মঙ্গলবার, ১৮ Jun ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
কেলেংকারীতে জড়ালেন বেবিচকের সেই রাশিদা

একুশে বার্তা ডেক্স : বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) উপ-পরিচালক (ট্রেনিং ও সার্টিফিকেশন) রাশিদা সুলতানা চাকুরির শুরু থেকেই নানা কেলেংকারীর জন্ম দিয়ে চলেছেন। দিন যতো গড়িয়েছে, তিনি ততোই বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন। তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও মান্য করেন না। তার বিতর্কিত কর্মকান্ড প্রতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বারবার।

ফলে তিনি একাধিকবার সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছেন। কিন্তু বরাবরই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় তিনি দিনে দিনে বেপরোয়া চাল-চলনের চরমে পৌঁছে যান। তবুও বেবিচক তার বিরুদ্ধে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থাই নিতে পারেনি। তাই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তার খুঁটির জোর কোথায়। কিন্তু কেউ-ই এ বিষয়ে খোলসা করে কিছুই বলছে না।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাশিদা সুলতানা যতোবারই অঘটন ঘটিয়েছেন- ততোবারই অদৃশ্য ইশারায় তার বিরুদ্ধে স্রেফ তদন্ত কমিটি গঠন করে বেবিচক  দায় সারতে চেয়েছে। কখনও কোনো তদন্ত কমিটির রিপোর্টই আলোর মুখ দেখেনি, তার বিরুদ্ধে কোনো রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। এই সেদিনও একই কাহিনীর পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। রাশিদার বিরুদ্ধে ৫টি গুরুতর অভিযোগ উঠে। কর্তৃপক্ষ ঘটনা তদন্তে ২৬ মে, ২০২৪ ২ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

স্মারক নং- ৩০.৩১.০০০.২০১.১৭৬২৫। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় পরিচালক (প্রশাসন) আবু ছালেহ মো: মুসা জঙ্গীকে এবং সদস্য করা হয় উপ-পরিচালক (প্রকিউরমেন্ট, স্টোর ও সাপ্লাই) আব্দুল করিম মোল্লাকে। রাশিদা সুলতানার বিরুদ্ধে উত্থাপিত ৫ গুরুতর অভিযোগ হলো: (১) সহকারী পরিচালক (এটিএম) ও সৈয়দপুর বিমান বন্দরের ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল, ধর্ম তুলে ‘মালাউন’ বলে কটাক্ষ করা ও শারিরীকভাবে আঘাতের হুমকি। (২) বিগত ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) যথাসময়ে জমা প্রদান না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা তলবের জবাব প্রদান না করা। (৩) প্রাক্তন সদস্য (নিরাপত্তা) আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বোর্ডের নিকট হাজির না হওয়া। (৪) মোটর পরিবহন চালক হিসেবে এভসেক বিভাগে কর্মরত থাকা অবস্থায় মো: কাওসার আলীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও অশোভন আচরণ প্রদর্শন, বিধি বহির্ভূতভাবে দাপ্তরিক গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার এবং বিনা অনুমতিতে দাপ্তরিক গাড়ি নিজের কাছে রাখা। (৫) সৈয়দপুর বিমানবন্দরে ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদানের পর থেকে সহকারী পরিচালক (এটিএম) সুপ্লব কুমার ঘোষের কাছ থেকে চাহিদা মতো উপহার সামগ্রী না পেয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে গালাগালি ও লাঞ্ছিত করা।

এই ৫ অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত এই তদন্ত কমিটিকে ২০ কর্মদিবসের মধ্যে মতামতসহ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়। কিন্তু ১২ জুন, ২০২৪ আকস্মিকভাবে সেই কমিটি বাতিল করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।  স্মারক নং- ৩০.৩১.০০০০.২০২১.৫৭.০০১.১৭.৭৫৫। সদস্য (এটিএম) এয়ার কমোডর এ কে এম জিয়াউল হককে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন: পরিচালক (সিএস) মো: মাহবুবুর রহমান, উপ-পরিচালক (পার্সোনেল) মোহাম্মদ সোহেল কামরুজ্জামান।

কমিটিকে অভিযোগসমূহের তদন্তপূর্বক মতামতসহ ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হলেও কমিটি পরদিনই অর্থাৎ ১৩ জুন, ২০২৪ তড়িঘড়ি করে কর্তৃপক্ষর চেয়ারম্যান বরাবর প্রতিবেদন জমা দিয়ে দেয়। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এখানেই। প্রশ্ন উঠেছে, এক কর্মদিবসের মধ্যেই কমিটি কিভাবে ৫ গুরুতর অভিযোগের তদন্ত সারলেন। পুরো বেবিচক জুড়ে আলোচনা হচ্ছে, তবে কি এবারও রাশিদা সুলতানাকে দায় থেকে বাঁচিয়ে দেওয়ার এটি আরেক অপপ্রয়াস!

বলাবলি হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ তাকে যেনতেনভাবে দায়মুক্ত করে পদোন্নতি দেওয়ার কৌশল আঁটছে।

 

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।