শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৩:১৭ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ দেশের মানুষের অর্জন

স্টাফ রিপোর্টার :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে কিনা সেটা যার যার দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। জনগণের ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতেই এই আইন করা হয়েছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি  বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়া উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সাংবাদিকরা যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী লিখিত বক্তব্যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদেশের উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশের বিষয় তুলে ধরেন।

পরে তিনি সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এ বিষয়ে সরকার প্রধানের প্রতিক্রিয়া জানতে চান একজন সাংবাদিক। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতেই এই আইন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ যখন গড়ে তুলেছি, ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়াটাও আমাদের কাজ। এই দায়িত্বটাও আমাদের পালন করতে হবে। তিনি বলেন, এ কারণেই এই দায়িত্ব পালন করতে হবে যেন ডিজিটাল বিশ্বে শিশু থেকে যুবক পর্যন্ত কাউকে বিব্রত না হতে হয়। কেউ যেন অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত না হতে পারে। সেটা দেখতে হবে। আমাদের দেখতে হবে, কেউ যেন এমন কোনো কাজ করতে না পারে যা দেশের ক্ষতি করে, দেশের মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সে কারণেই ডিজিটাল বাংলাদেশের সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনও প্রয়োজন।
কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, কারাগারে বন্দি অবস্থায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। তেমন কিছু তো ঘটেনি! কেউ অসুস্থ হয়ে মারা গেলে কী করার আছে? তবে কারও মৃত্যুই কাম্য নয়। আবার কারও মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অসন্তোষ তৈরি করাও কাম্য নয়।

সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ তনয়া শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর হাতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশপত্র তুলে দেন অর্থমন্ত্রী। এরপর প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেন। আল-জাজিরার প্রতিবেদন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এসব বলে তারা ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার গোটা পরিবারকে হত্যা করেছে। ছোট শিশুকে হত্যা করেছে। আমি সন্তান হিসেবে যখন সরকারে আসলাম, তখন বাবা- মায়ের হত্যার বিচার করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি, মানবতাবিরোধীদের বিচার করেছি। অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামালার বিচার করেছি। সবকিছু সামাল দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কি সহজ কাজ।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। তাদের পরিবার কি বসে থাকবে? সুযোগ পেলে তো সব বিরোধীপক্ষ এক হয়ে যায়।

আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। একে এখন ধরে রাখতে হবে। সেটা আমরা পারবো। প্রস্তুতি রয়েছে, পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যারা চায় নাই, জাতির পিতাকে হত্যা করেছে,  নানা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়েছে, তারা বাংলাদেশেরর উন্নতি মানবে কীভাবে, তারাতো মানতেই পারে না।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আজকের দিনে বেশি কথা বলতে চাচ্ছি না। আমার বয়স ৭৫ বছর। সেই স্কুল জীবন থেকে রাজনীতি করছি। কাজেই এ দেশের সবাইকে আমার চেনা আছে। কে কি করতে পারে আমার জানা আছে। কারো মৃত্যু কাম্য না, কিন্তু সেটাকে কেন্দ্র করে অশান্তি সৃষ্টি করা উচিত নয়। জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় হত্যা করা হয়েছিল। সে রকম কিছু তো ঘটেনি। যারা সেই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল তাদের সঙ্গেও তো অনেকেই গাঁটছড়া বেঁধেছিল। কেউ অসুস্থ হলে বা এই জিনিসটার কি করার আছে। আইনটির অপব্যবহার নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইন তার আপন গতিতে চলে। আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে কি না সেটা দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। এটা একটি আপেক্ষিক বিষয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি বাংলাদেশ পেয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এ উন্নয়ন এক ঐতিহাসিক ঘটনা। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের মহামারি চলছে, বহুদিন দেখা হয় না, প্রায় এক বছর পর দেখা হচ্ছে আপনাদের সঙ্গে। সেটাও সরাসরি না,ভার্চ্যুয়ালি দেখা হচ্ছে। সেটাও ডিজিটাল বাংলাদেশ করা হয়েছিল বলেই। তিনি বলেন, আজ আমরা জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছি। সেই সঙ্গে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে।

