বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৯:০৬ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর : সচল হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম

স্টাফ রিপোর্টার :বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের পাশাপাশি স্কুলগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম সচল হচ্ছে। ক্লাসরুমে সম্ভব না হলে ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফরমে পুরোদমে পাঠদান শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্কুল-কলেজ পুরোপুরি খুলে দেয়া হবে করোনা সংক্রমণ হ্রাস ও ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম জোরদারের পর।  গতকাল সচিবদের এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। বুধবার এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সচিব সভায় এসব নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দ্রুত সময়ে স্কুলগুলোও খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করুন। কারণ, শিশুরা ঘরে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তারা মানসিকভাবেও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য সব পদক্ষেপ নিতে হবে। সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করতে হবে। জরুরিভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। সচিবদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানো হয়েছে, গাড়ি দেয়া হয়েছে, আবাসনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। এখন দেশের জন্য আপনাদের দেয়ার পালা। দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স। কোনোভাবেই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিদ্যমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে সরকারের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে সচিবদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, আমাদের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বা ডেল্টা প্ল্যান, সেগুলো মাথায় রেখে গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন যেন যথাযথভাবে হয়। আমাদের একটাই লক্ষ্য তৃণমূল পর্যায়ের মানুষগুলো যেন উন্নত জীবন, দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি, অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসার সুযোগ পায়। বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে ভবিষ্যতেও যেন একইভাবে এগিয়ে যেতে পারে, সেভাবে আমাদের কার্যক্রম চালাতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, তারই উপর ভিত্তি করে আমরা পরিকল্পনা তৈরি করেছি। সেটা ধরে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সে কথা মাথায় রেখে আমাদের সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পরে বিকালে সচিব সভার আলোচনার সারসংক্ষেপ জানাতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যত দ্রুত একটা স্বস্তিদায়ক পরিবেশ এলে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া যায়। পাশাপাশি সরকারি স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ডিজিটাল সিস্টেমেও যেন চলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে পুরোপুরি শিক্ষা কার্যক্রম ডিজিটালি চলছে এবং গ্রাজুয়েশনও হচ্ছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশনা দিয়েছেন শিক্ষা কার্যক্রম ভার্চ্যুয়ালি হোক বা অনলাইনে হোক চলুক। পাশাপাশি একটা স্বস্তিদায়ক পরিবেশে এলেই যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষা সচিব বলেছেন- তারা একটা প্ল্যান করছেন। গত মঙ্গলবার তারা বৈঠকও করেছেন আইসিটি বিভাগের সঙ্গে। দ্রুতই তারা পাবলিকলি বিষয়টি জানাবেন। যত দ্রুত সম্ভব যাতে খুলে দেয়া যায়। ছাত্রদের মধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যারা আছেন তাদের দ্রুত যাতে ভ্যাকসিনেটেড করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যত দ্রুত সম্ভব। কারণ খুব দ্রুতই তো আমরা ৬ কোটি ভ্যাকসিন পেয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন গ্রুপ করে করে ছাত্রদের মধ্যে যারা বয়সের মধ্যে আসবে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেবো।
সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেজন্যই আমি নির্দিষ্ট কোনো তারিখের কথা বলছি না, তারিখের কথা আমরা জিজ্ঞাসাও করিনি। কিন্তু নির্দেশনা ছিল দুইটা জিনিস। প্রথমত দেখতে হবে পরিস্থিতি যদি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় চলে আসে, ভাইরাসটা যদি নিয়ন্ত্রণে আসে। দুই নম্বর হলো ভ্যাকসিনেশন। দুইটা জিনিস বিবেচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন। সব সচিবরা এবং প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন ছেলেমেয়েরা বাসায় বসে থাকতে থাকতে একটা অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে আছে। সুতরাং তাদের তো বাইরে নিয়ে আসা দরকার। করোনাভাইরাসের জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে ২১ কোটি চার লাখ ডোজ টিকার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সভায় টিকার বিষয়টা ভালোভাবে আশ্বস্ত করা হয়েছে। সর্বশেষ ক্রয় কমিটিতে ছয় কোটি ডোজ টিকা কেনার অনুমোদন দেয়া হয়। বিভিন্ন উৎস থেকে ২১ কোটি চার লাখ ডোজের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে বলে সভায় জানানো হয়েছে। এর মধ্যে তিন কোটি ১০ লাখ ডোজ কেনা হয়েছে। এটা নিয়ে আর অসুবিধা হবে না।
উল্লেখ্য যে, গত বছরের ১৭ই মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে এই ছুটি বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত ছুটি রয়েছে।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।