শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪:৩৭ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
সিএএবি : সেই ৬ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না ! প্রকৌশলী সেলিম-এনামুলের জাল শিক্ষাসনদের তদন্ত মাঠে মারা গেছে : কোর্ট ‘কনডেম্প’ মামলার পরও প্রকৌশলী এনামুলের সিনিয়রটি বহাল !

বিশেষ সংবাদদাতা : বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনের ইএম বিভাগে কর্মরত ৬ প্রকৌশলী সিনিয়রটি জালিয়াতি করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এ দিকে দুদকের চিঠি গায়েবের পরও দুদক ও সিএএবির প্রশাসন কোন পদক্ষে নিচ্ছে না। ফলে পার পেয়ে যাচ্ছে ওই ৬ প্রকৌশলী। তাদেরকে ভুতাপেক্ষ তারিখ থেকে সিনিয়রটি দেয়ায় রাজস্ব খাতের প্রকৌশলীরা ফুসে ওঠছেন, তারা আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানা গেছে। ভুতাপক্ষে তারিখ থেকে ওই ৬ প্রকৌশলীর সিনিয়রটি দেয়ার গত ২৩ বছরে সরকারের লাখ লাখ টাকা গচ্চা গেছে। কিন্ত প্রশাসন ওই ৬ প্রকৌশলীর লাগাম টেনে ধরছে না। ফাইল থেকে গুরুত্বপূর্ন ডকুমেন্ট গায়েব করে দেয়ার কথাও শোনা যায়।
ওই ৬ প্রকৌশলীর মধ্যে আছালত হোসেন খান সবচেয়ে বেশি বিত্তবৈভবের মালিক। রাজধানীর উত্তরায় তার একাধিক ফ্লাট রয়েছে বলে তার সহকর্মীরা বলে বেড়ান। এটাকে আড়াল করার জন্য তিনি উত্তরাতেই ভাড়া থাকেন বলে বলে বেড়ান। উত্তরার ৩ নং সেক্টরে বাড়ি, ১৮ নং সেক্টরে দুটি ফ্লাট, দামি প্রিমিও গাড়িতে চষে বেড়ান তার পরিবার। আতিক কন্সট্রাকশনের সাথে যোগসাজশে ঢাকার বাইরের বিমানবন্দরে ঠিকাদারি কাজ না করেই , আবার নামকাওয়াস্তে কাজ করিয়ে বিল দিয়ে শতকরা হারে টাকা কামিয়ে প্রকৌশরী আছালত হোসেন খান দুহাতে টাকা কামিয়ে যাচ্ছেন। যা দুদকের তদন্তে বের হয়ে আসতে পারে।
এ ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন সচিবের আদেশকে থোরাইকেয়ার করছে ওই ৬ প্রকৌশলী। আমলে নেয়া হয়নি তাদেও বিরুদ্ধে অভিযোগের পর অভিযোগ, ফলে সুুিবচার না পেয়ে এ ক্ষোভে অনেকে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। ওই ৬ প্রকৌশলীকে সিনিয়রটি জালিয়াতি করে পদোন্নতিও দেয়া হয়েছে। আবারও পদোন্নতি দিয়ে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী করার পায়তারা করা হচ্ছে। এ জালিয়াতির সাথে সিভিল এভিয়েশনের প্রশাসন জড়িত বলে অভিযোগ ওঠেছে।
অভিযুক্ত এই ৬ প্রকৌশলী হচ্ছেন : নির্বাহী প্রকৌশলী জাকারিয়া হোসেন, সুভাশিষ বড়–য়া, সহকারি প্রকৌশলী আছালত হোসেন খান, শাহিনুর আলম, সফিকুল আলম, আয়শা হক।
