বিশেষ সংবাদদাতা : কার্গো ভিলেজ রফতানি শাখায় দীর্ঘ চার বছর ধরে কর্মরত ডেপুটি সিকিউরিটি অফিসার (ডিএসও) নাসিমা আকতারের রামরজত্ব চলছে। তার তিন-চারজন বাহিনীর মাধ্যমে এই রাজত্ব অব্যাহত রয়েছে। রফতানিযোগ্য পণ্য স্ক্যানিং করার সময় এই রাজত্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তার নিজস্ব পছন্দের কোম্পানির পণ্য আগে-ভাগে স্ক্যানিং করে অন্যান্য কোম্পানির পণ্য ফেলে রাখে। এতে করে ওই সংশ্লিষ্ট কোম্পানির পণ্য সঠিক সময়ে স্ক্যান করে বিমানে ওঠাতে না পেরে শিপমেন্ট বাতিল হয়ে যায়। ফলে সংশ্লিষ্ট ওই রফতানিকারক কোম্পানি মোটা অংকের টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। ডিএসও নাসিমার এই স্ক্যানিং বাণিজ্য তথা পণ্য স্ক্যান করার সময় অসহযোগিতা করার অভিযোগে ‘গ্লোব ফরওয়ারর্ডিং এন্ড ফ্রেইট লিমিটেড’ কোম্পানি গত ১১ জুলাই সিএএবির চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের অনুলিপি বিমান প্রতিমন্ত্রী, বিমান সচিব , বিমানের এমডি, সিএএবির মেম্বার অপস, প্রেসিডেন্ট বাপা এবং বিমানের কার্গো জিএমকে দেয়া হয়েছে। কিন্ত গত এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও সিএএবি কর্তৃপক্ষ ডিএসও নাসিমার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে ডিএসও নাসিমা বহাল তবিয়তে তার রামরজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডিএসও নাসিমা শুধু স্ক্যানিং বাণিজ্যই নয়- সংশ্লিষ্ট রফতানিকারক কোম্পানির পণ্য রাখার স্পেস বাণিজ্য করেও আর্থিক সুবিধা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর এ জন্য সিএএবির একজন উর্ধতন কর্মকর্তারও তার ওপর আর্শীবাদ রয়েছে। ফলে ডিএসও নাসিমা ধরাকে সরা ঙ্ঞান করছেন।
শুধু স্ক্যান আর স্পেস বাণিজ্যই করেই থেমে থাকছেন না ডিএসও নাসিমা আকতার। তার বিরুদ্ধে স্মাগলিং বাণিজ্যের কথাও শোনা যায়।্ কার্গো ভিলেজে তার নিজস্ব বাহিনীর নেতৃত্ব দেয়া তিন সদস্যের মাধ্যমে সবজির ঝুড়িতে মাদক পাচার, ফার্নিচারের অর্ডারে চন্দন কাঠ পাচার, পানের ঝুড়িতে মাদক পাচার, মুদ্রা পাচার জনিত কাজে জড়িয়ে পড়ছে। আর এ সব পণ্যেও এ্যারোবিল কমপক্ষে ৩ মাস সংরক্ষণের জন্য নির্দেশনা দেয়া থাকলেও তা এক সপ্তাহ পরেই সার্ভার থেকে আউট করে দেয় হচ্ছে।
গোয়েন্দা সংস্থা মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে রফতানি কার্গোর চোরাচালান বন্ধ করলেও বর্তমানে গোয়েন্দা সংস্থাও নিশ্চুপ। এতে ডিএসও নাসিমার তেলেসমাতি কাজ করছে বলেও শোনা যায়।
গত ৮ ও ৯ মে ২০১৯ তারিখের একটি রফতানি পণ্যের এ্যারোবিল সার্ভার থেকে গায়েব করে দেয়ার কথাও শোনা যায়- তদন্ত কররেই এর সত্যতা মিলবে। এ্যারোবির নম্বরটি হলো :
০৩১২১৫৩৩৫৬৮০৬০-১৮৮১২৩৪। একজন নিরাপত্তা সুপার এ কাজে নেতৃত্ব দেয়। তিনি ‘বি’ পালায় ডিউটি করে থাকেন।
ডিএসও নাসিমার বিরুদ্ধে রোস্টার বাণিজ্যের কথাও শোনা যায়। প্রায় একবছর ধরে তিনি তার অধীনস্থ নিরাপত্তারক্ষী, সুপার, অপারেটরদের ডিউটি রোস্টার করেন না। তার নিজস্ব পছন্দ মতো লোক ‘এ বি সি’ পালায় ডিউটি দিয়ে পাচার বাণিজ্য করছেন। আর প্রতিদিন ডিএসও নাসিমা আকতার সকাল ও দুপুরের পালা থেকে প্রতি স্ক্যানার থেকে ৫শ টাকা এবং প্রতি পালা থেকে ২ হাজার টাকা করে প্রায় ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাতের পালায় তিনি ডিউটিতে থাকেন না তাই রাতের পালার টাকা পান না বা নেন না।
ডিএসও নাসিমা আকতার ওভারটাইম বা ওটি বাণিজ্যও করছেন। কারো কারো ওভারটাইম কর্তন করা হচ্ছে আবার যারা প্রকৃত ওভারটাইম করেছে তাদের ওভারটাইম সব ঘন্টা দেয়া হচ্ছে না। আবার কোন কোন কর্মচারী ওভারটাইম না করেও ডিএসও নাসিমার সাথে সখ্যতা থাকায় ওভারটাইম লিস্টে নাম তুলে ওভারটাইম বিল পাচ্ছে। এতে কর্মচারীরা ফুসে ওঠছে।