শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৫:২১ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৫ শতাধিক

ডেক্স রিপোর্ট : করোনা ভাইরাসে চীনে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৫০০। গতকাল বুধবার এ সংখ্যা ৪৯০ ছাড়িয়ে গেছে। ওদিকে হংকংয়ে একজন এই ভাইরাসে মারা যাওয়ার পর সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিমান সংস্থা তাদের ফাইট স্থগিত করেছে। জাপানের একটি ক্রুজ শিপকে কুয়ারেন্টাইন বা বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। ওই জাহাজে ১০ জনের দেহে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। গত  মঙ্গলবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলেছে, এদিন মারা গেছে কমপে ৬৫ জন। এ নিয়ে ওইদিন মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৯০। এর মধ্যে বেশির ভাগই উহান শহরের। এই শহর থেকেই ডিসেম্বরে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
উহান শহর সফর করে হংকং ফিরে মারা গেছেন ৩৯ বছর বয়সী এক যুবক। এছাড়া চীনের বাইরে গত সপ্তাহে ফিলিপাইনে মারা গেছেন আরো একজন। তিনিও উহান সফরে গিয়েছিলেন। সারা চীনে নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কমপে ৩ হাজার ৮৮৭ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৩২৪।
ওদিকে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে একটি ক্রুজ জাহাজে ১০ জনের দেহে এই ভাইরাস পাওয়া যাওয়ায় একে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে।  জাপানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ওই জাহাজের রয়েছেন কয়েক হাজার আরোহী ও ক্রু। তাদের মেডিকেল পরীায় আরো আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান মিলতে পারে। উল্লেখ্য, ওই জাহাজটিতে রয়েছে প্রায় ৩৭০০ আরোহী ও ক্রু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২৪টি দেশ ও অঞ্চল থেকে আরো ১৭৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ অর্থনীতিতেও বড় রকমের প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য বেশি সমস্যার মুখোমুখি। হোয়াইট হাউজের অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ল্যারি কুদলো বলেছেন, এ মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে প্রথম দফার বাণিজ্যিক চুক্তি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই মহামারির কারণে তা বিলম্বিত হতে পারে। এটাই এই ভাইরাস মহামারি নিয়ে বাণিজ্যের ওপর তিকর প্রভাব সম্পর্কে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম কোনো কর্মকর্তার মন্তব্য। ল্যারি কুদলো বলেছেন, মহামারির ফলে বাণিজ্যিক সরবরাহ চেইনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে চীন কার্যত এখন একঘরে। এর ফলে তার বাণিজ্য মারাত্মকভাবে তিগ্রস্ত হবে। এতে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হোঁচট খাবে ভয়াবহভাবে। অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বহু শহর বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। চীনে সফর অথবা চীন থেকে সফর কঠোর বিধিনিষেধে আটকে আছে। এমন অবস্থায় মঙ্গলবার বিশ্ব বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। তবে করোনা ভাইরাস মহামারিতে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত তিকর প্রভাব এরই মধ্যে ক্রমেই বাড়ছে হংকংয়ে।
হংকংকে বলা হয় এশিয়ার অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। এ সপ্তাহের পরে সেখানে আমেরিকান এয়ারলাইনস গ্রুপ এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ফাইট স্থগিত করা হচ্ছে। হংকংয়ের ক্যাথি প্যাসিফিক এয়ারওয়েজ লিমিটেড যাত্রীদের ওপর নির্ভর করে তাদের ফাইট পরিবর্তন করে। তারা বলেছে, আগামী দু’মাসে তারা শতকরা ৩০ ভাগ কমিয়ে আনবে সমতা। অন্যদিকে চীনের সঙ্গে পুরো সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার দাবিতে হংকংয়ে হাজার হাজার মেডিকেল কর্মীর ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। তাদের একজন চেং (২৬) বলেছেন, আমরা সরকার পতনের আন্দোলন করছি না। আমরা শুধু এই মহামারি বন্ধ করতে চাই। এরই মধ্যে হংকংয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ জন। বিশেষ প্রশাসনের অধীনে থাকা প্রতিবেশী ম্যাকাউ মঙ্গল বার সব ক্যাসিনোর কর্মকান্ড স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এই খাত থেকে সেখানকার অর্থনীতিতে বড় অংকের অর্থ জোগান হয়।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।