বুধবার, ২৬ Jun ২০২৪, ০১:০৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
এককালের মুরগি ব্যবসায়ি, ট্রাক চালক, অবশেষে মেধা, সততা, পরিশ্রমের শ্লোগানে বিপুল পরিমাণ ব্যাংক লোনে কেয়া গ্রুপ গড়ে তোলা ,চেয়ারম্যান হওয়া : এবার  দুর্নীতির অভিযোগে খালেক পাঠান ও স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে দুদকের ৫ মামলা

ডেক্স রিপোর্ট :এককালের ট্রাক চালক, মুরগি ব্যবসায়ি, চুনোপুটি থেকে ব্যাংকলোনে কেয়া গ্রুপ গড়ে তোলে কোটিপতি, মেধা,সততা, পরিশ্রমের ঘোষণা দিয়েও দৃর্নীতির আশ্রয় নেয়া- অবশেষে দৃর্নীতির অভিযোগে ৫ মামলা- এই হলো কেয়ার চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক পাঠানের সততাগিরি।

সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১৮৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান খালেক পাঠান ও তার স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শফি উল্লাহ বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা ১-এ এসব মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আবদুল খালেক পাঠান, তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম, ছেলে মো. মাসুম পাঠান এবং দুই মেয়ে খালেদা পারভীন ও তানসিন কেয়ার নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হওয়ায় তাদের নামে আলাদা পাঁচটি সম্পদ বিবরণী জমা দিতে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। ওই নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে তারা ২০১৯ সালের ২৩ জুন দুদক সচিবের দপ্তরে সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। সেই সম্পদ বিবরণী যাচাই ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় মামলা দায়ের করা হয়।

এ বিষয়ে দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেছেন, কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক পাঠান ও তার স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে ৯৬ কোটি ২৯ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ১৮৩ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ২৬৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ৫টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) এবং অর্থপাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

আবদুল খালেক পাঠানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, তিনি দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৪৪৬ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৩৭ টাকার সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। কিন্তু দুদকের তদন্তে তার নামে ৪৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৬ হাজার ৪২৪ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছে দুদক। তিনি ৪৯ কোটি ৩৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন। মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ১৯৯৮-৯৯ করবর্ষ থেকে সব নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে ৫২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার ১৯৬ টাকা মূল্যের সম্পদের রেকর্ডপত্র পাওয়া গেছে। ওই সম্পদের বিপরীতে খালেক পাঠানের গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৩৯৫ কোটি ২৬ লাখ ২৯ হাজার ৯৫১ টাকা। অর্থাৎ ১৩৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯ হাজার ২৪৫ টাকার সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। যা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং অসাধুভাবে অর্জন করেছেন বলে তথ্য-প্রমাণ পায় দুদক।

আবদুল খালেক পাঠানের স্ত্রী ও কেয়া গ্রুপের পরিচালক ফিরোজা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা এজাহারে ১৭ কোটি ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৬৩ হাজার ২৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আবদুুল খালেক পাঠানের ছেলে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের পরিচালক মো. মাসুম পাঠানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে দুই কোটি ৭২ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ৫ কোটি ৪৭ লাখ ৭৬ হাজার ১৮৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আবদুল খালেক পাঠানের মেয়ে কেয়া কসমেটিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খালেদা পারভীনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে এক কোটি ৯৬ লাখ ৩২ হাজার ৩৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ দুই কোটি ৩৫ লাখ ৫১ হাজার ১৮০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

আবদুল খালেক পাঠানের অপর মেয়ে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের পরিচালক তানসিন কেয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে ২৫ কোটি ৯ লাখ ৮৭ হাজার ১১৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনসহ ১৬ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।