মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ১২:৪২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
প্রেস ক্লাবের সামনে নন-এমপিও শিক্ষকদের টানা ৯ দিন অনশন চলছে

একুশে বার্তা প্রতিবেদন : আগামী ২৩ জুনের মধ্যে এমপিওভুক্তির বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে সুষ্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত না হলে নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা ‘অনশনসহ কঠোর আন্দোলনে’ যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। রাজধানীর জাতয়ী প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচির নবম দিনে সোমবার তারা এ কথা বলেন।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সোমবার সকালে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ‘নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন।’ জাতীয় প্রেস ক্লাবের উল্টো দিকের সড়কে তারা অবস্থান নেন। ১০ জুন থেকে টানা নবম দিনের মতো আন্দোলন করছেন তারা। শিক্ষকরা ‘লাগাতার’ কর্মসূচি বললেও পুলিশ তাদের সেখানে বেলা ২টার পর আর অবস্থান করতে দিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে শিক্ষকরা প্রতিদিন বেলা ১১টার মধ্যে এসে কর্মসূচি পালন করে ২টার দিকে চলে যান। তবে সোমবার থেকে দিনভর অবস্থান শুরু করেছেন তারা।

‘নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনে’র সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার সমকালকে বলেন,’ঈদের ছুটির কারণে আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত সারাদেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ। এর মধ্যে যদি সরকার কোনো সিদ্ধান্তে না আসে, তাহলে আমরা বাধ্য হব অনশনসহ কঠিন কোনো কর্মসূচিতে যেতে।’ রোজা ও ঈদের সময়টাতে তারা আধাবেলা কর্মসূচি দিলেও সোমবার থেকে লাগাতার অবস্থানে গেছেন বলে জানান এই নেতা।

এর আগে একই দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচিতে নামে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনশন করার পর প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে তারা অনশন ভঙ্গ করে ফিরে যান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা তখন তাদের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দেন।

এবারের ২০১৮-১৯ বাজেটে এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুষ্পষ্ট কিছু না থাকায় শিক্ষকরা আবার আন্দোলনে নামেন। এরপর ১১ জুন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে। বাজেটে উল্লেখ না থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেটা থেকেই এমপিওভুক্ত করা হবে।

তবে আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে একাধিকবার আশার কথা শুনেছেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় এখন মন্ত্রীর কোনো কথায় তারা আশ্বস্ত নন।

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১২ জুন এমপিও ‘নীতিমালা-২০১৮’ ঘোষণা দেয়। এ নীতিমালা নিয়েও আন্দোলনরত শিক্ষকেরা আপত্তি জানিয়েছেন। আহমেদুল আশিক নাদিম নামের একজন শিক্ষক বলেন, যে নীতিমালা, সেটার বাস্তবায়ন করতে গেলে সারাদেশের ৫০০ স্কুলও এমপিওভুক্ত হবে না।

সোমবার কর্মসূচি চলাকালে সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার  বলেন,’বিভিন্ন জেলা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা ঢাকামুখী হচ্ছেন। সবার উপস্থিতিতে এ আন্দোলন জোরালো করে তোলা হবে।’

জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫ হাজার ২৪২টি। এসব প্রতিষ্ঠানে এক দশকেরও বেশি সময় থেকে বিনা বেতনে পাঠদান করছেন-এমন শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। ছয় বছর বন্ধ থাকার পর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সর্বশেষ ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ১ হাজার ৬২৪টি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজকে এমপিওভুক্ত করে।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।