চুরির ঘটনার কথা স্বীকার করে শাহজালাল বিমানবন্দরের উপ-পরিচালক মোশাররফ হোসেন জানান, জাপানি প্রজেক্ট অফিসটি বিমানবন্দরের রানওয়ের ভিতরে ভিভিআইপির দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। তিনি জানান , জাপানের নিপ্পন প্রজেক্ট অফিসে কোন বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। দ্বিতীয় দফা চুরির ঘটনট ঘটার পর জাপানের ওই প্রজেক্ট অফিসে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে , চব্বিশ ঘন্টা ডিউটি করার জন্য প্রতি শিফটে ২ জন করে মোট ৬ জন অস্ত্রসহ আনসার বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে। ডিডি মেশাররফ আরো জানান, এ ব্যাপারে এখনও তদন্ত কমিটি গঠিত হয়নি। তবে তিনি স্বীকার করেন, প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কাজি ইকবাল করিমের সেল ফোনে ১৪ জানুয়ারি ১১.৫৩ মিনিটে কল করলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।