শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
সিলেট বিমানবন্দরে ম্যানেজার কর্তৃক আনসার সদস্য হেলালকে মারপিট ঘটনায় উত্তেজনা : গোয়েন্দা রিপোর্ট

স্টাফ  রিপোর্টার : সিলেট ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজারের বাসভবনের আনসার গার্ডরুমে আনসার সদস্য হেলালকে মেরে সাইজ করলেন ম্যানেজার হাফিজ আহমেদ। এ নিয়ে সিলেট বিমানবন্দরে উত্তেজনা বিরাজ করছে, আনসার বাহিনীর সদস্যরা ফুসে ওঠছে। যে কোন মুহূতে যে কোন অনাকাংক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন বিশেঙ্ঘরা। গত চারদিনেও ঘটনার সমাধান না হওয়ার শাহজালালসহ সব কটি বিমানবন্দরের আনসার সদস্যরা ভিতরে ভিতরে সংগঠিত হচ্ছে, তারা কর্মবিরতির ঘোষনা দিতে পারে বলে অনেকে জানান। বিষয়টি ঢাকায় আনসারের ডিজিকেও জানানো হয়েছে। আনসার বাহিনীর সিলেটের জেলা কমান্ডডেন্ট সিলেট বিমানবন্দর ম্যানেজার হাফিজ আহমদের হাতে আনসার সদস্য হেলাল মারধরের ঘটনা নিয়ে দেনদরবার করার চেষ্টা করছেন। কিন্ত ম্যানেজার হাফিজ আহমদ বিষয়টি থোরাইকেয়ার করছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে , গত ৬ এপিল দিবাগত রাত ২ টায় সিলেট বিমানবন্দরের ম্যানেজার হাফিজ আহমদ তার সিভিল এভিয়েশন কোয়ার্টারের বাসা থেকে গার্ডরুমের কলিং বেল টিপে গার্ডকে কিছু বলতে চেষ্টা করেন। কিন্ত গার্ডরুমে কর্তব্যরত আনসার সদস্য হেলাল গভীর রাতে ম্যানেজারের কলিং বেলে সাড়া দেয়নি। এ সময় ম্যানেজার হাফিজ আহমদ নিজেই বাসা থেকে বের হয়ে গার্ডরুমে এসে আনসার সদস্য তার ডাকে সাড়া না দেয়ায় তাকে বেধড়ক মারধর করতে থাকে, মারতে মারতে চেয়ার ভেংেগে ফেলেন। আনসার সদস্য হেলালকে মারতে মারতে একদম সাইজ করে চলে যান ম্যানেজার হাফিজ। এ সময় তিনি নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে সূত্র জানায়।
পরের দিন সকালে ম্যানেজারের হাতে প্রহৃত আনসার সদস্য হেলাল আনসার ব্যারাকে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত বর্ননা করেন। আনসার পিসি ও থানা এবং জেলা কমান্ডডেন্ট ম্যানেজারের কাছে বিষয়টি জানতেই ম্যানেজার উত্তেজিত হয়ে যান। ম্যানেজার আনসারদের কোন কথায়ই কর্নপাত না করে উল্টো আনসারদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে তার দপ্তর থেকে বের করে দেন।
এ নিয়ে সিলেট বিমানবন্দরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সব বিমানবন্দরের আনসার সদস্যদের মধ্যে ম্যানেজারের হাতে আনসার সদস্য প্রহৃত হওয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর আনসার সদস্যরা কর্মবিরতির কথা ভাবছে।
ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও ঘটনার কোন সুরাহা হয়নি বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিমানবন্দরের ম্যানেজার হাফিজ আহমদ দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সিলেট বিমানবন্দরে কর্মরত । তাছাড়া তিনি সিলেটের লোক। সিলেটের লোক জেনেও কেন সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ তাকে কেন সিলেট বিমানবন্দরে ১০ বছর যাবত পোস্টিং দিয়ে রেখেছেন- তা রহস্যজনক। আর এ সুবাধে ম্যানেজার হাফিজ আহমদ সরাকে সরা ঙ্ঞান করছেন। তিনি অনেকাটাই বেপোয়োরা হয়ে ওঠেছেন। তার হাতে ইতিপূর্বে বাংলাদেশ বিমানের সদস্য ফরিদ এবং সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তারক্ষী আনোয়ার হোসেনও প্রহৃত হয়েছেন। কোন ঘটনারই লুজনোট হতে দেয়া হয়নি। গোয়েন্দা রিপোর্ট হয়েছে। ম্যানেজার হাফিজ আহমদ এতাটাই বেপোরোয়া হয়ে ওঠেছেন যে, তার বাসায় ঢাকার বিভিন্ন ফ্লাইটে সুন্দরী ললনাদের নিয়ে রাতভর আমোদ-ফ’র্তি করে থাকেন বলেও সূত্রে জানা যায়। সিলেট বিমানবন্দরে চোরাচালানে সহায়তা করে ম্যানেজার হাফিজ আহমদ আংগুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন বলেন গোয়েন্দারা তা খতিয়ে দেখছেন, দুদক নজরদারি করছে। তাছাড়া সিলেট বিমানবন্দরের সব ঠিকাদারি কাজে ঠিকাদারদের থেকে শতকরা ১০ ভাগ ঘুষ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ ওঠেছে। ঘুষ ছাড়া তিনি কাজের ফাইলে স্বাক্ষর করেন না এবং কাজের প্রত্যয়ন দেন না।
সূত্র জানায়, ইতিপূর্বেও ম্যানেজার হাফিজ আহমদের হাতে আরেক আনসার সদস্যসহ অনেক স্টাফ প্রহৃত হয়েছেন। গত এক সপ্তাহ আগে এক আনসার সদস্যের হাতে থাকা মোবাইল ফোন সেট দেখতে পেয়ে ম্যানেজার হাফিজ তা নিয়ে আচাড় দিয়ে ভেংগে ফেলেন। স্টাফদের মারধর করা ম্যানেজারের নিত্যনৈমিত্তিক অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে, তিনি কথায় কথায় স্টাফদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মারধর করে থাকেন। তার নামে একাধিক গোয়েন্দা রিপোর্ট হয়েছে এবং তা মন্ত্রণালয় হয়ে সিএএবির সদর দপ্তরে তার ব্যক্তিগত ফাইলে জমা হয়েছে। কিন্ত সিভিল এভিয়েশন প্রশাসন ‘কম্ভুকর্ন’।
এ সব ব্যাপারে জানতে ৯ এপ্রিল তার সেল ফোনে কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আনসারের সিলেট জেলা কমান্ডডেন্ট ফখরুল ইসলামের সাথে তার সেল ফোনে কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সিলেট এয়াপরপোর্ট ম্যানেজার হাফিজ আহমদ আনসার সদস্য হেলালকে মারধর করেছে। বিষয়টি আমরা অফিসিয়ালি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করিনি। গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষও বিষয়টি জানতে পেরেছেন।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।