রবিবার, ৩০ Jun ২০২৪, ০৮:০৮ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
মন্ত্রণালয়ের তদন্তে সিভিল এভিয়েশনের ভয়ংকর দুর্নীতি প্রমাণিত হবার পরও দুর্নীতিবাজরা স্বপদে বহাল!

বিশেষ সংবাদদাতা : গত ২৫অক্টোবর আরটিভিত্ েও ২৭ অক্টোবর সমকাল পত্রিকায় গেট নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের পর তৎকালীন সিনিয়র সচিব ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এরপর দুর্নীতিবাজচক্রটি গায়েব করেছে গুরুত্বপূর্ন আলামত , অনুমোদন প্রাক্কলন ও নথি এবং বিল সংশ্লিষ্ট পরিমাপবহি।
দুর্নীতির মহাকান্ড পাইপ কান্ড ! মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের জন্য এ সব দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমুলক বিচার হতে হবে।কিন্ত হিতে বিপরীত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেকের নির্দেশনায় অন্যান্য সিনিয়র প্রকৌশলীদের তত্বাবধানে রাতের আধারে নতুন করে নামফলক ও এসএস পাইপের নতুন ডিজাইন স্থাপন করে এবং পুরনো এসএস পাইপের ডিজাইন পরিমার্জন করে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনকে মিথ্যে প্রমাণ করে দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বাচানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সহজ-সরল তদন্তে ৫৩,৫৯,৫১২.৯৭ টাকার আর্থিক অপচয় ও দুর্নীতি প্রমাণিত। উন্নয়নমুলক এ কাজটির একটি আইটেমে সর্ব্বোচ ৫ লক্ষ টাকার এসএস পাইপের বিল পরিশোধ করেছে ৩৩,৭১,৯২ টাকা। অপর একটি আইটেমে এসএস শিট দিয়ে দপ্তরের নাম লিখে বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১২,১৩৩০০ টাকা।বাস্তবে এই আইটেমের মূল্য স্বর্ন দিয়ে লিখলেও এতো মূল্য হওয়ার কথা নয়।সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো কিভাবে একটি প্রকৌশল অধি শাখার মূলফটকে এমন দুর্নীতির ঘটনা ঘটলো? যাহা দেখার কেহ নেই? নাকি টপ টু বটম দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। প্রাক্কলনে ক্রুটি থাকলেও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন অনুযায়ী ভেরিয়েশন অর্ডার হোপ থেকে অনুমোদন নিয়ে সংশোধিত কার্যাদেশ জারি করে অর্থ সাশ্রয় করার সুযোগ ছিল। কিন্ত দুর্নীতিবাজ চক্রটি তা করেনি। যেহেতু এয়ারপোর্ট কেপিআই জোন হওয়ায় সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারে না, তাই ওই সকল জোনে আরো ভয়ংকর দুর্নীতি হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রকৌশলী বলেন, এই কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে তা বলার অবকাশ রাখে না। তার উদাহরণ হলো এই কাজের মধ্যে পুরনো বাগান নতুন করে করা হয়েছে দেখিয়ে বিল উত্তোলন করে নেয়া। কাজটি সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘তানভীর ট্রেডার্স’। এ কাজের প্রাক্কন তৈরি থেকে কারিগরি অনুমোদন এবং বাস্তবায়ন পর্যায়ে হয়েছে ভয়াবহ দুর্নীতি- যা বালিশ কান্ডকে হার মানিয়েছে। এ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল স্তরের প্রকৌশলীরা সিএএবির প্রকৌশল (সিভিল) শাখার দুর্নীতির মূলহোতা।
গোপন সূত্রে জানা যায়, পাইপ কান্ডের মূল হোতা জনাব কামরুজ্জামান সিনিয়র উপসহকারি প্রকৌশলী (সিভিল) গত ১০ বছরে দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা , গড়েছেন বাড়ি-গাড়ি, ফ্লাট-প্লট, স্ত্রী,শ্যালক ও নিজের একাউন্টে জমিয়েছেন কোটি টাকা। খুররমের সাথে সখ্যতার কারণে গত ১০ বছর যাবত সিভিল ডিভিশন-২-তে কর্মরত আছেন। ইতিপূর্বে দুইবার বদলি হলেও ৬ মাসের মধ্যে ফেরত আসেন পূবের দপ্তরে। খুররমের সকল প্রাক্কলন প্রস্তুত, কাজ বাস্তবায়ন তদারকি এবং পরিমাপবহি লেখেন এ প্রকৌশলী।
