একুশে বার্তা প্রতিবেদন : টাংগাইলে আওয়ামীলীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ আগামী ২২ জানুয়ারি। ২৮ নভেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিনে সাংসদ আমানুর রহমান রানা অসুস্থতার জন্য আদালতে হাজির না হওয়ায় চার বারের মতো এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছলো। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ থেকে অসুস্থজনিত কারণে এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি ঘাটাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের বর্তমান এমপি আমানুর রহমান রানাকে আদালতে হাজির না করায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
জানা যায়, ২৮ নভেম্বর সোমবার টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনছুর মিয়ার আদালতে ফারুক হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য ছিল। কিন্ত এমপি রানাকে পাইলসের অপরেশন করানো হয়। এতে তিনি অসুস্থতার কারণে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি থাকায় আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২২ জানুয়ারি নতুন তারিখ ধার্য করেন। এর আগেও এমপি রানাকে অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজির না করায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর এমপি রানা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে আছেন। বেশ কয়েক দফা উচ্চ ও নিম্ন আদালতে আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে এবং গত বছর ৩ ফেব্রুয়ারি এমপি রানা ও তার তিন ভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। তদন্ত চলাকালে ২০১৪ সালের ১১ আগস্ট এমপি আমানুর রহমান খান রানার ঘনিষ্ঠ কর্মী আনিসুর রহমান রাজা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে তিন দফায় মোট ১৫ দিন রিমান্ড শেষে ওই বছরের ২৭ আগস্ট টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদত হোসেনের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
অপর আসামি মোহাম্মদ আলী গ্রেফতার হন একই বছরের ২৪ আগস্ট। তিনি দশদিনের রিমান্ড শেষে ৫ সেপ্টেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নাজমুন নাহারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। উভয় আসামির জবানবন্দিতে ফারুক আহমেদ হত্যাকাণ্ডে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার ছোট ভাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করলে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে খান পরিবারের চার ভাইয়ের জড়িত থাকার কথা প্রথম প্রকাশ পায়।
এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে আমানুর রহমান খান রানার অপর ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও টাঙ্গাইল জেলা বণিক সমিতির সভাপতি জাহিদুর রহমান খান কাকন যুক্ত বলে মোহাম্মদ আলী তার জবানবন্দিতে প্রকাশ করেন।