শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৮:০১ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
মন্ত্রী,সচিব,চেয়ারম্যানের প্রেসব্রিফিং বক্তব্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উশ্মা প্রকাশ : ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পর অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের ২৩ জনের ডিউটি প্রত্যাহারই কি যথেষ্ট ?

বিশেষ সংবাদদাতা : বিমান ছিনতাই চেষ্টা ঘটনার বিষয়ে বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী ও সচিব মহিবুল হককে ডেকে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি  নিজ দপ্তরে ডেকে তাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সিভিল এভিয়েশন এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, মন্ত্রী ও সচিব দেখা করার সময় গত সোমবার বিমান মন্ত্রণালয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ে দেয়া কিছু বক্তব্য নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বিমান হাইজ্যাকের বিষয়ে সংযত হয়ে কথা বলার নির্দেশনা দেন।

এদিকে অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের বিভিন্ন পর্যায়ের ২৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ তালিকায় দায়িত্বপালনরত নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাই বেশি। সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন ওঠেছে ওদের প্রত্যাহারই কি যথেষ্ট? ২৩ জনকে সাময়িক সাসপেন্ড করা হয়নি। কোন ঘটনা ঘটলেই কর্মরতদের ডিউটি প্রত্যাহার করা হয়, এ রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। যে নিরাপত্তারক্ষীদের ঢিলেঢালা ডিউটির কারণে এতোবড় দুর্ঘটনার হাত থেকে যাত্রীরা প্রাণে বেচে গেলেন, তাদেরকে ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পর ডিউটি প্রত্যাহার করা হলো। তাদেরকে সাসপেন্ড করার প্রয়োজন মনে করল না সিএএবি কর্তৃপক্ষ।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, বিমান ছিনতাই চেষ্টা ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা তদন্তের ভার দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে। তদন্তে নেমে তারা প্রথমেই আলামত হিসেবে বিমানটি জব্দ করে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের জিম্মায় দিয়েছে।

এ জন্য বিমানের সিডিউলে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিমানের প্রতিদিন গচ্চা যাচ্ছে কয়েক লাখ টাকা। কবে নাগাদ উড়োজাহাজটি অপারেশন চালাতে পারবে নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি বিমানের কর্মকর্তারা। এদিকে চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা ঘটনার পর অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান ভ্রমণের জন্য যাত্রীদের ছবি সংবলিত আইডি কার্ড বা পরিচয়পত্র দেখানোর বিষয়ে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গত সোমবার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ জারি করা হয়। এতে বলা হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে এখন থেকে বোর্ডিং পাস সংগ্রহের আগেই বাধ্যতামূলকভাবে যাত্রীদের বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা কর্মস্থলের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। ফটো আইডি ছাড়া বোর্ডিং কার্ড প্রদান না করতে এয়ারলাইন্সগুলোকেও কড়া নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, বেসরকারি সংস্থা বিমান ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ নিয়মিতভাবে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

এর আগে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনাকারী এসব বিমান সংস্থাকে বেশ কয়েক দফা আইডি কার্ডের বাধ্যবাধকতার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেয়া হয়। ওই নির্দেশনা মানা হয়নি। এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ জানান, নিরাপদে বিমান চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থ বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ ফটো আইডি বাধ্যতামূলক করেছে। বেবিচকের ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন বিভাগ থেকে এ নির্দেশনা পাওয়ার পর বিমানের সব অভ্যন্তরীণ স্টেশনে বাংলা ও ইংরেজিতে এ সংক্রান্ত নোটিশ টানানো হয়েছে।

গতকাল বিমানের জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, যাত্রীদের উড়োজাহাজে ওঠার আগে পরিচয়পত্র দেখিয়ে অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল থেকে বোর্ডিং কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। পরিচয়পত্রের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে যাত্রীর বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র, স্মার্ট কার্ড, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড বা চাকরিজীবীদের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মস্থলের পরিচয়পত্রের যেকোনো একটি পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলকভাবে দেখাতে হবে।

 

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।