গোপন সূত্রে আরো জানান যে, পাইপ কান্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুজ্জামান ও ঠিকাদার খুররম আমেরিকার গ্রীনকার্ডধারী। নির্বাহী প্রকৌশলী পালিয়ে গেছেন আমেরিকা। প্রাক্কলন তৈরি থেকে কারিগরি অনুমোদন প্রক্রিয়ায় জড়িত প্রকৌশলীরা বালিশ কান্ডের মতো শাস্তির ভয়ে আতংকিত। তাছাড়া ২/৩ জন প্রকৌশলী অবৈধ সম্পদ হস্তান্তরের জন্য চেষ্টা করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিভিল এভিয়েশনের এক কর্মকর্তা জানান, সিভিল বিভাগ দুর্নীতিপরায়ণ প্রকৌশলীদের শীর্ষে মাকসুদুল ইসলাম তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, শহিদুজ্জামান, নাসিম-আল ইসলাম নির্বাহী প্রকৌশলী ( চলতি দায়িত্ব), জহিরুল ইসলাম সহকারি প্রকৌশলী, আব্দুল্লাহ আল মামুন সহকারি প্রকৌশলী চলতি দায়িত্ব, মো. কামরুজ্জামান সিনিয়র উপসহকারি প্রকৌশলী দুর্নীতির শীর্ষে অবস্থান করছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্ব পেয়ে আরো বেশি বেপোরোয়া নাসিম-আল ইসলাম। গত ২২.০৯-২০ তারিখে নাসিম-আল ইসলাম কর্তৃক একদিনেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘তানভীর ট্রেডার্স’-এর অনুক’লে ৬ কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে , সবগুলো কাজেই অতীতের চরম দুর্নীতির কুফল। তারিখ ২২.০৯.২০ নথি নং-৩০.৩১.০০০০.৪২২.০২.০০৭..২০.৩৭১৬ এর মাধ্যমে ‘রিমুভিং হিপ আর্থ ইনক্লুডিং লেভেলিং ড্রেসিং ফ্রম সাইড স্ট্রিফ অব রানওয়ে উইথ আদার এলাইড ওয়ার্কার্স এট হিসা , কুর্মিটোলা, ঢাকা নামে আপর ৫টি কাজের সাথে এই ডেভেলপমেন্ট কাজটিও ‘তানভীর ট্রেডার্স’কে দেয়া হয়। দেখা যাক রিমুভিং হিপ এর নামে কি দুর্নীত ঘটিয়েছে-(ক) কাজের নাম দেখে মনে হবে রানওয়ের দুই পাশ থেকে হিপ আর্থ সরানো হবে এবং ওই স্থানে লেভেলিং ড্রেিিসং করা হবে।বাস্তবে রানয়ের দুই পাশে এ ধরনের কোন হিপ আর্থ প্রতিবন্ধকতা নেই। কারণ ২০১৪-১৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক রানওয়ের দুই পার্শে সুন্দরভাবে লেভেলিং- ড্রেসিং কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। (খ) কাজটির ৩টি আইটেম আছে , এরমধ্যে হিপ আর্থ কাটিং বাবদ ৩,২১,১০৯.৭১ টাকা, আর হিপ আর্থ সরানো ব্যয় বাবদ দেখানো হয়েছে ১৩,৭৩,৬৩৬.১২ টাকা। এ ছাড়া ঘাস কাটাসহ ড্রেসিং বাবদ দেখানো হয়েছে ৪৭,৬৫,৮৮৬.২৫ টাকা । অর্থাৎ হিপ আর্থ কাটিং-এর আড়ালে ঘাস কাটা নামক দুর্নীতি।
উল্লেখ্য যে, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সকল ঘাস কাটার কাজ এবং ক্লিনিং কাজ পরিচালক শাহজালালে হেডে ২০-২১ অর্থবছরে করা হয়েছে।
(গ) এই কাজটির কার্যাদেশ মুলত: পরস্পর যোগসাজশে সরকারি অর্থ লুটপাটের হীন উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
অনুরূপভাবে এই দুর্নীতিবাজ চক্রটির মাধ্যমে রানওয়ে থেকে রাবার ডিপোজিট ওঠানো, রানওয়ে এ্্রপ্রোন, ট্যাক্সিওয়ে পেন্টিং এর নামে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ঠিকাদার খুররম।
সিএএবির প্রকৌশল বিভাগে ‘সীমাহীন দুর্নীতি’ চলছে তার একটি নমনুা মাত্র। কে দেখবে এ দুর্নীতি? কে রুখবে এ অপচয়? কে থামাবে এই মহামারি? লাগামহীন দুর্নীতিতে ওষ্ঠাগত উন্নয়ন। পিএন্ডডিকিউএস সার্কেলের মূল গেটের কাজ বাবদ অস্বাভাবিক মূল্যে প্রাক্কলন করে সামান্য একটি কাজ করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক দুর্নীতিবাজ সংঘবদ্ধচক্র। খুররমের বউ দুদকে চাকরি করার সুবাধে ও দুদকের একাধিক উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে সখ্যতার কারণে সিএএবির প্রকৌশল বিভাগ তার হাতের মুঠোয়। খুররম চাইলে যে কাউকে দুদকের মামলায় ফাসিয়ে দিতে পারে। হয়রানির ভয়ে সৎ কর্মকর্তারা মুখ খুলতে নারাজ। কিছু অসাধু প্রকৌশলী এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ‘তানভীর ট্রেডার্সে’র সত্বাধিকারি নাজমুল আলম (খুররম) সিএএবির প্রকৌশল বিভাগে এক আতংকের নাম।এই আতংকবাজ খুররম ও দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীরা মিলে গড়ে তুলেছে সিন্ডিকেড। চলতি অর্থবছরে নামে মাত্র কাজ করে প্রায় শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা। এক দিকে খুররম এই রকম নামে মাত্র কাজ করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা আর করছেন বিদেশে অর্থ পাচার। অপরদিকে দুর্নীতিপরায়ন প্রকৌশলীরা পাচ্ছেন কমিশন, পদোন্নতি ও প্রাইজ পোস্টিং, এ ছাড়া দুদকের বিশেষ সহানুভুতি। দুদকের সহায়তায় এসব প্রকৌশলীরা দানবের ভুমিকায় অবতীর্ন হয়েছেন। এখনই এদের নির্মুল করতে না পরলে রাষ্ট্রের এই গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠানটির মান নিয়ে সংশয় দেখা দেবে। মানহীন এ সব উন্নয়নের আড়ালে দুর্নীতির উন্নয়ন উৎসব বন্ধ করা উচিত বলে মনে করেন এভিয়েশন বিশেঙ্ঘরা।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।