শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
এশিয়ার মান রাখলো জাপানিরা : একেই বলে নিয়তি

খেলা ডেক্স :এশিয়ার মান রাখলো জাপানিরা। একেই বলে নিয়তি। জীবনের হয়তো সবচেয়ে উদ্বিগ্ন ৩ মিনিট কাটলো জাপানিজদের। ০-১ গোলে পিছিয়ে ম্যাচের যোগ করা সময়ের ৩ মিনিট মাঠে জাপানিজ খেলোয়াড়রা একপ্রকার হেঁটে হেঁটেই নিজেদের পায়ে বল ধরে রাখলেন। আর অপর ম্যাচে সেনেগালের বিপক্ষে কলম্বিয়ার জয়ের খবর পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়লো জাপানিজরা। জটিল অঙ্ক মিলিয়ে শেষ ষোলো রাউন্ডের টিকিট পেলো জাপান। গতকাল পোল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলে হার দেখে তারা। গ্রুপের অপর ম্যাচে সেনেগালকে ১-০ গোলে হারায় কলম্বিয়া।

এতে পরের রাউন্ড নিশ্চিত হয় কলম্বিয়া ও জাপানের। এবারের বিশ্বকাপে ‘এইচ’ গ্রুপের দিকে আলাদা নজর ছিল দর্শকদের। প্রায় সমশক্তির চার দল খেলছিল ‘এইচ’ গ্রুপে। আর আসরের প্রথম পর্বের শেষটায় সবচেয়ে নাটকীয় ছবিটা এই গ্রুপেরই।  বিশ্বকাপে এবারই প্রথম যুক্ত হয়েছে ‘ডিসিপ্লিনারি’ নিয়ম। এতে জাপানের সমান ৪ পয়েন্ট ও চার গোল নিয়েও বেশি হলুদ কার্ড দেখার কারণে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় সেনেগাল।

এশিয়ার একমাত্র দল হিসেবে রাশিয়া বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে উঠলো জাপান। গতকাল ভলগোগ্রাদ অ্যারেনায় পোল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলে হেরেও দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে সামুরাই ব্লু’রা। সামারা অ্যারেনায় ‘এইচ’ গ্রুপের অপর খেলায় সেনেগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়নের আসনে বসে কলম্বিয়া। জাপান ও সেনেগালের পয়েন্ট ও গোল ব্যবধান সমান হলেও ফেয়ার-প্লে পয়েন্টে এগিয়ে থাকায় দ্বিতীয় স্থানে থেকে শেষ ষোলোতে পা রাখে জাপানিজরা। হেড-টু-হেডে কেউ কাউকে হারাতে পারেনি। তিন ম্যাচে জাপান ৪টি ও সেনেগাল ৬টি হলুদ কার্ড দেখে।

৫৯ মিনিটের মাথায় ফ্রি-কিক থেকে পাওয়া সুযোগে জাপানের জালে বল পাঠান পোলিশ ডিফেন্ডার জ্যান বেদনারেক। বল দখলে জাপান ও পোল্যান্ড দুইদলই ছিল প্রায় সমানে সমান। গোলশূন্য প্রথমার্ধে গোলমুখ তাক করে দুইদলের খেলোয়াড়রা পাঁচটি করে শট নেয়। এর মধ্যে পোল্যান্ডের মাত্র একটি প্রচেষ্টা ছিল সরাসরি গোলমুখে। প্রথমার্ধে দুর্দান্ত একটি সেভ প্রদর্শন করেন জাপান গোলরক্ষক ইজি কাওয়াশিমা। ক্রস থেকে উড়ে আসা বলে হেড করেন পোলিশ ফরোয়ার্ড কামিল গ্রোসিকি। বল গোললাইন অতিক্রম করার মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে পড়ে দলকে রক্ষা করেন কাওয়াশিমা। অন্যদিকে প্রথম ৪৫ মিনিটে তিনটি সেভ করেন পোলিশ গোলরক্ষক লুকাস ফাবিয়ান্সকি।

শেষ ষোলোতে ‘জি’ গ্রুপের রানার্সআপদের মুখোমুখি হবে জাপান। ‘জি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়নকে মোকাবিলা করবে সেনেগাল। ‘জি’ গ্রুপ থেকে প্রথম দুই ম্যাচ জিতেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত করে দুই ফেভারিট ইংল্যান্ড ও বেলজিয়াম।

‘এইচ’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায় ৩ ম্যাচে দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট কলম্বিয়ার। সমান ১ জয় ও ১ ড্র ও ১ হারে জাপান ও সেনেগালের পয়েন্ট ৪। শেষ ম্যাচে জয়ের দেখা পায় রবার্ট লেভানদোস্কির পোল্যান্ড।

এবারের আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই কলম্বিয়াকে (২-১) হারিয়ে ইতিহাস গড়ে জাপান। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আমেরিকান দলের বিপক্ষে এশিয়ান দলের এটাই প্রথম জয়ের রেকর্ড। দ্বিতীয় ম্যাচে সেনেগালের বিপক্ষে দুই দফায় পিছিয়ে থেকেও ২-২ গোলের রোমাঞ্চকর ড্র করে জাপান। সেনেগাল (২-১) ও কলম্বিয়ার কাছে হেরে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিদায় নেয় পোল্যান্ড। জাপানের কাছে হারের পর পোল্যান্ডকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে নকআউট পর্বের আশা বাঁচিয়ে রাখে কলম্বিয়া।

১৯৯৮ আসর থেকে বিশ্বকাপে নিয়মিত খেলছে জাপান। দুইবার (২০০২ ও ২০১০) দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলে সামুরাই ব্লু’রা। গত দুই আসরে বাছাইপর্বে বাদ পড়া পোল্যান্ডের সেরা অর্জন ১৯৭৪ ও ১৯৮২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। পোল্যান্ডের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে জাপান। এর আগে দুইবারের সাক্ষাতেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। সবশেষ ২০০২ বিশ্বকাপের আগে প্রীতি ম্যাচে পোল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারায় জাপান।

সেনেগালকে বিদায় করলো কলম্বিয়া
পোল্যান্ডের বিপক্ষে উড়ন্ত জয়ে গোলের সূচনা করেন কলম্বিয়ার বার্সেলোনা ডিফেন্ডার ডিফেন্ডার ইয়েরে মিনা। সেনেগালের বিপক্ষে ৭৪ মিনিটে জয়সূচক একমাত্র গোলটি আসে তার কাছ থেকেই। মিনার গোলটিই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। প্রথমার্ধের দুইদলের কেউই গোলের দেখা পাননি। বল পজিশনে কলম্বিয়া এগিয়ে থাকলেও ভালো আক্রমণ করে সেনেগাল। তাদের চারটি শটের মধ্যে দুইটি ছিল গোলমুখে। সেনেগালের ডিফেন্সের সামনে মাত্র একবার গোলে শট নিতে পারেন রাদামেল ফ্যালকাওরা। ইনজুরিতে পড়ে ৩২ মিনিটে মাঠ ছাড়েন কলম্বিয়ান তারকা হামেস রদ্রিগেজ।

এর আগে একবারই মুখোমুখি হয় সেনেগাল ও কলম্বিয়া। ২০১৪ বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে কলম্বিয়ার বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে থেকে ২-২ সমতায় খেলা শেষ করে সেনেগাল। আফ্রিকার দেশ সেনেগালের এটি দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। ২০০২ বিশ্বকাপ অভিষেকেই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে বাজিমাত করেছিল তারা। ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলা কলম্বিয়ার সেরা সাফল্য ২০১৪ আসরের কোয়ার্টার ফাইনাল।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।