জানা যায় , ১৯৯৬ সালে এই ৬ প্রকৌশলীকে তৎকালিন জিয়া বিমানবন্দরের বোর্ডিংব্রীজ প্রকল্পে সিএএবির অর্গানোগ্রামের পদের বাইরে সৃষ্টপদে অস্থায়ীভাবে চাকরি দেয়া হয়। প্রকল্প শেষ চাকরি শেষ হওয়ার নিয়ম। কিন্ত ৫ মন্ত্রণালয়ে বহু দেনদরবার চিঠি চালাচালির পর ওই ৬ প্রকৌশলীর চাকরি শেষ হয়নি। ২০১০ সালে তাদের রাজস্ব খাতে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্ত পুন: নিয়েগের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে ৩০-০৯-২০১২ ইং তারিখে ভুতাপেক্ষ তারিখ অর্থাৎ ১৯৯৬ সাল থেকে তাদেরকে সিনিয়রটি দেয়া হয়। অথচ জনপ্রশাসন সচিবের দাপ্তরিক চিঠিতে বলা হয়েছে,‘ বিধি ৪ এর উপবিধি (১)এর অধীনে কোন কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিকে ভুতাপেক্ষ তারিখ হইতে নিয়মিত করণের কোন সুযোগ নেই।’
ভুতাপেক্ষ তারিখ হতে ৬ প্রকৌশলীকে সিনিয়রটি দেয়ায় সরাসরি রাজস্ব খাতে নিয়োগকৃত প্রকৌশলীদের সাথে সাংক্ষর্ষিক অবস্থা বিরাজ করছে। এ ক্ষেত্র সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী কর্তৃক চেয়ারম্যান বরাবর গত ২৪-০৭-২০০৮ তারিখের দাপ্তরিক চিঠিও আমলে নেয়া হয়নি।
এ নিয়ে সিএএবির চেয়ারম্যান বরাবর কয়েকজন রাজস্ব খাতের প্রকৌশলী একাধিক অভিযোগ দায়ের করার পরও সিএএবি প্রশাসন ‘কম্ভুকর্ন”। চেয়ারম্যান দপ্তরে ওই অভিযোগগুলো যাবার আগেই প্রশাসন বিভাগ থেকে তা গায়েব করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
এ নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের দুদক বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দাপ্তরিক তলবি চিঠি জারি করে। দায়িত্ব দেয়া হয় দুদকের উপপরিচালক মাহফুজাকে। কিন্ত সিএএবির সদর দ্প্তর থেকে দুদকের চিঠি গায়েব করে দেয়া হয়েছে।
এ দিকে সিনিয়রটি জালিয়াতি করে সহকারি প্রকৌশলী ইএম এনামুল হককে পদোন্নতি দেয়ায় আরেক প্রকৌশলী আাবুবকর সিদ্দিক ‘কোর্ট কনডেম্প’ মামলা করেছেন।
প্রকৌশলী এনামুল হক এবং তার আপন ভাই মাহমুদ হোসেন সেলিম জাল শিক্ষা সনদে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ ব্যাপারে সিএএবির প্রশাসন বিভাগ থেকে যশোহর শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর দাপ্তরিক চিঠি জারির পর আরেকটি ডুপ্লিকেড সনদ এনে জমা দিয়েছে প্রকৌশলী সেলিম। সনদ জালিয়াতির বিষয়টি সিআইডি এক্সপার্ট দিয়ে তদন্ত করলে আসল রহস্য বের হয়ে আসবে। সিএএবির প্রশাসন প্রকৌশলী সেলিমের ব্যাপারে সাফাই গাইছেন।
প্রকৌশলী সেলিম সিএএবির তৎকালিন সদস্য প্রশাসনকে ম্যানেজ গত ২৭ নভেম্বরের ডিপিসিতে পদোন্নতি নেয়ার পায়তারা করে। কিন্ত ডিপিসি কমিটির সদস্যদের আপত্তিরমুখে তা ভেস্তে গেছে। আবার ডিপিসি করে প্রকৌশলী সেলিম পদোন্নতি নেয়ার পায়তারা করছে।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।