রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
মন্ত্রণালয়-সিএএবি ‘কম্ভুকর্ন ’ : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ভেস্তে গেছে : চালু হচ্ছে না ঈশ্বরদী বিমানবন্দর

বিশেষ সংবাদদাতা : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদেশ ভেস্তে গেছে, রানওয়ে আছে, জনবল আছে, জনবলকে বসিয়ে বসিয়ে বছরের পর বছর বেতনভাতা দেয়া হচ্ছে, শুধু অল্প পরিমাণ জায়গার অভাবে রানওয়ে বর্ধিত করে চালু করা যাচ্ছে না  ঈশ্বরদী আভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর। এতে ভোগান্তিতে ওই এলাকার ভিআইপি-সিআইপসহ ৫ হাজার সাধারণ জনতা। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও এ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সিভিল এভিয়েশন অথরীটি ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালুকরণে ‘কম্ভুকর্ন’।
দেশের অন্যতম আলোচ্য গুরুত্বপূর্ণ রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে দেশি-বিদেশি বিশেষঙ্ঞ, প্রকৌশলী, কর্মকর্তাদের ঢাকা-ঈশ্বরদী,ঈশ্বরদী-ঢাকা য়াতায়াতের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বরদী বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে চালুকরণে তাগাদা দিলেও তা মুখথুবড়ে পড়ে আছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে গত ৮ আগস্ট/২০১৮ তারিখে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব রোকসিন্দা ফারহানা স্বাক্ষরিত ‘দ্রুত ও নিরাপদ যাতায়াতের সুবিধার্থে  ঈশ্বরদী বিমানবন্দরটি সংস্কারপূর্বক আন্তর্জাতিক মানে উনীœতকরণ’ দৃষ্টি আর্কষণ করে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানকে এক দাপ্তরিক পত্র দিলেও তা কার্যকরণে বাস্তবসম্মত কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলেও তার প্রয়োজনীয়তা মনে করছে না সিএএবি কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে বিঙ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ব্যক্তিগতভাবেও দৃষ্টি আর্কষণ করে গত ৫ আগষ্ট এক দাপ্তরিকপত্র দিয়েছেন। ওই দাপ্তরিকপত্রে ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালুকরণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। দাপ্তরিকপত্রে বলা হয়েছে রূপপুর পারমানবিক প্রকল্প এলাকায় রাশান ফেডারেশন, ভারতসহ অন্যান্য দেশের বিশেষঙ্ঞ, প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং নির্মাণ শ্রমিকসহ প্রায় ৫ হাজারের অধিক জনবল কর্মরত। সম্প্রতি প্রকল্প এলাকার ভৌত নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পারমাণবিক নিরাপত্তা ও ভৌত সুরক্ষা সেল গঠন করা হয়েছে। উক্ত সেল ইতোমধ্যে প্রকল্প এলাকায় কাজ শুরু করেছে। এ প্রকল্পের নির্মাণকাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন কাজের সাথে জড়িত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বিশেষঙ্ঞ, প্রকৌশলীগণ প্রতিনিয়ত ঢাকা হতে ঈশ্বরদী যাতায়াত করছেন এবং ক্রমান্বয়ে এ যাতায়াত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া এ এলাকায় আগে থেকেই ভেড়ামারাতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের গঙ্ঞা- কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প রয়েছে। ঈশ্বরদী ও ভেড়ামারাতে ১টি করে ইপিজেড এবং ভেড়ামারাতে নতুন একটি ৩৬০ মে:ও: বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিয়মিত সরকারি কাজে ঢাকা-ঈশ্বরদী, ঈশ্বরদী-ঢাকা যাতায়াত করতে হচ্ছে। তাই ঈশ^রদী বিমানবন্দরটি সংস্কারপূর্বক আন্তর্জাতিক মানে চালুকরণ করা প্রয়োজন।
ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালুকলণে গত বছরের ১১ আগস্ট রাজশাহী বিভাগীয় কশিমানারের সাথে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প পরিচালকের এক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকের প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৬ আগস্ট সরজমিনে ঈশ্বরদী  বিমানবন্দর পরিদর্শন করে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত বছরের ১৭ আগস্ট এক প্রতিবেদন দাখিল করেন। উক্ত প্রতিবেদনে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ইউনাইটেড এয়ারের বিমান ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে চলাচল করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়।ঈশ্বরদী  মিলিটারি ফার্ম চালুকরণে বিমান চলাচলে বর্তমানে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও উক্ত সরজমিন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।  ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের ১৪৫.৯১ একর জমির মধ্যে ২৯০.৭৪ একর জমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মিলিটারি ফার্ম কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়া হয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের সন্নিকটে মিলিটারি ফার্মের ৫টি দোচালা ছাউনি বিমান উড্ডয়ন-অবতরণে বাধা বলেও সরেজমিন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপকও ইউএনও’র ঈশ্বরদী সরেজমিন প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এক প্রতিবেদন তুলে ধরেছেন। ব্যবস্থাপকের প্রতিবেদনে বিমান উড্ডয়ন-অবতরনে মিলিটারি ফার্মের স্থাপনায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যবস্থাপকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে ৪৫ সিটের বিমান চলাচল উপযোগি আছে। ৬৫ সিটের যাত্রীবাহি বিমানের জন্য শুধু রানওয়ের প্রস্ত ৭৫ ফুট থেকে ১০০ ফুটে উন্নীত করা প্রয়োজন এবং ৭৫ সিট বিমানের জন্য রানওয়ের দৈঘ্য ৪৭০০ ফুট থেকে ৫৪০০ ফুটে উন্নীত করা প্রয়োজন। তিনি ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে পুনরায় বিমান চলাচলে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য এর অগে জেলা প্রশাসক , রাজশাহীকেও দাপ্তরিক পত্র দিয়েছেন।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।