শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৯:০৯ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
নেপথ্যে ২০ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেড : জেসির অপসারণের দাবিতে ঢাকা কাস্টমস এজেন্ট এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ঢাকা কাস্টমস হাউজ অবরুদ্ধ

বিশেষ সংবাদদাতা : ননটেকার জেসি মাহবুবের প্রশাসনিক দাপটে   ২০ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেডের আমদানিকৃত পণ্য  খালাস বাণিজ্যে ধস নামায় তার অপসারনের দাবিতে ঢাকা কাস্টমস হাউস অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করছেন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কর্মী ও মালিকরা। ঢাকা কাস্টমসের জয়েন্ট কমিশনার মাহবুবের অপসারণ দাবিতে  ১৪ জানুয়ারি  সোমবার ঢাকা কাস্টমস এজেন্ট নেতৃবৃন্দ দিনভর বিক্ষোভ করে। এতে পণ্য খালাসে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয।  সরকারে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব লোককসান হয়েছে বলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের দাবি।  ঢাকা কাস্টমসের হাউজের বাইরে বিক্ষোভ করেন সিঅ্যান্ডএফের কর্মীরা। আর ভেতরে সিঅ্যান্ডএফের সভাপতি ফরিদ আহমেদের নেতৃত্বে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়। ঢাকা কাস্টমস হাউজ কমিশনার আব্দুল মান্নান শিকদার ২০ সিন্ডিকেড ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মনোনিবেশ করলেও একাই বাধ সাধেন জেসি মাহবুব্। আর এ জন্য ২০ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেড গত প্রায় দুই সপ্তাহ যাবত ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে ডাকা কাস্টমস হাউজে মড়ক চলছে বলে অনেকে মন্তব্য করেন।  তবে সাধারন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা এ বিক্ষোভে অংশ নেননি বলে গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়্। ২০ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেড এবং তাদের দোসররাই এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে বলেও জানা যায়। এই ২০ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেডের সাথে হাউজ কমিশনারের আন্ডার হ্যান্ডডিলিং রয়েছে বলেও শোনা যায়।

ঢাকা কাস্টমস হাউজ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারি ৪৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারিকে আন্ত বদলি করা হয়। এর মধ্যে ডিসি প্রিভেনটিভ অথেলো চৌধুরিকে যেখানে আছে সেখানেই বদলি করা হয়। আর জেসি মাহবুবকে এয়ারফ্রেইট আমদানি শাখায় বদলি করা হয। তার বদলির পর খবর পেয়ে ২০ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেড আতংকে ভুগতে থাকে। দুই সপ্তাহ যাবত ব্যবসা বন্ধ করে দেয়। আর এক ব্যবসায়ীকে মরধরের ঘটনায় গত ১৪ জানুয়ারি থেকে তার অপসারনের দাবিতে বিক্ষোভ করছে। এ দিকে জেসিকে হাউজে বাইরে বদলির জন্য ২০ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেড প্রশাসনে জোড়ালো তদবির করছেন বলেও শোনা যায়। জেসির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা সংবাদ সম্মেলন করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এসআরও সুবিধা, হোয়াইট কোড, ওজনে কারচুপি, মিথ্যা ঘোষণায় পন্য অামদানি এবং গেট কন্টাক্টে তা খালাসকরণ- ইত্যাকার সুবিধায় ২০ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেড আমদানিকৃত পণ্য খালাস করায় সরকার মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে। ফলে চলতি অর্থ বছরের ৬ মাসে ঢাকা কাস্টমস হাউজে রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে। এসআরও সুবিধায় শতকরা ১ ভাগ ট্যাক্স দিয়ে শতকরা ১৫-২৫ ভাগ ট্যাক্স ফাকি দিয়ে দেদারচ্ছে পণ্য খালাস করে নিয়ে যাচ্ছে। সিআইসি এ ব্যাপারে নজরদারি করলেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সূত্রমতে,ইতিপূর্বে ২০ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেডের মধ্যে একজনের স্বার্থ আঘাত লাগলে আরেকজন ধরিয়ে দিতো। কিন্ত এবার ২০ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেড গোপন বৈঠক করে হাতে হাত মিলিয়ে শপথ নিয়েছে কেউ কারো পণ্য ধরিযে দেবে না্।

জানা গেছে, দুপুরে বারি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক আনিসুর রহমানকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কর্মীরা বিকেলে কাস্টমস হাউস অবরুদ্ধ করে রাখে।

বারি এন্টারপ্রাইজের মালিক আনিসুর রহমান বলেন, ‘একটি মালের (পণ্যের) ভ্যালুর কাগজপত্র নিয়ে জেসি মাহবুবের রুমে গিয়েছিলাম দুপুর ২টার দিকে। কাগজপত্রে পণ্যের ভ্যালু কম লিখেছি বলে তিনি আপত্তি জানান এবং আমাকে মারধর শুরু করেন। এরপর আমার আইডি কার্ড রেখে দেন। জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে লিখিতও নেন তিনি।’

বিক্ষোভের বিষয়ে সিঅ্যান্ডএফের বন্দ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ঢাকা কাস্টমসের জয়েন্ট কমিশনার মাহবুব। কিছু হলেই উনি লোকজনকে ধরে মারেন। কাল (রোববার) আমাদের একজনকে ধরে মেরেছেন, আজও আমাদের সিঅ্যান্ডএফের এক মালিককে তার রুমের ভেতরে ফেলে অনেক মারধর করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা অবস্থান ধর্মঘট পালন করছি এবং দাবি হচ্ছে মাহবুবকে এখান থেকে অপসারণ করতে হবে। তাকে না সরানো পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট চলবে।’

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, জেসি মাহবুবের মধ্যে মারদাংগা স্বভাব বিদ্যমান্ ।ইতিপূর্বে তিনি একজন সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা এবং এক পিয়নকে মারধর করে আলোচনায় আসেন। তার মুখের ভাষাও ভাল না। তিনি কথায় কথায় গালিগালাজ করে থাকেন বলে ঢাকা কাস্টমস হাউজে বিষয়টি চাউর হয়ে গেছে।তাকে এনবিআরের আদেশে গত জুলাইতে ঢাকা কাস্টমস হাউজের বাইরে বদলি করা হলেও তা কার্যকর হয়নি।একই আদেশে ডিসি আকতার, ডিস অথেলো চৌধুরির বদলির আদেশও ভুলুন্ঠিত হয়েছে।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।