শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০৩:৩৭ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে হাইকোর্টে তলব

ডেক্স রিপোর্ট : ঢাকা মহানগরীতে বায়ুদূষণ ও পরিবেশ রক্ষায় বিশ্ব ব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যয়, বায়ু দূষণের কারণ ও দূষণরোধে  কী ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এসব বিষয়ে জানতে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ২রা ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে তাকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া, ঢাকায় বায়ু দূষণও পরিবেশ রক্ষায় ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার  বিচারপতি এফ.আর.এম. নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে,এম, কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার সাংবাদিকদের বলেন, নির্মল বায়ু ও পরিবেশ রক্ষায় বিশ্ব ব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকার যে প্রকল্প ছিল, সে প্রকল্প পরিবেশ অধিদফতর কীভাবে ব্যয় করেছে, পরিবেশ উন্নয়নে কী ধরনের ভূমিকা রেখেছে, এতে জনগণ কী ধরনের সুফল পাচ্ছে, অর্থাৎ পুরো প্রকল্পের টাকা কীভাবে ব্যয় করা হয়েছে, তা সবিস্তারে ব্যাখ্যা দিতেই তাকে তলব করেছেন আদালত।
এছাড়া, হাইকোর্টের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব যানবাহন নির্ধারিত মাত্রার বেশি কালো ধোঁয়া ছড়াচ্ছে সেগুলো জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।  সেই সঙ্গে সড়ক পরিবহন আইনের বিধান অনুযায়ী প্রত্যেক যানবাহনের ‘ইকোনোমিক লাইফ’ নির্ধারণ করতে বলেছে আদালত। যেসব পরিবহনের ‘ইকোনোমিক লাইফ’র পেরিয়ে গেছে, সেসব বাহন নিষিদ্ধের ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে আদেশে। পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া টায়ার পোড়ানো বা ব্যাটারি রিসাইকেলিং বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশ অধিদপ্তরকে এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সেই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজিপুর ও মানিকগঞ্জে যেসব অবৈধ ইটভাটা এখনো বন্ধ করা হয়নি, সেগুলা বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন, অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। আর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন, অ্যাডভোকেট সাইদ আহমেদ রাজা ও উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে তৌফিক ইনাম টিপু। আদেশের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আদালতে রোববার দুটি বাস্তবায়ন প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। আমরা বলেছি, এখন পর্যন্ত বায়ূ দূষণে আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছি। এটা নিয়ন্ত্রণে সম্পূরক এক আবেদনে ১২ দফা নির্দেশনা চেয়েছিলাম। আদালত নয়টি নির্দেশনা দিয়েছে। ১. যেসব যানবাহন নির্ধারিত মাত্রার বেশি কালো ধোঁয়া ছড়াচ্ছে সেগুলো জব্দ। ২. সড়ক পরিবহন আইনের বিধান অনুযায়ী প্রত্যেক যানবাহনের ‘ইকোনোমিক লাইফ’ নির্ধারণ ও যেসব পরিবহনের ‘ইকোনোমিক লাইফ’ পেরিয়ে গেছে সেসব বাহন নিষিদ্ধের ব্যবস্থা। ৩. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া টায়ার পোড়ানো বা ব্যাটারি রিসাইকেলিং বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ। ৪. ঢাকায় যেসব ট্রাক বালি, ময়লা ও বর্জ্য পরিবহন করবে, সেগুলো যাতে ঢেকে রাখা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ৫. নির্মানাধীন এলাকায় বালি, সিমেন্ট মাটিসহ নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে রাখার নির্দেশ। বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। ৬. সিটি করপোরেশনের যেসব এলাকায় পানি ছিটানো হয়না সেসব এলাকাসহ ধুলোবালিপ্রবণ এলাকায় নিয়মিত পানি ছিটানো। ৭. আইন ও দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী উন্নয়ন ও নির্মাণ কাজ নিশ্চিত করতে হবে। ৮. দোকান বা মার্কেটে দিনের ময়লা-আবর্জনার বিন বা বস্তায় জমা রাখতে হবে। ৯.  দোকান বা মার্কেট বন্ধ করার সময় মালিকরা তা সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত জায়গায় ফেলার ব্যবস্থা করবেন।
গত বছরের ২১শে জানুয়ারি ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এ রিট করা হয়। এই রিটের ধারাবাহিকতায় গতকাল এসব নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।