জাতির পিতা শূন্য হাতে সাড়ে তিন বছরে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করে গিয়েছিলেন। তারই হাতে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় এ মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে এবং দেশের ভেতরে সব নাগরিককে শুভেচ্ছা জানান। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার কন্যা হিসেবে জাতির একজন সেবক আমি। আমি এ অর্জনকে উৎসর্গ করছি নতুন প্রজন্মের তরুণদের জন্য।
২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৪ এলে তখন সিদ্ধান্ত নেবো, কী করবো। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য ২০২৬ সাল পর্যন্ত তার মান ধরে রাখতে হবে। এজন্য আমাদের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে, সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। আমার মনে হয়, এ কথার মধ্যে সব উত্তর আছে। করোনা মহামারি মোকাবিলা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা কোনো ম্যাজিক নয়, আন্তরিকতা, দায়িত্ববোধ। এ জায়গা থেকে কাজ করেছি। এখানে আমার নয়, বাংলাদেশের জনগণের ম্যাজিক ছিল। করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলার লক্ষ্যে আরও তিন কোটি ডোজ টিকা আমদানির নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশেও যাতে টিকা উৎপাদন করা যায়, সে ব্যবস্থাও সরকার নিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি, আরও তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য। যাতে করে আমাদের যেটা আছে, সেটা প্রথম ডোজ দেয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ আমরা শুরু করবো, সঙ্গে সঙ্গেই যেন আবার টিকা আমাদের হাতে এসে যায়, একটা মানুষও যাতে এই টিকা থেকে বাদ না যায়, তার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। যেসব কোম্পানি টিকা তৈরি করেছে, তাদের অনুমতি নিয়ে দেশেই টিকা উৎপাদনের পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশ যদি উৎপাদন করতে না পারে, প্রয়োজনে আমাদের দেশ উৎপাদন করতে পারবে, আমি আমাদের বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিকে ইতিমধ্যে বলেছি যে, কারা কারা এটা করতে পারবে, তার জন্য প্রস্তুত থাকা এবং এখানে সিড যাতে আনা যায়, তার ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেটাও আমরা দেখছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অ্যাডভান্স টাকা দিয়ে বুকিং করে ফেলি, যাতে যেখানেই পাওয়া যায়, আমরা আগে কিনে আনবো, আমার দেশের মানুষকে সুরক্ষা দেব, এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। প্রাইমারি থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত-সকল স্কুল-কলেজের সব শিক্ষক-কর্মচারী এবং যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বা হোস্টেলে থাকবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী যে বয়সীদের টিকা দেয়া যায়, তাদের সবাইকে টিকার আওতায় আনার নির্দেশনা দেয়ার কথাও বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা আমরা দেব, কারণ আমরা আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুব দ্রুত খুলতে চাই। পড়াশোনার পরিবেশটা ফিরিয়ে আনতে চাই। সবাই যাতে টিকা নেয়, সেজন্য গ্রাম পর্যন্ত প্রচার চালানো হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে সুরক্ষা দেয়া-এটা তো আমার কর্তব্য, আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শুধু না, আমি জাতির পিতার কন্যা, এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। সেই হিসেবে আমি মনে করি, আমার এটা কর্তব্য, আমরা করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী নিজে কবে টিকা নেবেন, সংবাদ সম্মেলনে তা জানতে চেয়েছিলেন একজন সাংবাদিক। উত্তরে সরকার প্রধান বলেন, আমি টিকা অবশ্যই নেব, কিন্তু তার আগে দেশের কত পার্সেন্ট মানুষ নিতে পারলো, কতজনকে দিতে পারলাম, সেটা আমি আগে দেখতে চাই। কারণ আমার একটা টিকার জন্য যদি আরেকটা মানুষের জীবন বাঁচে সেটাই তো সবচেয়ে বড় কথা, তাই না? নিজের বয়স যে এখন ৭৫ বছর, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি খোঁজ নিচ্ছি, আমাদের একটা টার্গেট করা আছে, এই সংখ্যা পর্যন্ত আগে আমি নির্দিষ্টভাবে দেব, এটা যখন হবে, তারপরে আমারটা আমি নেব, যদি টিকা বাঁচে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সফলতার পেছনে কোন ম্যাজিক লুকিয়ে আছে জানতে চান এক সাংবাদিক। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা কোনো ম্যাজিকের কিছু না। যখন যেভাবে বলেছি, সবাই মেনে চলেছে। সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করায় এটা হয়েছে। এটা বাংলাদেশের মানুষের সম্মিলিত ম্যাজিক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা সারাবিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছিল। জনগণের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ যে, আমরা যখন যেভাবে বলেছি, সবাই মেনে চলেছে। আমরা সময়োচিত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি, বিশেষ করে অর্থনীতির ক্ষেত্রে। মানুষের যেন কষ্ট না হয় সেটা দেখেছি। আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছি। সব শ্রেণির মানুষ সহায়তা পেয়েছে। তখনও গবেষণা চলছে, আগাম অর্থ দিয়ে করোনার টিকা কেনার ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি বলেন, সরকারের সব সদস্য, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আমার দলের নেতাকর্মী, ছাত্রলীগ-যুবলীগ-কৃষক লীগসহ সহযোগী সংগঠনের সদস্য প্রত্যেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছে। যাকে যখন যে কাজ করতে বলেছি করেছে। সহযোগিতা-ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছে। আমার কোনো ম্যাজিক নয়, এটা বাংলাদেশের মানুষের ম্যাজিক। আমার বাবা মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য নিজের জীবন দিয়ে গেছেন। কাজেই এটা আমার দায়িত্ব। আন্তরিকতা, দায়িত্ববোধটাই আসল। সংবাদ সম্মেলনের শেষদিকে এসে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘের এই স্বীকৃতির সংবাদটি আমাকে প্রথম দেয় শেখ রেহেনা। তার কাছ থেকে রাত সাড়ে নয়টায় সুসংবাদটি আমি পাই।

জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার কৃতিত্ব জনগণের:
স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার কৃতিত্ব জনগণকে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এ কৃতিত্ব এ দেশের আপামর জনসাধারণের। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছি। তিনি শুরুতেই বলেন, আজ অবশ্য আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি বাংলাদেশের একটি মহৎ এবং গৌরবোজ্জ্বল অর্জনের সুসংবাদ দেয়ার জন্য। বাংলাদেশ গতকাল স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করেছি। লক্ষ্য অর্জনের এই সময়ের গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এই উত্তরণ এমন এক সময়ে ঘটলো, যখন আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন করছি, আমরা মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্‌যাপনের দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশের জন্য এ উত্তরণ এক ঐতিহাসিক ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ ডলার। অর্থাৎ মানদণ্ডের চেয়ে প্রায় ১ দশমিক ৭ গুণ। মানবসম্পদ সূচকে নির্ধারিত মানদণ্ড ৬৬-এর বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন ৭৫.৪। অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকে উত্তরণের জন্য মানদণ্ড নির্ধারিত ছিল ৩২ বা তার কম। কিন্তু ওই সময়ে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২৭। শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, উন্নয়নের চলমান গতিধারা বজায় থাকলে বাংলাদেশ অচিরেই উন্নত দেশের কাতারে উঠে আসবে। তিনি বলেন, আমি এই অর্জনকে উৎসর্গ করছি আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মকে। যারা আজকের বাংলাদেশকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবে। সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা পাকিস্তান আমলে বাংলার বঞ্চনার ইতিহাস তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জনের পর উন্নয়নের লক্ষ্যে যাত্রার শুরুর কথাও বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, এক যুগ আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়। আজকের বাংলাদেশ এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বদলে যাওয়া এই দেশকে বুঝতে আর্থিক এবং অন্যান্য সূচকগুলোর দিকে সবাইকে দৃষ্টি দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।