সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
দুনিয়ার কিয়ামত করনা ভাইরাস, ইয়া নাফসি : ঈমান পরীক্ষার চেতনা নিয়ে শুরু হলো রমজান

মাওলানা এম.এ. করিম ইবনে মছব্বির :

খোশ আমদেদ মাহে রমজান । তাকওয়া, আত্মশুদ্ধি, আত্মসংযমের মাস রমজান। বিশ্বজুড়ে মহামারী করোনা ভাইরাসের কঠিন দুর্যোগের মধ্যে  এসেছে এবারের মাহে রমজান। আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণের ইস্পাত কঠিন ঈমান পরীক্ষার দৃঢ় চেতনা নিয়ে শুরু হলো ১৪৪১ হিজরীর রমজানুল মোবারক । খোশ আমদেদ মাহে রমজান।

এবারের রমজান মুসলিম উম্মার কাছে এক ব্যতিক্রম ধর্মী। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে মসজিদে তারাবির নামাজ ১২ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ঘরে নামাজ পড়তে  বলা হয়েছে। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআন শরীফে ঘোষণা করেন যে,’অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করবো কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, সম্পদ ও প্রাণের ক্ষতি, ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সু-সংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের।’ (সুরা- আল বাক্বারা)

রহমত, মাগফিরাত ও দোজখ থেকে নাজাতের মাস রমজান।

এ প্রসঙ্গে  মহান রাব্বুল আলামীন আল কোরআনে ঘোষণা করেন,  ‘তোমাদের মধ্যে যারা এই মাসটি পায় তারা যেন অবশ্যই রোজা পালন করে। (সুরা- আল বাক্বারা, আয়াত-১৮৫)

হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ ঘোষণা করেন, রোজা শুধু আমারই জন্য এবং এর প্রতিদান আমি আল্লাহ নিজেই দিবো।

প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা যেমন মানবজীবনের এক অদৃশ্য শত্রু। ঠিক তেমনি মাহে রমজানের ইবাদত রোজা অদৃশ্য করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের আসার সাথে সাথে অনেক মানুষ কবীরা, ছগিরা গুনাহও বর্জন করে ফেলেছে। এমন কি সমগ্র বিশ্ব মানব আজ এতিমের মতো অসহায়। তারা আকাশের মালিকের কাছে দুই হাত জোড় করে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আল্লার সৃষ্টি সকল প্রাণীই দূর্বল। একমাত্র আল্লাহ পাক-ই শক্তিশালী। দুনিয়াটা হলো পরীক্ষার সেন্টার। কবর বা আলমে বরযখ হলো অপেক্ষার সেন্টার। কিয়ামত দিবস ও বিচার দিবস হলো মহান আল্লাহর চূড়ান্ত ফয়সালার ময়দান। যেখানে পাপ, পূণ্য এবং অপরাধের সিদ্ধান্ত নিবেন স্বয়ং আল্লাহ।

কিয়ামত কি শুধু পরকালে হবে? দুনিয়ার কিয়ামত করোনা ভাইরাসের ফলে আজ সমগ্র মানবজাতি  চিৎকার করে বলছে, ইয়া নাফসি। ইয়া নাফসি। ইয়া রাব্বানা। ইয়া রাব্বানা। আমাদের ওই সমস্ত বিপদকালীন সময়ে ধৈর্য্যের সাথে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে হবে। যেমন পৃথিবী সৃষ্টির শুরু হযরত আদম (আঃ) থেকে শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ  (সাঃ) পর্যন্ত সকল নবীদের আল্লাহর কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়েছে। আমরা আখেরি নবীর উম্মত। নবী, রাসুলের ঈমান ছিল মজবুত এবং আমরা উম্মতে মোহাম্মদী (সাঃ) -এর ঈমান দুর্বল।  এমতাবস্থায় আল্লাহর কাছে তওবার মাধ্যমে পানাহ চাইতে হবে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন,”আল্লাহ তোমাদের পক্ষে সহজ করতে চান, কঠিন করতে চান না।” ( সুরা : আল বাক্বারা,  আয়াত -১৮৫)

আরবি রা, মীম, দ্বোয়াদ থেকে রমজ। যার অর্থ জ্বালিয়ে দেয়া, পুড়িয়ে দেয়া। আর রমজ থেকে রমজানের উৎপত্তি।  মাহে রমজানে রোজা রাখার ফলে আল্লাহ পাক মুমিনদের গোনাহ সমূহ জ্বালিয়ে দেন, পুড়িয়ে দেন। আলেমুল গায়েব আল্লাহ তাঁর অদৃশ্য আজাব করোনা ভাইরাস থেকে মাহে রমজানে রোজা রাখার বদৌলতে মানবজাতিকে মুক্ত করবেন  ইনশাআল্লাহ।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।