শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১১:০৭ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা : বরিশাল ও সিলেটে বিমান ঘাঁটি নির্মাণ করা হবে

ডেস্ক প্রতিবেদন: বিমান বাহিনীকে আরও শক্তিশালী ও সক্ষম করে তুলতে বরিশাল ও সিলেটে বিমান ঘাঁটি নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার যশোরে বিমান বাহিনী একাডেমিতে নবীন অফিসারদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে তার বক্তব্যে এই ঘোষণা আসে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বরিশাল ও সিলেটে নতুন দুটি বিমান বাহিনী ঘাঁটি স্থাপনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। আমার বিশ্বাস, এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আরও শক্তিশালী হবে এবং এর সক্ষমতা বাড়বে।’

বিমান বাহিনীতে শিগরিরই বহুমুখী ব্যবহারের উপযোগী নতুন যুদ্ধ বিমান, উন্নত পরিবহন বিমান, আধুনিক প্রশিক্ষণ হেলিকপ্টার, প্রশিক্ষণ বিমান, সিমুলেটর, আন-ম্যানড এরিয়াল ভেহিকল সিস্টেম (ড্রোন), দীর্ঘ ও স্বল্প পাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা রেডার এবং ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য মাঝারি পাল্লার মিসাইল যুক্ত করার কথা বলেন তিনি। এর আগে নবীন অফিসারদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং পদক, সনদপত্র ও ফ্লাইং ব্যাজ বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিমান বাহিনী সদস্যদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি দেশ ও জাতির যে কোন প্রয়োজনে ভূমিকা রাখতে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশে ও বিদেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা, উদ্ধার তৎপরতা ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে বিমানবাহিনীর অগ্রণী ভূমিকা পালনের কথা উল্লেখ করেন প্রধামন্ত্রী।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিমান বাহিনীর ‘তাৎপর্যপূর্ণ অবদান’ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমান বাহিনী একাডেমির জন্য বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এই কমপ্লেক্সের কাজ শেষ হলে বিমান বাহিনী একাডেমির কর্মপরিধি বৃদ্ধিসহ প্রশিক্ষণের মান আরও বাড়বে।

সম্প্রতি বিমান বাহিনীতে কে-এইট ডব্লিউ জেট ট্রেনার, ওয়াই এ কে-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান ও এল-৪১০ পরিবহন প্রশিক্ষণ বিমান সংযোজিত হওয়ার কথা মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

তরুণ অফিসারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিমান বাহিনী একাডেমি থেকে যে মৌলিক প্রশিক্ষণ তোমরা গ্রহণ করেছ, কর্মজীবনে তার যথাযথ অনুশীলন ও প্রয়োগের জন্য সব সময় সচেষ্ট থাকবে। সততা, একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তোমরা নিজেদের এমনভাবে গড়ে তুলবে, যাতে তোমরা দেশ ও জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পার।

তরুণ অফিসারদের তিনি বলেন, মনে রাখবে, ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি। নিজেদের কখনই সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন ভাববে না। তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সব সময় চেষ্টা করবে।

বিমান বাহিনীর উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতার প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে আমরা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য দীর্ঘমেয়াদি ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করি। এই গোলের আলোকে আমরা ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীতে সংযোজন করেছি বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ বিমান, পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার।”

প্রযুক্তিগত ও কৌশলগত দিক থেকে বিমান বাহিনী অচিরেই অত্যাধুনিক, পেশাদার ও চৌকস বিমান বাহিনী হিসেবে দেশে ও বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেন।

কুচকাওয়াজে পুরুষদের পাশাপাশি নারী ক্যাডেটদের অংশগ্রহণে নিজের আনন্দের কথা প্রকাশ করে তিনি বলেন, তাদের এই কমিশনপ্রাপ্তি বর্তমান সরকারের নারীর ক্ষমতায়নের দৃঢ় নীতিরই প্রতিফলন।

“আমরা বিশ্বাস করি, জাতীয় অগ্রগতিতে নারীর অংশগ্রহণ অপরিহার্য। এজন্য সশস্ত্র বাহিনীতেও নারীদের ব্যাপকহারে অংশগ্রহণের ব্যাপারে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”

সম্প্রতি বিমান বাহিনীর দুই নারী পাইলট জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনের জন্য কঙ্গোতে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।”

রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে ৭৪তম বাফা কোর্সে ৬৮জন ফ্লাইট ক্যাডেট এবং ডিরেক্ট এন্ট্রি ২০১৭ কোর্সের ১১ জন সহ মোট ৭৯ জন কমিশন লাভ করেছেন। এর মধ্যে ১৩ জন মহিলা ক্যাডেটও কমিশন লাভ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী ৭৯জন নবীণ অফিসারকে ফ্লাইং ব্যাজ পড়িয়ে দেন; প্রধানমন্ত্রী ফ্লাইপাস্ট দেখেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছালে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার, একাডেমির কমান্ড্যান্ট এয়ার কমোডর এ এস এম ফখরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।